আরিফ রববানীঃ
ময়মনসিংহে করোনা মহামারীতে ক্ষুধার্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসনের হটলাইনে অসহায়দের ফোন পেয়ে রাতের আধারে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌছে দিচ্ছে ডিসির নির্দেশনায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা । রাতে ঝড়, বৃষ্টি উপো করে ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায়দের মাঝে খাবার পৌছে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় এই দুর্যোগকালীন সময়ে ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেওয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার সামগ্রী খাদ্য সহায়তা ।
জেলা প্রশাসন জানায়, করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ে দুর্যোগে ময়মনসিংহে অসহায়, ছিন্নমূল, নিম্নবিত্তদের পাশাপাশি বেকার ও কর্মহীনের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এ সব কর্মহীন, নতুন করে বেকার হওয়া মানুষদের পাশে শুরু থেকেই দাড়িয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান। জেলার বিভিন্ন বস্তি ও গ্রাম অঞ্চলের অসহায়, অস্বচ্ছল, দিন এনে দিন খাওয়া, কর্মহীন, শ্রমিক, বেদে পরিবারদের খুঁজে খুঁজে বের করে ও ফোন পেয়ে অসহায়দের পর্যাক্রমে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছেন জেলা প্রশাসক।
করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী একটি মহামারি। করোনা নামক এই অদৃশ্য রোগে দুনিয়া কাপছে। শত কোটি মানুষ চরম দুর্যোগে। মানবতা ক্রমান্বয়ে প্রখর হচ্ছে। করোনা মোকাবেলায় যুদ্ধে নেমেছে পুরো বিশ্ব। এ যুদ্ধে পিছিয়ে পড়ছে কর্মজীবী মানুষ। বেকার আর অসহায়ের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। পিছিয়ে পড়া কর্মহীন মানুষ এবং তাদের পেটের আহার যোগাড় করতে সরকারী ও বেসরকারীভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই ঘোষনা দিয়েছেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আপনারা ঘরে অবস্থান করুন। নিজে বাঁচুন,পরিবার, সমাজ ও দেশকে বাচান। খাবারের জন্য একজন মানুষও না খেয়ে মারা যাবেনা। প্রতিটি মানুষের ঘরে খাবার পৌছে যাবে। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিককর্মী, ও প্রশাসন আপনাদের ঘরে খাবার পৌছে দিবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় ময়মনসিংহে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন ।
জেলা প্রশাসন জানায়, করোনায় সকল কারখানা, দোকানপাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান, যানবাহন বন্ধ থাকায় দিন দিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা খুজে বেড়াচ্ছে সমাজের নিম্নবিত্ত, শ্রমজীবি কর্মহীন, বেকার হয়ে পড়া, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের, খুজে খুজে বের করে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছেন।
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের মানবাধিকতার খবর জেলার সর্বস্তরে ব্যাপকভাবে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়ে উঠেছে।জেলা প্রশাসক তার ফেইসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে খবর পেয়ে তাদের ঘরে খাবার তুলে দিয়ে ক্রমেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন।
করোনার ভয়াবহতায় ক্রমেই অভাবগ্রস্থের সংখ্যা, প্রকার, শ্রেণী বাড়তে থাকায় মানবিক এই ডিসি খোজ খবর নিয়ে জানতে পারেন, অনেকেই প্রকাশ্য হাত পেতে চাইতে না পেরে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চরম সংকটে রয়েছে। ফোন নাম্বার দিয়ে হটলাইন চালু করেন। এই হটলাইনে খবর পেয়ে তাদের বাড়ি-বাড়ী খাবার পৌছে দিবে। শুরু হয় হটলাইনে খাদ্য সহায়তার অনুরোধ। জেলা প্রশাসক শুরু করেন খাদ্য পৌছানোর দায়িত্ব।
তারই ধারাবাহিকতায় ২৯শে এপ্রিল বুধবার ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ত্রাণের জন্য কল আসলে জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমানের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ হাফিজুর রহমান স্যারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সাথে সাথে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়। ত্রাণ বিতরণ করেন এসিল্যান্ড সদর ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম. সাজ্জাদুল হাসান।
জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের উদ্যোগে প্রতিদিন খাদ্য সহায়তা বিতরণ করছে প্রশাসন। সদর সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদুল হাসান জানান, হটলাইনের তালিকামতে, নির্দিষ্ট এলাকায় গিয়ে তাদের ডেকে ডেকে খাবার পৌছে দেয়া হচ্ছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রশাসন কে জনবান্ধব হিসাবে গড়তে আমরা দৃঢ়তার সাথে কাজ করছি। কেউ না খেয়ে থাকলে মানবিক কারনেই আমরা তার ঘরে খাবার পৌছে দিব। এ জন্য সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসারও আহবান জানান তিনি।