আরিফ রববানীঃ
ময়মনসিংহে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান পরিস্থিতিতে আইন অমান্য করায় নগরীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১৩ জনের নামে মামলা হয়েছে। রবিবার ১২ই এপ্রিল পরিচালিত এই অভিযানে ২জনের জেল ও অন্যান্যদের জরিমাণা করা হয়েছে। এই সময়ে ৫ হাজার ৬ শত টাকা জরিমাণা আদায় করা হয়। বিভাগীয় নগরীর খাগডহর ও কালিবাড়ি এলাকায় রবিবার দুপুর পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালিত হয়।
করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী একটি একটি মহামারি। ভাইরাস জনিত এই রোগে বিশ্ব দুনিয়া কাপছে। সৃষ্টি হয়েছে মহাদুরর্যোগ। শত কোটি মানুষ চরম দুর্যোগের মধ্যে পড়েছে। এক অপরকে দূরে ঠেলে দিয়ে মানুষ মানুষের কাছ থেকে এড়িয়ে চলার চেস্টা করছে। যেন নিজ গৃহে পরবাসী। মানবতা হয়ে দাড়িয়েছে ক্রমান্বয়ে প্রখর। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় প্রতিরোধ যুদ্ধে নেমেছে পুরো বিশ্ব। বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে দৈনন্দিন জীবন যাপন। বাংলাদেশও এই যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে নেই। সরকার প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই ঘোষনা দিয়েছেন, আপনারা ঘরে অবস্থান করুন। নিজে, পরিবার, সমাজ ও দেশকে বাচান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর ঘোষনায় ময়মনসিংহের মানুষজনকে নিজ ঘরে অবস্থান নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর সহ জেলা, উপজেলায় সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, র্যাব ও সেনাবাহিনী ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছে। লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, শহরের মোড়ে মোড়ে এবং গ্রামগঞ্জে ক্যাম্পিং করা হয়। ইতিমধ্যেই সাধারণ ছুটিতে দোকানপাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সড়ক, মহাসড়কে যানবাহন বন্ধ রাখতে সরকারের উচ্চ পর্যায় নির্দেশনাজারি করেছেন। এছাড়াও গত দুদিন ধরে সন্ধ্যা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত কাউকে ঘর থেকে বের না হতে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশের অনেক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ময়মনসিংহে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ, ডিবি, র্যাব ও সেনাবাহিনী দিনরাত টহল দিয়ে আসছে। এ সময়ে প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনী মানবিক আচরণ করে জনগণকে ঘরে থাকার আহবান জানিয়ে আসছে। এর পরও কতক লোকজন সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বিনা প্রয়োজনে অকারণে রাস্তাঘাটে ঘুরাফেরা, চায়ের দোকান খুলে আড্ডাবাজি, মোড়ে মোড়ে অযথা ঝটলা সৃষ্টিসহ হাট বাজারে ভীড় করেই আসছে। পাশপাশি এ সমস্ত চক্র প্রশাসন ও সরকারি নির্দেশনা নয়, যেন করোনা ভাইরাসকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ডেকে আনতে হুমড়ি খেয়ে মাঠে নেমেছে।
এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনী দেশ ও দেশের মানুষকে রা করতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। দোকানপাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সড়ক, মহাসড়কে যানবাহন বন্ধ থাকার পরও যারা দোকান খুলে আড্ডাবাজি, জনসমাগম ঘটানোসহ, সামাজিক দুরত্ব বজায় না রেখে মোটরবাইকে একের অধিক চলাচল করছে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল জরিমাণা দেয়া হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট আয়শা হক জানান- রবিবার দুপুর পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিভাগীয় নগরীর খাগডহ বাজার ও কালিবাড়ি এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় খাগডহর বাজারে দোকান খোলা রেখে জনসমাগম ঘটানোর অভিযোগে ৬টি মামলা হয়েছে। আদালত তাদের কাছ থেকে ৩ হাজার ২শত টাকা জরিমানা আদায় করে। এছাড়া কালিবাড়ি এলাকায় চা খেতে বের হওয়া এবং একই মোটসাইকেলে দুইজন চলাচল করে সামাজিত দুরত্ব নষ্ট করার অভিযোগে আদালত তিনটি মামলা করে। তাদের মধ্যে একজনকে ৩ দিনের জেলা এবং অন্যদের কাছ থেকে আদালত দেড় হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। এছাড়াও ঐ এলাকায় দোকান খোলার রাখার অভিযোগে একজনের একদিনের জেল ও নয়শত টাকা জরিমাণা করা হয়। পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী আদালতকে সহযোগীতায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবিতা সরকার, ফাতেমা তুজ জোহরা ও তাসনিম আক্তার এই আদালত পরিচালনা করেছেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট আরো বলেন, আইন অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।