Header Image

ত্রিশালে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুর্নীতির সংবাদ নিয়ে তোলপাড়

কামাল হোসেন :

ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের ঘুষ , দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশের পর উপজেলাব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে । এসব করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাকে ঘিরে এই কর্মকর্তাকে নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা ।
সূত্র জানিয়েছে, ত্রিশালে ২০১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে । প্রতিটি স্কুলের জন্য লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (স্লিপ) আওতায় ৪০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ।
প্রকল্পের মাধ্যমে চক, সিলেট, পকেট বোর্ড, রুম সাজানো, রুমে উপকরণের সেল্ফ প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে কেনার নির্দেশনা থাকলেও শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ নিজেই এসব কিনিছেন নিন্মমানের । এরপর প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্লিপ ফান্ডের টাকা আত্মসাত করেছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে ডাস্টবিন, কাফফিল্ড, সাবান হ্যান্ড স্যানিটাইজার, বিভিন্ন বই পছন্দের কোম্পানী নিকট থেকে কমিশন নিয়ে প্রধান শিক্ষকদের কেনাতে বাধ্য করেন । কোন কোন শিক্ষক স্লিপ প্রকল্পসহ বিভিন্ন দুর্নীতি অয়িমের প্রতিবাদ করলে বদলী করে দেয়ার হুমকি দেন । যেকারণে কেউ প্রতিবাদ করেন না অথবা মুখ খুলেন না ।
শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিশাল থেকে অন্য উপজেলায় শিক্ষক বদলী বাবদ এক লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেন । এই ঘুষের টাকা নিজস্ব দালালের মাধ্যমে লেনদেন করেন । উপজেলায় এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলের বদলী বাবদ ৩০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত নেন চাহিদা বুঝে । সাবেক কম্পিউটার অপারেটর সোহেল এবং কয়েক এটিও এই লেনদেনের সাথে সম্পৃক্ত ।
অভিযোগ রয়েছে, শুধু স্লিপ প্রকল্প থেকেই ১ কোটি টাকা অনিয়ম করেছেন নূর মোহাম্মদ । তিনি শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচন করেন নিজের পছন্দে । শিক্ষকদের বিভিন্ন ট্রেনিং নিজের পছন্দের শিক্ষকদের দিয়ে করান । এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে । শিক্ষকদের পিটিআই ভর্তির জন্য ৩০ হাজার টাকা হিসাবে ঘুষ নেন এই কর্মকর্তা । এইসব দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে ইতপূর্বে তার পূর্বের কর্মস্থল গৌরীপুরেও শিক্ষকরা তার কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন । শিক্ষকরা তাকে তালা দিয়ে বন্দি করে রাখেন । নূর মোহাম্মদ ২০১২ সাল থেকে ১৪ সাল পর্যন্ত আবার ২০১৭ সালে ত্রিশালে বদলী হয়ে আসেন । ত্রিশালে যোগদান করেই দালাল সিন্ডিকেট গঠন করেন । কিছু পছন্দের শিক্ষককে কব্জা অথবা হাত করে এবং কিছু রাজনৈতিক দলের নেতার মাধ্যমে দুর্নীতি অনিয়ম করেন । তাদের ব্যাবহার করেন ঢাল হিসাবে । এই শিক্ষা কর্মকর্তা অফিসে আসেন অনিয়মিত । বেশিরভাগ সময় কাটান বাড়িতে । তার সাক্ষাতকার নিতে কয়েকবার তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!