মোঃআল-আমিন, টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
ভাওয়াল বীর শ্রমিক নেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টারের আজ (বৃহস্পতিবার) ১৬তম মৃত্যু বার্ষিকী। গাজীপুর ২ আসনের সাংসদ সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি।
২০০৪ সালের ৭ই মে টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে এক জনসভায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। আহসান উল্লাহ মাষ্টার ১৯৫০ সালে ৯ নভেম্বর গাজীপুরের বর্তমান পূবাইল থানাধীন হায়দ্রাবাদ গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তারই সুযোগ্য সন্তান জাহীদ আহ্সান রাসেল এম,পি বর্তমান সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছোট ভাই গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মতিউর রহমান মতি জানান, ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর মাস ব্যাপী ব্যপক অয়োজনের ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে সারাদেশে চলমান করোনা ভাইরাসের কারণে সকল প্রকার আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে।
তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হায়দ্রাবাদে মরহুমের মাজার প্রাঙ্গণে কোরানখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। করোনার কারণে মরহুমের মাজার প্রাঙ্গণে না এসে,ভাইয়ের জন্য ঘরে বসে দোয়া করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপির পুত্র যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল জানান, তার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টঙ্গী-গাজীপুর-২ আসনের সর্বত্র সকাল থেকে দিনব্যাপী দুস্থ-গরিব-দুঃখী ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তার প্যাকেট বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার পরিবারের মাঝে এ খাদ্যসামগ্রী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের মাধ্যমে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ৭ মে একদল সন্ত্রাসী নোয়াগাঁও স্কুল মাঠে জনসভা চলাকালে প্রকাশ্যে সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে। এই হত্যা মামলার রায়ে ২০০৫ সালের ১৬ মে ২২ জনের ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০১৬ সালের ১৫ জুন হাইকোর্ট ডিভিশন আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আবেদনের শুনানি শেষে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনকে খালাস দেয় আদালত। বিচার চলাকালে ২ আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদের আপিল নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত একজন পলাতক আসামির কোন আপিল না থাকায় তার পূর্বের রায়ই বহাল রাখা হয়।
তবে, বিচার প্রকৃয়ার দীর্ঘসূত্রীতার কারনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।তারা জানান,বিচার কার্য ধীরে গতীতে চলো নীতির কারনে আমরা স্যারের হত্যাকারীদের বিচারের রায় এখনও কার্যকর দেখতে পারিনি।আমাদের আবেদন যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকারীদের বিচারের রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হোক।
আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি টঙ্গী-গাজীপুর-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুইবার সংসদ সদস্য, ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দু’দফা পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। মরহুম আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সস্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।