Header Image

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

 

গত ২৭ জুন ২০২০ইং তারিখে “জৈন্তাপুরে প্রভাবশালীর হুমকিতে বাড়ি ছাড়ল একটি পরিবার ” শিরোনামে এক সংবাদ সম্প্রতি বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। করোনাকালে এরকম এক হৃদয়স্পর্শী সংবাদ অনেকেরই হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। সংবাদটি সম্পুর্ণ বানোয়াট,মিথ্যা। তাই আমি সংবাদটির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দ্রা জানাচ্ছি।
ঘটনাটি অনুসন্ধানের পর বিস্তারিত বিষয়টি উঠে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের সেনগ্রামে। খোজ নিয়ে জানা যায় এক-ই গ্রামের ধর্মান্তরিত মো: আব্দুল্লাহ ( অবসরপ্রাপ্ত সাস্থ্য সহকারী) এর তিন ছেলে লন্ডনে বসবাস করেন। এদের মধ্যে আবু সাদাত মো: ডালিম স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে লন্ডনে যান এবং পরবর্তীতে সেখানকার এক বাঙ্গালী প্রতিবন্ধী মেয়েকে বিয়ে করে সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করে। এর পর থেকেই তিনি তার অপর দুই ভাই ও মা-বাবাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেন। কিন্তু বৈধ কোন পন্থায় তিনি তাদের কাউকে সেখানে নিতে ব্যর্থ হন। এর পর তিনি বৈধ পথ ছেড়ে অবৈধ পথে তাদের নিয়ে যাওয়ার নানা রকম ফন্দি আঁটেন। তিনি মোক্ষম সুযোগ খুঁজতে খুঁজতে একসময় তা পেয়ে যান। সম্ভবত ২০১৪ সালে ডালিমের সমাবর্তন অনুষ্টান উপলক্ষে পরিবারের দুজনকে আমন্ত্রণ পত্র যোগাড় করেন এবং পরবর্তীতে শিবির নেতা বড় ভাই আব্দুল বাছিত সেলিমকে সেখানে নিয়ে যেতে সক্ষম হন। শিবির থেকে বহিস্কৃত এবং জামাত-শিবিরের সর্বজন নিন্দিত আব্দুল বাছিত সেলিম মানিলন্ডারিং, জমি আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন প্রতারণাসহ অনেকগুলো মামলায় জড়িত ছিলেন। লন্ডনে যাওয়ার পর এসব মামলা গুলোকে সামনে এনে তিনি ব্রিটিশ সরকারের রিফিউজি ভিসা লাভ করতে সক্ষম হন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদেরকে সেখানে নিয়ে যান। অপরদিকে আবু তাহের বাহার ও ভাইদের সহযোগিতা নিয়ে একই কায়দায় লন্ডন যেতে সক্ষম হন। দেশে রেখে যাওয়া মা বাবা ও বোনকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন তারা। এ ক্ষেত্রে কোন বৈধ পন্থা না থাকায় আবার ও তারা ব্যার্থ হন। অবেশেষে তারা সেখানকার উকিলের শরণাপন্ন হন| কিন্তু অবৈধ পন্থায় বাবা মা-বোনকে নেওয়া এবং সেখানকার উকিলের ফি অনেক বেশি হওয়ায় তারা আর্থিক সংকটে পড়ে যায় এবং তাদের বাবা-মাকে ব্যাপারটি অবগত করে| এদিকে তাদের বাবা-মা কোন উপায় না পেয়ে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি পাওয়ার জন্য তাদের ভাই জনাব মাস্টার শফিকুর রহমান ও জনাব এডভোকেট আতাউর রহমান এর কাছে আবদার করে| সম্প্রতি পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে ভাই বোনের মধ্যে সামান্য মতবিরোধ দেখা দেয় এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের হস্তক্ষেপে সেটির একটি সুন্দর ফয়সালা হয়। কিন্তু মুরব্বিয়ানদের সেই ফয়সালাকে অমান্যকরে তারা বিবাধে জড়িয়ে পড়েন এবং তাদের সন্তানদেরকে তাদের মামাদের পিছনে লেলিয়ে দেন| এখান থেকে মূলত ঘটনার সূত্রপাত এবং এই মিথ্যা নাটকের মঞ্চায়ন। জানা যায়,গ্রামছাড়া করার জন্য সংবাদে যাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে সেই মাষ্টার শফিকুর রহমান তাদের আপন ছোট মামা। বাবা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ধর্মান্তরিত হওয়ার কারনে তার সকল পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। এ সময় একজন নও মুসলিমকে ভালবেসে নিজের বোনকে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সাথে বিয়ে দেন। নিজের বসতভিটা ও চাষাবাদের জন্য অনেক জমিও তাদেরকে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পৈতৃক সম্পত্তি ও ভাগ করে দিতে গেলে এই বিরোধের সৃষ্টি হয়| এই বিরোধকে কেন্দ্র করে সেলিম গংদের চিন্তায় মা বাবাকে লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের নানা পথ খুজতে থাকেন। সেখানকার উকিলের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রামছাড়া করার এ রকম একটি নাটক করতে পারলেই রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের পথ সুগম হবে।সে মোতাবেক গত ২৩/ ০৬/ ২০২০ইং তারিখে পারিবারিক একটি তুচ্ছ ব্যাপারকে তিলকে তাল বানিয়ে অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে তারা তাদের শহরের বাসায় চলে যান। উল্লেখ্য যে, গত মার্চ মাসে সরকার লকডাউন ঘোষনার পরেই তারা গ্রামের বাড়ীতে এসেছিলেন এবং বর্তমানে তারা তাদের সিলেট শহরের সে বাসাতেই ফিরে যাচ্ছিলেন। মাঝখানে কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টালে সচিত্র সংবাদ পরিবেশন লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের প্রচেস্টারই একটি অংশ মাত্র। ব্যাপারটি জৈন্তাপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব কামাল আহমদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব জয়নাল আবেদিন, দরবস্ত ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, চারিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান জনাম শাহ আলম চৌধুরী তুফায়েল, বিশিস্ট সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব জনাব কবির আহমদ সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি পর্যবেক্ষণের পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং জনাব মাস্টার শফিকুর রহমানকে বিষয়টি দেখে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কাজেই আমি নিম্ন স্বাক্ষর কারি প্রকাশিত ঐ সংবাদটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

 

মাসুক আহমদ
খলা গ্রাম,জৈন্তাপুর সিলেট।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!