ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে মোড়ে মোড়ে ঝুলছে রঙিন পোস্টার-ফেস্টুন ও ব্যানার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন পদপ্রত্যাশী নেতা ও তাদের সমর্থকরা। সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত না হলেও নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন দ্রুতই এর সময় নির্ধারিত হবে। কাউন্সিলরদের সমর্থন পেতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন পদপ্রত্যাশীরা। পাশাপাশি দলীয় হাইকমান্ডের সঙ্গেও রাখছেন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ। সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
উপজেলা আওয়ামিলীগের সম্মেলন ঘিরে শুরু হয়েছে নানা সমীকরণ। সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি পদে ত্রিশাল পৌরসভার দুইবারের নির্বাচিত জনপ্রিয় মেয়র আলহাজ্ব এবিএম আনিসুজ্জামান কে সামনে রেখেই বিভিন্ন পদের প্রত্যাশা করছেন নেতারা। যারা পদে আছেন, চেষ্টা করছেন নিজ নিজ পদ ধরে রাখতে। কেউ কেউ পদোন্নতির আশায় ছুটছেন শীর্ষ নেতাদের কাছে। মেয়র আনিছের সমর্থন পেতে তার কাছেও ধরনা দিচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। কারণ নেতৃত্ব আর ব্যক্তিত্বের কারণে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে মেয়র আনিছ রয়েছেন অনন্য উচ্চতায়।
তবে সাধারণ সম্পাদক পদে ডজনখানেক নেতা মাঠে রয়েছেন। মোড়ে মোড়ে রঙিন পোস্টার-ব্যানার ঝুলিয়ে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে পদপ্রত্যাশার বিষয়টি জানান দিয়েছেন তারা। উপজেলা জুড়ে শোভা পাচ্ছে তার রঙিন পোস্টার-ফেস্টুন ও ব্যানার। ফলে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি উপজেলাবাসীর আলোচনার কেন্দ্র-বিন্দুতে পরিণত হয়েছে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামিলীগের আগামী সম্মেলন।
নেতাকর্মীরা বলছেন, পৌরসভার বর্তমান মেয়র পারিবারিক ঐতিহ্য ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সুবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তার প্রতি ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। অতীতে বিএনপি-জামায়াতের সহিংস কর্মসূচি মোকাবেলা, দলীয় কর্মসূচি সফল করা এবং উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার পিছনে তার বড় অবদান রয়েছে। ফলে সভাপতি হিসেবে তিনি শক্তিশালী প্রার্থী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবীন, ত্যাগী ও তৃণমূলের অসহায় নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ মেয়র আলহাজ্ব এবিএম আনিসুজ্জামান কে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি পদে দেখতে চান। কানিহারী ইউনিয়ন স্বেচ্ছসেবকলীগের সভাপতি মুশফিকুর রহমান রুবেল বলেন, ত্রিশালে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় মেয়র আনিছ ভাইয়ের বাবা-চাচাদের বড় অবদান রয়েছেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল হোসেন চেয়ারম্যান ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামিলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।’তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
তিনি বলেন, তিনি ছোট বেলা থেকেই তার পিতার সাথে আওয়ামিলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। আলহাজ্ব এবিএম আনিসুজ্জামান তার পিতা মরহুম আবুল হোসেনের মতো যোগ্য ও সৎ নেতৃত্বের হাত ধরেই ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে এসেছেন। তার সার্বিক সহযোগিতায় ও নেতৃত্বে আজ ত্রিশালের আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। উপজেলা আওয়ামী লীগের আগামী কমিটিতে মেয়র আনিছ হলে দল আরও শক্তিশালী হবে’ বলে মনে করেন তৃণমূলের এই নেতা।
মেয়র আলহাজ্ব এবিএম আনিসুজ্জামান আনিস বলেন, ‘একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক বজায় রেখে রাজনীতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তৃণমূলের অসহায় ও বঞ্চিত নেতাকর্মীদের নূন্যতম চাওয়া পাওয়া ও দুঃখ-কষ্ট সমাধান করার চেষ্টা করে যাচ্ছি আমার নিজস্ব অবস্থান থেকে। এছাড়াও যেহেতু তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে উঠে এসেছি। তাই তৃণমূলের সমস্যা ও দুঃখ-কষ্ট বুঝি।’
তিনি বলেন, ‘পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য ছাড়াও ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করে আমি যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক তৈরি করে থাকি, উপজেলা আওয়ামী লীগসহ জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে থাকি- তবে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রতি আমার আস্থা আছে। আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে তারা যোগ্য নেতৃত্ব বেছে নেবেন।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা বলেন, ‘ত্রিশালে দল আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। দলের এই শক্তিকে ধরে রাখতে যোগ্য নেতৃত্ব দরকার। তবে কোন দখলবাজ, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ বা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী রাজাকারের পরিবারের কেউ যেন আগামী কমিটিতে স্থান না পায় সেই দাবী জানান উপজেলার নেতৃবৃন্দ।