মোঃ মাসুদ মিয়া, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের ত্রিশালে করোনা ভাইরাসের কারনে দ্রব্যমূল্যের দাম যেন বৃদ্ধি না পায় সে লক্ষ্যে
সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশালে ব্যবসায়ীদের সাথে উপজেলা নির্বাহী
অফিসার (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান তার কর্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন।
যেখানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস আতঙ্ক দিন দিন বেড়েই চলেছে। চীন থেকে শুরু হওয়া
কোভিড-১৯ এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ১৮৫ দেশ ও অঞ্চলের ১১ হাজারের বেশি মানুষের
প্রাণহানি হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন পৌনে তিন লাখের বেশি মানুষ। এমন বিপদের সময়ও
কিছু স্বার্থলোভী অধিকাংশ মানুষের ভেতরেই অসৎ উপায়ে স্বল্প সময়ে ধনী হওয়ার প্রবণতা
সাম্প্রতিক সময়ে অধিক হারে দেখা যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রতিক ইস্যুকে
কেন্দ্র করে দ্রব্য মূল্যের দাম অধিক হারে বাড়াতে থাকে। তাই দেশের এই ক্লান্তি লগ্নে
করোনাকে কেন্দ্র করে বাড়ানো হচ্ছে দ্রব্য-মূল্যের দাম। অতি লাভের কারণে পণ্য মজুদও করছে
অনেকে। যার ফলে হুমকির মুখে পড়ে এই দেশের সাধারণ দিনমজুর নিম্ন মধ্যবৃত্ত শ্রেণীর
মানুষ।
অন্যদিকে দেশের অন্যান্য জেলার মত ত্রিশালের প্রশাসন ও বারবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে
বাজার স্থিতিশীল করতে পারছে না। অসাধু ব্যবসায়ীরা আইন অমান্য করে অতিরিক্ত মূল্যে
বিক্রি করছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। প্রতি বস্তা চাল গত একসপ্তাহ আগের মূল্যের
তুলনায় বর্তমানে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা ও ৩০ টাকা জেকি মূল্যের পেঁয়াজ বিক্রয় করা হচ্ছে
১০০ টাকা মূল্যে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় করছে। আগের তুলনায় মুনাফার হারও অনেক বেশি।
একই মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে ভিন্ন ভিন্ন দামে চাল বিক্রয় হচ্ছে। শুধু চাল নয়
পেঁয়াজ, আটা, আদা ও মাস্কসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অধিক হারে বিক্রি
করছে।
এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে
মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো দুই-এ। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ ছাড়ালো। তবে এমন কঠিন সময়ে
সাধারণ মাস্ক থেকে শুরু করে অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অধিক হারে। যার চাপ
সামলাতে পারছে না দেশের সাধারণ দিনমজুর নিম্ন মধ্য শ্রেণির মানুষ। মাদারীপুরের
শিবগঞ্জ উপজেলা লকডাউন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এরপর থেকে লকডাউনের আশঙ্কা ছড়িয়ে
পরেছে দেশব্যাপী। তাই প্রয়োজনীয় দ্রব্য সংরক্ষণ করতে ব্যাস্ত পরছে মানুষ। যদিও সরকারের পক্ষ
থেকে বলা হচ্ছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে দেশে। তারপরও ব্যবাসায়ীরা এই সুযোগকে কাজে
লাগিয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে মাঠে কঠোর হাতে দমন করছে
প্রশাসন। শাস্তি হিসেবে করা হচ্ছে অর্থদণ্ড। তারপরেও থামানো যাচ্চে না দ্রব্যমূল্য
বৃদ্ধিকারী এই চক্রদের।
এই বিষয় ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের
অভাব নেই। সংকটও নেই বরং যথেষ্ট জোগান রয়েছে। সুতরাং বেশি বেশি কেনাকাটা করে
বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করবেন না।
এ সময় ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র এ.বি.এম আনিছুজ্জামান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) তরিকুল
ইসলাম, ত্রিশাল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হারুন অর রশিদ, সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক
গোলাম মোস্তফা সরকার, সদস্য মাজহারুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক
মোহাম্মদ সেলিম, সাবেক সভাপতি সাংবাদিক খোরশিদুল আলম মুজিব, সহসভাপতি
রফিকুল ইসলাম শামীম, সাংবাদিক জহিরুল কাদের কবীর, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত
ছিলেন।