Header Image

ফুলপুরে প্রসূতি মাকে স্বেচ্ছায় রক্তদান সততা,পরোপকারে ডাক্তারের পুরস্কারে ভূষিত সাংবাদিক তপু।

 

আরিফ রববানীঃ

কলম সৈনিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনরা সব পারে এমনি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সাংবাদিক মোঃ তপু রায়হান রাব্বি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে রোগীদের বন্ধু ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. প্রাণেশ চন্দ্র পন্ডিতের কাছ থেকে হাজারো ভালবাসায় ঘেরা একটি উপহার পেলেন এবং কিছুক্ষণ পরেই এক প্রসূতি মায়ের দ্বিতীয় সিজারে যমজ সন্তান হবার পর ব্লেডিং হচ্ছিল। তাকে এক ব্যাগ লাল ভালোবাসা দিয়ে আল্লাহর রহমতে জীবন বাঁচান।
এ বিষয়ে তিনি জানান, গত ১৪ ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন গেলো। মনে মনে চিন্তা ছিল, যেহেতু দুটি দিবস একই সাথে একই দিনে তাই বিশেষ মানুষকে কিছু দিয়ে পালন করব। কিন্তু একটি জরুরী কাজে চলে যেতে হয় আগের দিন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় তারাকান্দা উপজেলার চংনাপাড়া গ্রামে। তারপর কাজ শেষ করে পরদিন শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায়। তেবুও হাল ছাড়িনি বিশেষ মানুষটিকে ফোন করি তিনি ফোন রিসিভ করেই বলে কেমন আছো ? কি করছো? কোথায় আছো? পরিবারের সবাই কেমন আছে? তোমাদের দুটি সংগঠনের সবাই ভালো আছে? আমি কিছু বলার আগেই তিনি সব প্রশ্ন করে ফেললেন পড়ে সব কিছুর উত্তর দিয়ে ভালো-মন্দ জিজ্ঞাস করে বললাম, স্যার আপনি কোথায় আছেন? বলল চেম্বার। কতক্ষন থাকবেন? বলল বেশিক্ষণ নয়! একটি জরুরী কাজ আছে কিছুক্ষনের মাঝে বেরিয়ে পড়বো। তখন মনটা আমার খারাপ হয়ে গেল। তিনি বলেন মন খারাপের কিছুই না, তোমাদের প্রতি আমার ভালোবাসা সব সময় থাকবে। ফুল বা গিফট দিয়ে দিলেই কি ভালোবাসা হয়। যারা মন থেকে ভালোবাসে সেটাই তো প্রকৃত পক্ষের ভালোবাসা। কথা বলে ফোন রেখে দেওয়া হলো।
পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি রোজ শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা ২৮ মিনিটে ফুলপুরের গর্ব রোগীদের বন্ধু সমাজসেবক চিকিৎসক ডাক্তার প্রাণেশ চন্দ্র পন্ডিত স্যার কল করে বলেন, এ মুহূর্তে আমার চেম্বারে আসো। মনে মনে একটু ভয় পেয়েছি, না জানি কেন ডেকেছেন মনের অজান্তে কি কোন ভুল করে ফেললাম। পরে চেম্বারে যায়, যেতেই বসতে বলল। দুজনের মধ্যে কিছু কথা হলো তারপর একটি গিফট টেবিলের নিচ থেকে হাত দিয়ে বের করে বলল এটা তোমার জন্য। অবাক হয়ে গেলাম দুজনের মাঝে আরো কিছু কথা হল। তারপর দোকানে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ফুলপুর ব্লাড অনার্স এর সাংগঠনিক সম্পাদক তাসনোভা নাসরিন নিশু ফোন করে বলেন, একজন প্রসূতি মায়ের দ্বিতীয় সিজার হয়েছে এবং দুটি ছেলে সন্তান হয়েছে ফুলপুর রংধনু ক্লিনিকে। কিন্তু প্রচুর রক্তপাত হচ্ছে, দুই ব্যাগ রক্ত প্রয়োজন, একজনকে এনেছিলাম আগের রাজি হলেও পরে গ্রুপ ম্যাচিং করে আর দিতে চাই না জোর করে তো আর রক্ত নেওয়া যায় না। সব কথা শুনে তাকে আমি বললাম সবকিছু নিয়ে রেডি থাকেন। আমি দোকান বন্ধ করে আসছি। দোকান বন্ধ করে গিয়ে রক্ত দিলাম। রক্ত দেওয়ার পর আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি রোজ রবিবার সকালে খবর নিলাম মা ও যমজ দুই ছেলে সন্তান কেমন আছে? জানতে পারলাম আল্লাহর রহমতে সবাই সুস্থ আছে। এতে খুব খুশি হলাম।
তিনি আরো বলেন, রক্ত না পেলে অনেক সময় রোগী মারা যায়। আর আমাদের শরীরের রক্ত প্রতি ৩ মাস পর রক্ত কণিকা পরিবর্তন হয়। আসুন ৪ মাস পর পর এক ব্যাগ করে রোগীদের রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাই। আর যেন কোন পরিবারে কোন রোগী রক্তের জন্য অকালে ঝরে না পড়ে। রক্তদানের মতো আমার মনে হয় আর কোন উদারতা নেই এই পৃথিবীতে। কেননা রক্তের মাঝে লেখা থাকে না ধর্ম, ধনী-গরীব বা ভেদাভেদ। যখন যে বিপদে পড়ে সেই তো বুঝে তার কি দাম । হয়তো আজ বিপদে পড়েন নি!তাই বুঝতে পারছেন না তার কি দাম? তাই আসুন বিপদে পড়ার আগেই অন্যকে রক্ত দেই এবং সকলকে উৎসাহিত করি রক্ত দিতে। আজ আমি দিলে কাল তো কেউ না কেউ আমাকে দিতে এগিয়ে আসবেই। “ভোগে নয় ত্যাগেই প্রকৃত সুখ” সকলের সুস্থতা কামনা করছি এবং সবার জন্য দোয়া চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!