অারিফ রাব্বানীঃ
রিক্সা চালক শহীদুল ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহের সদর উপজেলার ভাবখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ভাবখালী কচুয়ারপাড় এলাকায়। ঘর তুলে থাকার মত নিজস্ব কোন জমি-জমা নেই। রিক্সা চালিয়ে যা রোজগার করেন, তাদিয়েই সংসার চালান তিনি।করোনা পরিস্থিতির চলমান লকডাউনে রিক্সা চালানো যায় না। রিক্সা নিয়ে বের হলেই আইনশৃঙ্খলা বাহীনী ও ভ্রাম্যমান অভিযানের হাতে ধরা খেলেই জরিমানা অথবা রিক্সার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া সহ বিভিন্ন আতঙ্ক। করোনায় ঘরে থাকতে গিয়ে সংসারে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। টেলিভিশন গুলোর সংবাদে শুধু বলা হয় সরকার ঘরে-ঘরে খাবার পৌছে দিচ্ছে। তবে তার ঘরে কোন চাল নেই। স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বাররের কাছে যোগাযোগ করলেও তার ভাগ্যে জুটেনি সরকারী ত্রাণ। করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে মাহে রমজানে সংসারের খরচের জন্য লকডাউনে এক সপ্তাহ রিক্সা চালিয়ে যা উপার্জন করেছেন ওই টাকা দিয়ে তিনি তার সংসারের জন্য অল্প পরিসরে খরচ করে জমাকৃত অর্থ দিয়ে এলাকায় গরীব-কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্যসহায়তা বিতরণ করেন । শুক্রবার সকালে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে স্থানীয় গরীবদের হাতে চাল,ডাল,সাবান,লবনসহ ওই খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন শহীদুল ইসলাম।
, নিজের সংসারে স্ত্রী-সন্তানদের চাহিদা পুরনে রিক্সা চালিয়ে টাকা জমিয়ে সে টাকা নিজের সংসারে কম খরচ করে, কম খেয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে এ টাকা দিয়ে তিনি অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে পেরে তার আনন্দ লাগছে বলেও এসময় রিক্সা চালক শহীদুল তার অনুভূতিতে জানান ।
শহীদুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি রিক্সা চালাইয়া দিন আনি-দিন খাই, গত কয়দিনে লকডাউনে রিক্সা চালাইয়া নিজের সংসারের জন্য কম খরচ কইরা পাঁচ হাজার টাকা জমাইছিলাম। ভাবলাম অহন অভাব,অনেক মানুষের ঘরে খাবার নাই,তাই নিজে কমাইয়া খাইয়া, আমার মত আরো যারা গরীব আছে তাদেরকে যদি একবেলা খাবার সহায়তা দিবো, অহন মানুষ কষ্ট করতাছে। তাই আমি জমানো টাকা দিয়া চাল,ডাল,সাবান,লবনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু খাদ্য সামগ্রী কিনে দিলাম, কিছু মানুষ হইলেও খাইয়া বাঁচুক।’
স্থানীয় ওয়াজেদ আলী জানান- সরকারি সহায়তার পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের আহবান জানানো হলেও আমরা যা করতে পারিনি শহীদ একজন রিক্সা চালক হয়ে রিক্সা চালানোর টাকা নিজে না খেয়ে তহবিল করে গরীব মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন।
এটি অসহায় মানুষের প্রতি মহানুভবতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সমাজের বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান,রিক্সাওয়ালা শহীদের মতো আপনারাও এ দুর্যোগের সময় অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারকে সহযোগিতার হাত বাঁড়িয়ে পাশে থাকুন।