সাইফুল ইসলাম তরফদার:
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি সরকারী কর্মচারী সমিতির আলাদা শাখা গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সমিতির সাধারণ
সভায় কর্মচারীদের সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সর্বসমর্থভাবে এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সেই সাথে আগামী ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে নির্বাচন
করে নতুন কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিদ্ধান্ত মতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজের কর্মচারীদের বাদ দিয়ে
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এসকে হাসপাতাল, মডেল ফ্যামিলি প্ল্যানিং ও পরমানু চিকিৎসা কেন্দ্রে আলাদা ইউনিট কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণি সরকারী কর্মচারী সমিতি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার নেতাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, একটা সময় মেডিকেল কলেজ শাখা ও হাসপাতাল শাখায় আলাদা ইউনিটে সংগঠন ছিল। ৩৫-৪০ বছর আগে
সেই সময়ের বিবেচনায় মেডিকেল কলেজের কর্মচারীদের সুবিধার্থে দুটি শাখা একত্রিত করা হয়।
কিন্তু বর্তমানে সময়ের প্রয়োজনে এবং কর্মচারীদের বৃহৎ স্বার্থে পৃথক ইউনিট গঠন জরুরী হয়ে পড়েছে। বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলাদা আলাদা ইউনিট শাখা বিদ্ধমান রয়েছে। তাই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পূর্বের ন্যায় আলাদা আলাদা শাখা
সংগঠন করা প্রয়োজন। গত ২মে ২০২১ ইং তারিখ দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে সংগঠরের এক সাধারণ সভা সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আসন্ন
ত্রিবার্ষিক সাধারণ নির্বাচন-(২০২১-২০২৩) অনুষ্ঠানের লক্ষে আলোচনায় সংঠন ও কর্মচারীদের বৃহৎ স্বার্থ বিষয়ে ব্যাপক ও বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায়
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এসকে হাসপাতাল মডেল ফ্যামিলি প্ল্যানিং ও পরমানু চিকিৎসা কেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণি সরকারী কর্মচারীদের
সমন্বয়ে আলাদা শাখা গঠন করে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে ত্রিবার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৫৭জন
কর্মচারীর স্বহস্তে স্বজ্ঞানে স্বাক্ষর করে সমর্থন দেন। সদ্য সাবেক কার্যকরী পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতৃবৃন্দ, সাবেক নেতৃবৃন্দ এবং আগামী নির্বাচনে বিভিন্ন
পদের সম্ভাব্য প্রার্থীবৃন্দ ও সাধারণ সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে সকলে এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। সারাবিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী
করোনা ভাইরাস মহামারী থাকায় পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হএদিকে কর্মচারীদের বৃহৎ সার্থে গৃহিত যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ এবং ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজের কতিপয় কর্মচারীদের সার্থের ব্যাঘাত ঘটায় একটি চক্র বিভিন্ন মহলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করে শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা ইতোমধ্যে কয়েকজন মিলে কথিত মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে নেতাদের বিরুদ্ধে বিষুদঘার করেছেন।
চতুর্থ শ্রেণির সরকারী কর্মচারী সমিতি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সদ্য সাবেক সভাপতি মোঃ মোফাজ্জল হোসেন জানান,
সুষ্ঠুভাবে সংগঠন পরিচালনা ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বৃহৎ সার্থ বিবেচনায় রেখেই সর্বসম্মত ক্রমে আলাদা সংগঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তিনি বলেন, চতুর্থ শ্রেণির সরকারী কর্মচারী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মচারীর মতামত এবং সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহনের বিকল্প
নাই। আমরা সব নিয়ম কানুন মেনেই সাধারণ কর্মচারীদের নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান জানান,
প্রত্যেকটি পৃথক প্রতিষ্ঠান তাই মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজকে বাদ রেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এখানে একক কোন ব্যক্তির কোন স্বার্থ বা মতামত নয় বরং সাধারণ সভা ডেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতেই সংগঠন পৃথক করা সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এতে সংঠনের কার্যক্রম যেমন গতিশীল হবে কর্মচারীদের বিভিন্ন স্বার্থও বাস্তবায়ন সহজ হবে। এখন মেডিকেল কলেজের কতিপয় কর্মচারীর ব্যক্তি সার্থ
ব্যাঘাত ঘটায় তারা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সংগঠনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ বসু মিয়া, সাবেক অর্থ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আাতিকুল
ইসলাম, আগামী নির্বাচনেক সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থী মোঃ তাইজ উদ্দিন আলাদা ইউনিট বাস্তবায়নের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, সংখ্যা গরিষ্ঠ
কর্মচারী যেমনটা চান তেমনভাবেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখানে কারও মায়াকান্নার কিছু নাই।
এদিকে গত ২৯ এপ্রিল ২০২১ তারিখে বিকালে মাসকান্দাস্থ মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারে নবনির্মিত সুমেশ্বরী ভবনে মেডিকেল কলেজের কতিপয় চতুর্থ
শ্রেণির কর্মচারী মোঃ আব্দুল আওয়াল(নিরাপত্তা প্রহরী), মো গোলাম রব্বানী(অফিস সহায়ক), মোঃ সাইফুল ইসলাম সুমন(অফিস সহায়ক), মোঃ
হুমায়ুন কবির(পরিচ্ছন্নতা কর্মী), মোঃ ওয়ালী উল্লাহ(কুক/মশালচী), মোছাঃ রিনা বেগম(অফিস সহায়ক), মোছাঃ লাকী আক্তার(অফিস সহায়ক)সহ একটি উচ্ছৃশংখল কর্মচারী গ্রæপ মিলে সরকারী ভবণে তালা থাকা সত্বেও তারা নিজেদের উদ্যোগে ভবনে আরো তিনটি তালা লাগিয়ে দেন।
এমনকি হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ কর্মচারী সমিতির সদ্য সাবেক কার্যকরী পরিষদের নেতৃবৃন্দকে
উদ্দেশ্য করে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে। সেই সাথে সেইদিনই রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে মেডিকেল কলেজের ৩৫/৪০ জন কর্মচারী মাসকান্দা মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারে প্রবেশ করে সুমেশ্বরী ভবনের তাদের লাগানো নিজস্ব তিনটি তালা খুলে উক্তভবনে সরকারী একটি তালার চাবি স্টাফ কোয়ার্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাম্প মিস্ত্রি মোঃ আশরাফুল ইসলামকে জিম্মি করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে
ছিনিয়ে নেয়। পরে ভবনটি কলেজের ১২জন কর্মচারী দাঙ্গা হাঙ্গামা করে জোরপূর্বক দখল করে নেয়।
এসব অপকর্মের সাথে উপরে উল্লেখিত কতিপয় কর্মচারীর পাশাপাশি মেডিকেল কলেজের কর্মচারী মোঃ ফরহাদ আলম খান সোহেল(অফিস সহায়ক), মোঃ রেজাউল করিম(অফিস সহায়ক), মোঃ আব্দুর রাজ্জাক(অফিস সহায়ক), মোঃ শফিক(অফিস
সহায়ক), মোঃ মোহসিন (অফিস সহায়ক), মোঃ মোশাররফ হোসেন (অফিস সহায়ক), মোঃ কামরুল হাসান(পরিচ্ছন্নতাকর্মী) এবং অজয় কৃঞ্চ দাস(
দারোয়ান)সহ আরো অনেকেই জড়িত। তারা হাসপাতালের পরিচালকসহ হাসপাতালের
প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড মাস্টার, সদ্য সাবেক কার্যকরী পরিষদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ পরিষদের নেতাদেরকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন।
এসময় তারা তাদেরকে সামনে পেলে হেস্তনেস্ত ও লাঞ্ছিত করারও হুমকি দেন বলে অভিযোগ
রয়েছে। এসব বিষয়ে শান্তিপ্রিয় কর্মচারীরা প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
##