
আরিফ রববানীঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দিন রুজি করা অসহায় শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে উপজেলার শ্রমিক নেতাদের সাথে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আলোচনা ও মতবিনিময় সভা করেছে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান।
২০ এপ্রিল দুপুরে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন সরকার। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ,সহকারী কমিশনার (ভূমি) ত্রিশাল তরিকুল ইসলাম তুষার, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবী নেওয়াজ সরকার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, উপজেলা পরিষদ সাবেক ভাইস -চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্ডল, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
এ সময় ত্রিশাল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সরকার শ্রমিক নেতাদের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, যারা দূর্বল অসহায় বেশী তাদেরকে তালিকা করে জমা দেন তাদের ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। জাতীয় আই ডি কার্ড দেখে যে যেখানে বসবাস করেন সেই এলাকায় যেন তালিকা দেওয়া হয়। ত্রিশাল উপজেলা পরিষদ সব সময় অসহায় মানুষের সহায়তা করে অাসছে এবং এই কঠিন সময়েও পাশে থাকবে।
এ সময় মেয়র আলহাজ্ব এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ বলেন, ত্রিশাল পৌরসভায় সরকারি বরাদ্ধ এবং নিজের উদ্যোগে দেওয়া ত্রাণ নিজে গিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছি। যারা বাকী আছে তাদের জন্য ত্রাণ প্রস্তুত করা হচ্ছে তালিকা দেখে অসহায় মানুষের পাশা-পাশি যারা পরিবহনে দিন রুজিতে কাজ করে তাদেরকেও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে। আর যারা ইউনিয়নে রয়েছেন তারা যেন সংলিষ্ট ইউনিয়নে অসহায় দেখে দেখে তালিকা জমা দেন। মেয়র আরো বলেন, একজন মানুষও না খেয়ে মরবে না। যদি কোন ব্যক্তি কোন স্থান থেকে সহায়তা একবার পেয়ে থাকেন তাহলে দ্বিতীয় বার যেন ত্রাণ না নেয় কারণ সরকার সকল অসহায় মানুষের ত্রাণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। একজন ব্যক্তি একাধিক বার ত্রাণ নিলে আরেকজন অসহায় ব্যক্তি বঞ্চিত হবেন বলে শ্রমিক নেতাদের আহবান জানান। তিনি আরো বলেন,আমরা আমাদের অবস্থান থেকে অসহায় মানুষের প্রতিমুহূর্ত খোজ খবর রাখছি।
শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশ্যে নবী নেওয়াজ সরকার বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে সকল অসহায় মানুষের জন্য বিশাল পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। এছাড়াও সমাজের প্রভাবশালীরাও অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণে মাঠে কাজ করছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ত্রিশাল তরিকুল ইসলাম তুষার বলেন, চলমান সমস্যায় সামাজিক দুরত্ব বঝায় রেখে চলুন এবং ঘরে থাকুন, অসহায় মানুষের পাশে আমরা সব সময় আছি। সারা বাংলাদেশে আমাদের ৬জন ভাম্যমান ম্যাজিস্ট্রেট করোনা আক্রান্ত হয়েছে তবুও আমরা আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি,যারা অসহায় তারা যেন জীবন বৃতান্ত দিয়ে ত্রাণের জন্য ফরমের মাধ্যমে তালিকা দিয়ে নাম লিখান যাতে এক ব্যক্তি একাধিকবার সহযোগীতা না পায়।
উপজেলা পরিষদ সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান অাশরাফুল ইসলাম বলেন, করোনার এই কঠিন সময়ে সরকারের ত্রাণ সহায়তা যাতে সকল অসহায় ব্যক্তিরা সবাই সুবিধা পান সে বিষয়ে জাতীয় আই ডি কার্ডের মাধ্যমে ইউনিয়ন ভিত্তিক তালিকা করে সংলিষ্ট ইউনিয়নে জমা দিতে হবে প্রয়োজনে কতৃপক্ষ অবগত থাকবেন। পরিবহন শ্রমিকরা যারা দিন রুজি করে খায় তারা একেবারেই বেকার তাদেরকে সহায়তা আগে করতে হবে। তাই শ্রমিক নেতারা আপনারা দেখে দেখে অসহায় মানুষের তালিকা করুন।
উপজেলা আওয়ামীলীগেরর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল কালাম শ্রমিক নেতাদের উদ্ধেশ্যে বলেন, দিন রুজি করা পরিবহন শ্রমিকরা প্রতিদিন পাঁচশত থেকে হাজার টাকা উপার্জন করতো। দীর্ঘদিন মহাসড়কে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় দিনরুজি করা সংসার চালানো অসহায় মানুষ গুলো বেকার হয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তাই এই শ্রেণী মানুষের ত্রাণের প্রয়োজন থাকায় তাদেরকে তালিকা করে স্ব -স্ব এলাকা থেকে ত্রাণের ব্যবস্থা করা খুব জরুরী । তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার থাকতে একজন মানুষেও না খেয়ে মরবে না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, অসহায় মানুষের সহযোগীতায় আমরা সব সময় পাশে ছিলাম এবং থাকবো তবে সঠিক অসহায় মানুষের তালিকা প্রস্তুুত করে সংলিষ্ট ইউনিয়নে জমা দেন। আমরা সরকারের দেওয়া বরাদ্ধ নিজেরা উপস্থিত হয়ে পৌঁছে দিব।
সভার সভাপতি ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, করোনার শুরু থেকেই আপনাদের সচেতনতায় প্রতিনিয়ত আপনাদেরকে অবগত করছি এবং সরকারি ত্রাণের বরাদ্ধ গুলো যাচাই বাচাই করে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছি। সামনের দিন গুলোতে যা বরাদ্ধ আসবে তা অসহায় মানুষের জন্যই আসবে তাই আপনারা সকলেই সচেতন হউন প্রতি এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে যাবে।