আরিফ রববানীঃ
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের উদ্যোগে দোকান ও মুদ্রণ শিল্প কর্মচারী, অসহায় এবং সুবিধা বঞ্চিত ৪ শতাধিক মানুষের মাছে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। রবিবার দিনে কাচারীঘাট সংলগ্ন রোডে ও রাতে নগরীর মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়। গৃহায়ণ ও গণপুর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা এই সব খাদ্য সহায়তা পুলিশ সুপারের পে ডিবি পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দ এ সব খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন। এর আগে বস্তিবাসী, অসহায়, অস্বচ্ছল, দিন এনে দিন খাওয়া, কর্মহীন, শ্রমিক, বেদে পরিবারদের খুঁজে খুঁজে তালিকা করে পুলিশ সুপার নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় তিন হাজার অসহায়দের পর্যাক্রমে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন।
করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী একটি প্রকোপ। একটি মহামারি। ভাইরাস জনিত এই রোগে বিশ্ব দুনিয়া কাপছে। শত কোটি মানুষ চরম দুর্যোগের মধ্যে পড়েছে। মানবতা হয়ে দাড়িয়েছে ক্রমান্বয়ে প্রখর। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় প্রতিরোধ যুদ্ধে নেমেছে পুরো বিশ্ব। এ যুদ্ধে ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়ছে কর্মজীবী মানুষ। বাংলাদেশও এই যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে নেই। পিছিয়ে পড়া এই কর্মহীন মানুষদের রায় এবং তাদের পেটের আহার যোগাড় করতে সরকারী ও বেসরকারীভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। সরকার প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই ঘোষনা দিয়েছেন, আপনারা ঘরে অবস্থান করুন। নিজে, পরিবার, সমাজ ও দেশকে বাচান। খাবারের জন্য একজন মানুষও মারা যাবেনা। অর্ধাহারে অনাহারে থাকা প্রতিটি মানুষের ঘরে খাবার পৌছে যাবে। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিককর্মী, ও প্রশাসন আপনাদের ঘরে খাবার পৌছে দিবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় ময়মনসিংহে অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাড়িয়েছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন।
পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের নির্দেশে পুলিশ খুজে বেড়াচ্ছে সমাজের নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবি কর্মহীন, বেকার হয়ে পড়া, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের। খুজে খুজে বের করে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে সহায়তা করে আসছেন।
রবিবার (২৬) এপ্রিল পুলিশ সুপার কার্যালয় সংলগ্ন কাচারীঘাট রোডে তিন শতাধিক দোকান ও মুদ্রণ শিল্প কর্মচারী, অসহায় সুবিধা বঞ্চিত তিন শতাধিক এবং রাতে নগরীর মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শতাধিক বিভিন্ন দোকান কর্মচারীদের মাঝে এই খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়। পুলিশ সুপারের পে ডিবির ওসি শহা কামাল আকন্দ ও ডিবির টিম স্বশরীরে উপস্থিত থেকে এই সব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
এর আগে পুলিশ সুপার খোজ খবর নিয়ে জানতে পানতে পারেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি ছুটির কারণে দোকানপাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন বন্ধ থাকায় এক মাসে তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এতে তারা নিজেদের পরিবার পরিজন নিয়ে চরম সংকট সময় পাড় করছে। এ অবস্থায় জেলা পুলিশ নিজেদের অর্থায়নে সমাজের নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবি কর্মহীন, বেকার হয়ে পড়া, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের সহায়তা করে আসছেন।
এই মানবিক পুলিশ সুপার বস্তিবাসী, অসহায়, অস্বচ্ছল, দিন এনে দিন খাওয়া, কর্মহীন, শ্রমিক, বেদে পরিবারদের খুঁজে খুঁজে তালিকা করে তাদের ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করে আসছেন। প্রায় তিন হাজার অসহায়দের পর্যাক্রমে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন। এছাড়া নগরীতে লকডাউনে না খেয়ে ফুটপাতে পড়ে থাকা ভাসমানদের রান্না করা খাবারের প্যাকেট নিয়ে শহরে ঘুরে ঘুরে ভাসমান না খাওয়া মানুষের পেটে নিয়মিত আহার তুলে দেন। এছাড়াও নগরীর বলাশপুরের এক অসহায় পরিবারের ফোন পেয়ে রাতেই মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে (ডিবি) পুলিশের মাধ্যমে ১৫ দিনের খাবার পৌছে দেন। এভাবেই তিনি মধ্যবিত্ত লোকদেরকে গোপনে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের মানবাধিকতার খবর জেলার সকলস্তরে ব্যাপকভাবে চাউর হয়েছে। এদিকে পুলিশ সুপারের ফেইসবুকে ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে না খেয়ে রয়েছেন এবং স্বামীহারা এক নারীর পরিবার মানবেতর দিনাতিপাত করায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওসি ডিবি শাহ কামাল আকন্দের মাধ্যমে অসহায় পরিবারদের খুঁজে খুঁজে ১০ দিনের খাবার তুলে দেন। অপরদিকে ময়মনসিংহ নগরীর দিঘারকান্দা আল মানার এতিমখানার ৪৮ জন শিার্থীর বাড়িতে গিয়ে ওসি শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ ১০ দিনের খাদ্য সহায়তা এতিমদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন।
ময়মনসিংহের পুলিশ বাহিনী জনগণকে নিরাপত্তা পাশাপাশি মানবিক দায়িত্ব নিয়ে নিজেদের অনুসন্ধানী চোখ রেখে অসহায়দের খাদ্য বিতরণ করছে। পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের উদ্যোগে প্রতিদিন সহায়তার নানা কার্যক্রম চলাচ্ছে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা। পুলিশ সুপার এ সম্পর্কে বলেন, মুজিববর্ষের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার। এই শ্লোগানেই আমরা দৃঢ়তার সাথে কাজ করছি। কেউ না খেয়ে থাকলে মানবিক কারনেই আমরা তার ঘরে খাবার পৌছে দিব। এ জন্য সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত। উল্লেখ্য গনপুর্ত গ্রতিমন্ত্রী ফুলপুর আসন থেকে নির্বাচিত এমপি শরীফ আহমেদ করোনা ভাইরাস নিয়ে সৃষ্ট দুর্যোগকালীন সময়ে তার নিজের আসন সহ জেলার বিভিন্ন আসন, বিভাগীয় নগরীতের বিপুল পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। এছাড়া সরকারী একাধিক দপ্তর, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের মাধ্যমেও ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন।