ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ধাপে-ধাপে পর্যায়ক্রমে কর্মহীন দের মাঝে নিয়মিত ত্রাণ বিতরণের পরে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল ত্রাণ সহয়তার দাবীর নাম করে সরকারের আদেশ অমান্য করে জনসমাগম করে মানববন্ধন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জানায়- ইউনিয়নের আহাম্মদাবাদ বাজারে মোঃ সাইফুল ইসলাম উকিল, জালাল উদ্দিন, মোঃ মাহবুবুল আলম (বুলবুল) মোঃ কাশেম (সাবেক মেন্বার) গংদের উদ্যোগে সরকারের কাছে ত্রাণ সহায়তা চেয়ে মানব বন্ধনের নামে জনসমাগম করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া নিয়মনীতি ও সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে সমালোচনা চলছে ইউনিয়নের সচেতন মহলের মাঝে । শনিবার ১১ই এপ্রিল সকাল ১২ টায় আহাম্মদাবাদ বাজারে চার রাস্তার মোড়ে এই মানব বন্ধন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে- মানব বন্ধনে একজনের সাথে আরেকজন এমন ভাবে গাঁ ঘেসে দাড়ানো হয়েছে এতে সরকার ঘোষিত সামাজিক দুরত্ব আইনকে তুয়াক্কা করা হয় নি।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে- সরকার যেখানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের সব মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে, জনসমাগম ঠেকাতে দোকানপাট, হাট-বাজার, চা স্টল, সভা-সেমিনার সহ সকল কিছু নিষিদ্ধ করেছেন মানুষের মঙ্গলের স্বার্থে। সেখানে ত্রাণ সহায়তার দাবিতে মানুষকে ডেকে এনে গ্রামের অসহায় অবুজ মানুষগুলোকে ভাইরাসের সংক্রমণে ঝুঁকিতে ফালানো হয়েছে। অথচ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী উজ্জল ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘরে থাকা মানুষের ঘরে ঘরে এই পর্যন্ত দুইবার ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। যেখানে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ অভাবী মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন সেখানে ত্রাণের দাবিতে ঘরে থাকা মানুষগুলোকে বাহিরে ডেকে এনে জনসমাগম করা নিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা দেখা দিয়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা কে অমান্য করে কোন ক্ষমতা বলে এসব লোকজন বাইরে এসে মানব বন্ধনে মিলিত হলো এনিয়েও চলছে বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন প্রশ্ন। স্থানীয় রাজনৈতিক ও অসামাজিক সর্বস্তরের গণ্যমান্যদের মতে- কানিহারী ইউনিয়ন এতটা মঙ্গাপীড়িত নয় যে, এখানে সরকারী ত্রাণের জন্য হাহাকার হয়ে উঠেছে, সরকারি ত্রাণ না পেলে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে এমন মঙ্গা এলাকাও কানিহারী নয়। যদি মনটাই হয়ে থাকে যে ত্রাণের জন্য মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণ চাইলে দিচ্ছেনা তাহলে সেক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনও জেলা প্রশাসনের ত্রাণ বিতরণ শাখার সরকারি নাম্বারগুলো বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যেসব নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করে অনেকে ত্রাণ পাচ্ছে তাহলে এই মানববন্ধন টা কিসের জন্য এটা কিসের রাজনীতি এনিয়েও চলছে বিভিন্ন মহলে মতবাদ। অনেকই বলছেন এই মানব বন্ধন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। চেয়ারম্যান কে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষেই এই মানব বন্ধন করা হয়েছে এটাই গন্যমান্যদের অভিমত।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী উজ্জল জানান সরকারিভাবে আমাকে দুইবারে দুইশ জন লোকের জন্য ২টন মাল দেওয়া হয়েছে, তালিকা করতে গিয়ে লোকসংখ্যা বেশী হওয়ায় সরকারী বরাদ্ধের সাথে আমি আরো ব্যক্তিগতভাবে বৃদ্ধি করে দুই বাড়ে প্রায় ৪শত কর্মহীন লোকের ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পৌছে দিয়েছি। তার পরে ত্রাণের জন্য মানব বন্ধন হওয়ার বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক । এটা একটা চক্রান্ত বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান জানান-সরকারী নিয়ম অনুসারে বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে গ্রামেগঞ্জে ত্রাণ সামগ্রী পৌছে দিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ধাপে-ধাপে দেওয়া হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, তালিকা প্রনয়নে বিলম্বের কারণে ত্রাণ সামগ্রী এলাকায় পৌছতেও সময় লাগে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চলছে। কানিহারী ইউনিয়নেও ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ হয়েছে তারপরও ত্রাণের জন্য মানববন্ধন হওয়াটা দুঃখজনক। যেহেতু কানিহারী মঙ্গা পিড়িত এলাকা না,তারপরও ত্রাণের জন্য মানব বন্ধন হওয়ার বিষয়টা কোন ষড়যন্ত্র বা চক্রান্তের অংশ হতে পারে।ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে পুর্ব শত্রুতার জের ধরেও এই মানব বন্ধন হতে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন-ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে স্থানীয় চেয়ারম্যান যদি দলীয়করণ অথবা আত্মীয় করন করে থাকেন তাহলে আমাদের সরকারী নাম্বার সবসময়ই জনগনের সেবার জন্য চালু থাকে, আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত। তবে তা না করে ত্রাণের জন্য জনসমাগম করে মানববন্ধন করেছে। আসলে মুল বিষয়টা কি সেটা আমরা তদন্ত করে আইনানুগভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
তবে ত্রাণ সহায়তার নামে মানববন্ধনে নাম করে গ্রামের অবুঝ সহজ সরল লোকজনকে যারা ঘর থেকে বের করে ডেকে এনে জনসমাগম করতে বাধ্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগভাবে প্রয়োজনে ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।
ত্রিশালের প্রবীন রাজনীতিবিত ও আওয়ামীলীগ নেতা ফজলে রাববী এ ব্যাপারে জানান- এই মানব বন্ধনকারীগন কারা খুজে বের করা উচিত। তার দাবী মতে- এটা ত্রাণের জন্য নয় সরকারের বিরুদ্ধে মানব বন্ধন হয়েছে দাবী করে বলেন
এরা ত্রানের জন্য না,,,,সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত।কানিহারি আমার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি,,,,সরকারি ত্রান বিতরণে কানিহারিতে কোন দূর্ণীতি হয় নাই। ওখানকার অবস্থা আমি শতভাগ জানি। সামাজিক দূরত্বের বারোটা বাজিয়ে যারা অন্যায় ভাবে মানব বন্ধন করেছে,, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত।।