ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ ভাগাভাগি নিয়ে ময়মনসিংহে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। কন্দ্রীয় কমিটিতে ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির দুঃসময়ের নির্যাতিত নেতাদের পদবঞ্চিত করা হয়েছে বলে গুঞ্জন চলছে। কমিটিকে ঘিরে আগামীতে ময়মনসিংহে জাপার রাজনীতিতিতে অসনিসংকেতের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যারা দুর্দিনে রাজপথ কাপিয়েছে তাদের পদবঞ্চিত করে সুবিধাবাদীদের জায়গা করে দেওয়ায় দলের ভিতরে – বাইরে চলছে তীব্র সমালোচনা। মন্তব্য চলছে- ময়মনসিংহ জেলায় জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে স্থানীয় ত্যাগী ও মাঠের নেতা কর্মীরা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সোচ্চার থাকলেও মূলত তাদের কেউ যোগ্য পদ পায়নি। আবার অনেক নেতাদেরকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি। জানা গেছে- কেন্দ্রীয় কমিটিতে এ জেলা থেকে যারা স্থান পেয়েছে তাদের অনেকেই বিতর্কিত ও অতীতে দলীয় কোন কার্যক্রমে শর্ষে পরিমান ভূমিকা রাখতে পারেনি।
তাদের দেখা যায়নি দলীয় কোন কর্মকান্ডে।
এ সকল ব্যক্তিরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়ায় অনেক নেতা কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভে-রাগে,অভিমানে কেউ কেউ ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তারা জাতীয় পার্টির রাজনীতি ছেড়ে দিবেন। এতো সব ক্ষোভের ভিতরে রয়েছে ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টির রাজনীতির অঙ্গন!
জানা যায়, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শক্তিশালী ও চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এই কমিটিতে স্থান করে নিতে সব চেয়ে অবহেলিত হয়ে রয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টীর ত্যাগী ও মাঠের রাজনীতির নেতা কর্মীরা। তারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন একেবারেই অবহেলিত পোষ্টে। আবার কেউ কেউ কমিটিতে স্থানই পায়নি।
ময়মনসিংহ জেলা বা মহানগর এলাকায় জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সব চেয়ে বেশী ত্যাগী,নির্যাতিত নেতা হিসেবে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আহম্মেদ, আব্দুল আওয়াল সেলিম, জেলা জাপার অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম খোকন, জেলা জাপা নেতা ও সাবেক কাউন্সিল আব্বাস আলী তালুকদার, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের দুইবারের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, কোতুয়ালীর সেক্রেটারী ইদ্রিস আলী প্রমূখ। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে জাহাঙ্গীর আহম্মেদ এর স্থান হলেও তাকে যে পদে তাকে রাখা হয়েছে তাতে সন্তুষ্ট নয় ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দরা । বিভাগীয় ময়মনসিংহের প্রধান জেলা ময়মনসিংহ মহানগর কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা একজন ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতার পদ হলো এনজিও বিষায়ক সম্পাদক। অথচ তিনি এই মহানগরের দায়িত্বে থাকায় তার পরিশ্রমে ময়মনসিংহ জাতীয় পার্টি আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। আব্দুল আওয়াল সেলিম পুর্বে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সম্পাদক মন্ডলীর জায়গায় থাকলেও বর্তমান কমিটিতে তাকে সদস্য পদেও রাখা হয়নি। জেলা জাতীয় পার্টির নেতা শরিফুল ইসলাম খোকন, তিনি দলের দুঃসময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দলকে শক্তিশালী করতে দলের তৃর্ণমুল পর্যায় থেকে নেতাকর্মীদের সর্বদা খোজ নেন। তার নেতৃত্বে জেলার রাজপথ লোকারণ্য হয়ে উঠে। যে কোন কর্মকান্ডে তার ভূমিকা উল্লেখ্যযোগ্য। তাছাড়া জাতীয় পার্টির দূর্সময়ে জাহাঙ্গীরসহ উল্লেখিত নেতারাই রাজপথে ভূমিকা নিয়েছিল। তাদেরকেই মাঠে পাওয়া যেত। মিটিং, মিছিল, সমাবেশে সব কিছুতেই আয়োজক ও সামনের সাড়িতে পাওয়া যেত।
জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে- জাহাঙ্গীর সহ উল্লেখিত নেতাদের থাকার কথা ছিল সম্পাদক মন্ডলীতে ভালো কোন পোস্ট। তাতে তাদের শ্রমে বিভাগীয় ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কর্মকান্ড আরো শক্তিশালী হয়ে উঠতো। দলের দুঃসময়ে এ সকল নেতা কর্মীরা ছিলো ময়ময়সিংহের জাপার রাজনীতিতে মাঠ পর্যায়ের সংগঠক। আর ছিল মিছিল, মিটিং ও আন্দোলনের সৈনিক। তাদের মধ্যে অনেকে কারা নির্যাতিত লড়াকু সৈনিক রয়েছেন। অথচ সুসময়ে তারা আজ কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান করে নিতে বা স্থান পেতে কতটা অসহায় তা আর বলার অবকাশ রাখেনা! দলের জন্য মরিয়া হয়ে এতোটা ত্যাগ স্বীকার করে কি পেলো তারা? এমন প্রশ্ন নেতা কর্মী ও ময়মনসিংহবাসীর মাঝে ?
এই নিয়ে ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের মাঝে এখন ক্ষোভ আর হতাশাই বিরাজ করছে। ময়মনসিংহে জাপার রাজনীতির ভবিষ্যত যেন অনিশ্চয়তার দিকে ধ্বাবিত হচ্ছে। অপর দিকে যাদেরকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে তাদের অনেকে দূর্নীতির দায়ে জেল খেটেছেন। আবার অনেকেই রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় নয়। ফলে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বসন্তের কোকিলদের জায়গা দিয়ে ত্যাগীদের পদ বঞ্চিত করায় ময়মনসিংহের জাপার সাংগঠনিক অবস্থা কি হবে এই নিয়েই ভাবছেন ময়মনসিংহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।