ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহঃ প্রায় এক মাস ধরে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে কাচারীঘাটে চলছে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। ঢাকা থেকে আসা স্থানীয় একটি চক্র নিয়ে সিন্ডিকেট এবং অসাধু ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ায় লিপ্ত রয়েছে। বাহারী নিম্নমানের পণ্য কিনে প্রতারিত হচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। স্থানীয় সেন্ডিকেট দাবী করে প্রশাসনের এলআর ফান্ডে টাকা দিয়েই মেলা শুরু হয়েছে। এনিয়ে একে ফেরদাউস বিতর্কেও জড়িয়ে ছিলেন। কোটি টাকার ভ্যাট ও আয়কর ফাঁকি দেওয়ার বৃহত পরিকল্পনা আয়োজক এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের।
সুত্র জানিয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার তোয়াক্কা না করে মেলার নামে প্রতারনার মহাউৎসব। দর্শনার্থীদের বাধ্য করা হচ্ছে ১৫ টাকার গেট টিকিট কিনতে। আয়োজক সিন্ডিকেট ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স, আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যবহার করে মেলা থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার প্রায় সকল শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগ করা হয়েছে। ময়মনসিংহবাসীদের বোকা বানিয়ে কোটিকোটি হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। অন্যদিকে চেম্বার অব কমার্সক শংকরের মেলায় উপস্থিতিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।মেলায় অতিরিক্ত দামে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করে ময়মনসিংহবাসীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বন্ধ করতে আদালতে আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
মেলায় গিয়ে জানা যায়, ছোট-বড় মিলিয়ে ১০৫টি স্টল রয়েছে। নামে বাণিজ্য মেলা হলেও প্রতিষ্ঠিত কোনো কোম্পানির স্টল নেই। নিম্নমানের পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে স্টলগুলো। বৈধ ব্যবসার কাগজপত্র নেই অধিকাংশ স্টল মালিকের। পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না কোনো নিয়ম। দেওয়া হচ্ছে না রসিদ এবং মালামালের ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি। প্রতারণায় ভরপুর প্রতিটি স্টল। ক্রেতারা সবচেয়ে বেশী প্রতারিত হচ্ছেন ক্রোকারিজ এবং ১২০, ১৩০ ও ১৫০ টাকা পণ্যের স্টলে। ক্রোকারিজের স্টল থেকে ১টি পণ্য কিনলে একাধিক ফ্রি। বিষয়টি লটারির মতো। ৪টি স্টলের প্রতিটিতেই সাজিয়ে রাখা হয়েছে নামি-দামী কোম্পানির প্যাটার্ন এবং লোগো ব্যবহার করা নকল ও নিম্নমানের পণ্য। পণ্যগুলো দেখতে আসল এবং দামী পণ্যের মতোই। বাসায় নিয়ে ২-৩ দিন ব্যবহার করার পরই ক্রেতাদের কাছে নকলের বিষয়টি ধরা পড়ে। অনেকেই আবার ক্রোকারিজসহ এসব পণ্য মেলায় ফেরত আনেন।
জানা যায়, ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স শর্ত সাপেক্ষে ঢাকার গ্লোবাল লিংক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট নামের প্রতিষ্ঠানকে মেলা লিজ দেয়। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের নাম ব্যবহার না করে গেট, প্রচারপত্র, মাইকিং এবং বিভিন্ন স্থানে চেম্বার অব কমার্সের নাম ব্যবহার করছে। অথচ স্টল বুকিংয়ের প্রচারপত্রে তাদের প্রতিষ্ঠান এবং নিজেদের নাম বড় করে ব্যবহার করা হয়েছে। তারা মনে করছেন চেম্বারের শীর্ষ নেতারা সরাসরি মেলার সাথে জড়িত। অবশ্য চেম্বারের এক নেতার মেলায় যাতায়াত এবং সিন্ডিকেটের সাথে মাখামাখি সম্পর্কের কারণে নগরবাসীর ধারণা বেড়েই চলেছে।