Header Image

রাজধানীর তুরাগে মাদকের অপবাদ দিয়ে ব্যবসায়ীকে মারধোরের অভিযোগ

 

আল – আমিন, স্টাফ রিপোর্টারঃ

 

রাজধানীর তুরাগে চাঁদা না দেয়ায় মাদকের অপবাদ দিয়ে এক হোটেল ব্যবসায়ীকে স্থানীয় মাতাব্বর ও তার সমর্থকরা বেধরক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ঐ ব্যবসায়ী।

পরে সেই মারধরের ভিডিও ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয় তারা।

সরেজমিন জানা যায়, গত ১৪ ই ডিসেম্বর তুরাগের নলভোগ ট্রাক স্ট্যান্ড এলাকায় এঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের শিকার ওই ব্যবসায়ী হলেন সোমা হোটেলের মালিক শাহাবুদ্দিন ( ৪০)।

এরপর থেকেই মামলা যেন না হয় সেজন্য নানা ভাবে হুমকি ধুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

গতকাল সাংবাদিকরা ঘটনা সম্পর্কে জানতে গেলে কেন জানানো হলো সেজন্য তাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

ভুক্তভোগী শাহাবুদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ আমি তুরাগের নলভোগ এলাকার ট্রাক স্ট্যান্ড এ ছোট একটি খাবার হোটেলের ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছি। সেই সুবাদে এলাকার সবাই আমাকে চেনেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে স্ট্যান্ডের চিহ্নিত বখাটে সোহেল ওরফে মুরগী সোহেল (৩০), রকি আল-আমিন (৩৫), রুবেল (৩৫) ও সুমন (২৮) আমার হোটেলের কর্মচারী সামী (২০) কে জোড়পূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এসময় আমি কারন জানতে চাইলে মুরগী সোহেল বলে মোস্তফা মাতবর ওরে নিয়ে যেতে বলেছে, তাই নিয়ে যাচ্ছি। কি কারনে নিয়ে যাচ্ছেন, বা কেনই নিয়ে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তারা জানায় ও (সামী) গাঁজা বিক্রি করে।

এসময় আমি বলি গাঁজা বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকলে পুলিশে খবর দিয়ে ওরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবুও এভাবে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়ে গেলে দায় আমার উপরেই পড়বে।

শাহাবুদ্দিন আরো জানায়, কিছুক্ষণ পর তারা আবার এসে আমাকে জোরপূর্বক আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। নলভোগ বাজারে নেয়ার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকেও আমার কর্মচারীকে প্রকাশ্যে লোকজনের সামনে বেধরক পিটুনি দেয় স্থানীয় মোস্তফা মাতবর ও মুরগী সোহেল।

বার বার মারার কারন জানতে চাইলে বলে তুই মাদক বিক্রি করিস তোকে পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করবো। পরে মারধরের ভিডিও ধারন করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয় মুরগী সোহেল।

শাহাবুদ্দিন বলেন, মুলত এ ঘটনার কিছু দিন আগে মুরগী সোহেল আমার কাছে এখানে দোকান করি এই বাবত মাসিক ভাড়া দাবী করেছিলো। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমার উপর চটে যায় এই মুরগী সোহেল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মুরগী সোহেল স্ট্যান্ডের ত্রাস হিসেবে পরিচিত। কিছুদিন আগেও রাইদা পরিবহনের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নিতো। এখন নিরপরাধ অসহায় কাউকে পেলেই চাঁদা দাবী করে হেনস্থা করে। এছাড়া মোস্তফা মাতবর আইনকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এলাকায় একের পর এক বিচারের নামে অপঃকর্ম করে যাচ্ছে। এলাকার সাধারণ মানুষ তার হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে মুরগী সোহেল বলেন, আমি মারিনি তবে ফেসবুকে ভিডিও শেয়ার করেছি এটা আমার অপরাধ হয়েছে।

এলাকার স্হানীয় বাজারে সোহেল যাদের সাক্ষী বানিয়ে নিয়ে আসে তারাও সোহেলের বিরুদ্ধে বলেন। সেদিনের ঘটনায় কোন গাঁজা তারা দেখেনি।

মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে মোস্তফা মাতাব্বর প্রতিবেদককে বলেন, আপনি শাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আসেন। ওরে কেনো মেরেছি শাহাবুদ্দিন বলুক। পুলিশ আসামি ধরলে ৫ মিনিট পর টাকা খেয়ে ছেড়ে দেয় তাই পুলিশে না দিয়ে পিটিয়েছি। ওর কর্মচারীর কাছে গাঁজা পাওয়া গেছে তাই মালিকসহ পিটিয়েছি।

এ বিষয়ে তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই। মাদকের অপবাদে কেউ কাউকে মারধর করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার এলাকায় মাতাববর কিংবা জনপ্রতিনিধিদের নেই।l

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!