আরিফ রববানীঃ
করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা,ঘরে থাকা কর্মহীন গরীব হত-দরিদ্র অসহায়দের মানুষদের খোজ খবর নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে নিজের আরাম আয়েশ ভূলে ঝুকি নিয়ে মানবতার কল্যাণ কাজ করছেন ত্রিশাল উপজেলার দুই সাহসী যুদ্ধা ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী কমিশনার ভূমি এসিল্যান্ড তরিকুল ইসলাম তুষাড়।
করোনা যুদ্ধে তাদের কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক আলোচনার স্থান পেয়েছে।
চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী অস্থিতিশীল অবস্থা, ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘোষিত লক ডাউনে সরকারের নির্দেশনায় মানুষ ঘরে থাকায় দেশের অর্থনীতিতে সংকটাপন্ন অবস্থার দেখা দিয়েছে। অদৃশ্য এক ভয়ানক জীবানু শক্তির ভয়ে ঘরমুখো হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্ববাসী। এ অবস্থায় টিকে থাকার স্বপ্নে সচেতন মহল সতর্কতায় অবস্থান করছে ঘরে, আবার আরেক মহল অসেচতনতা কে পূজি করে, সংক্রমণ কে ফাঁকি দিতে অবহেলায় অবস্থান করছে বাইরে, হাটছে চলছে। আর করেনা মোকাবেলায় সবচেয়ে বেশী দরকার জনসচেতনতা। জনগণকে সচেতন করতে পারলেই সম্ভব করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা। এ জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এই অবস্থার মোকাবেলা করতে কিছু নিয়ম-নীতি মানতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার ঘোসিত এসব নিয়মনীতি বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রশাসন।
ঘরে কিংবা বাইরে থাকা এই দুই শ্রেণীর দুটি উদ্দেশ্য থাকলেও করোনাকালীন এই দুর্যোগে এক শ্রেণীর মানুষেরা বাইরে থাকছে শুধু মাত্র মানুষের কল্যালের লক্ষে কিংবা মানব সভ্যতা টিকিয়ে রাখার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে, যারা হলো সম্মুখযোদ্ধা, যারা নিজের জীবনের থেকেও মূল্যবান করে দেখে আর্ত মানবতার সেবা।
তেমন মানুষদের দলেই জীবনকে ঝুঁকিতে রেখে করোনায় সম্মুখযোদ্ধা হয়ে কাজ করে যাচ্ছে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ও ত্রিশাল উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার তরিকুল ইসলাম তুষার । মাঠ পর্যায়ে যাদের উপস্থিতি যেনো জানান দেয় আমলাতান্ত্রিক ব্যাবস্থায় ত্রিশালবাসীর কাছে এই দুই মহৎপ্রাণ ব্যক্তিদের উপহার দিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশে করোনা আঘাতের প্রথমভাগ থেকেই সামাজিক দুরত্ব সৃষ্টি, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে গেছে ত্রিশালের ইউএনও ও এসিল্যান্ড, তারপর শুরু হলো অবস্থার অবনতি তখনো নিজেদের দায়িত্বে অনড় থেকে বের হয়েছেন প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে, করোনা সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বিলিয়ে দিয়ে কিংবা করোনা থেকে বেচে থাকায় সামাজিক দুরত্ব সৃষ্টিতে কাজ করেছেন একনিষ্ঠ ভাবে।
দেশের অবস্থার অবনতির সাথে সাথে তারা খুজে বেরিয়েছেন কর্মহীন, মধ্যবিত্ত, দুঃস্থ, অসহায়, দরিদ্র শ্রেণীকে, তাদের কাছে পৌছে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার, জুরুরি ত্রাণ সেবায় ফোন দিয়ে ত্রাণ চাওয়া পরিবারের কাছে ত্রাণ দিতে রাতের আধারে কখনো নিজেরা ছুটে গেছেন আবার কখনো ত্রিশালের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রিশাল হেল্পলাইন এর স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে পৌছে দিয়েছেন।
এছাড়াও করোনা মোকাবেলায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি ও তা মানুষের মাঝে ত্রিশাল হেল্পলাইনকে দিয়ে বিতরণ সহ জনসমাগম এড়াতে ও ত্রিশালের মানুষের নিশ্চয়তার জন্য নিয়মিত বিভিন্ন এলাকা ও বাজার মনিটরিং, বড় বাজার গুলোকে খোলা মাঠে স্থানান্তরেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
ত্রিশালের কর্মচঞ্চল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর উদ্যোগে ত্রিশাল গঠিত হয় করোনা প্রতিরোধে স্বেচ্ছাসেবক টিম, এই স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে মতবিনিময়, দায়িত্ব বন্টন সহ সার্বিক নির্দেশনা দিয়ে সুদক্ষ ও সুনিপুণ নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা সহকারী ভূমি অফিসার। সরকারী সাহায্য যেনো সঠিক মানুষের কাছে পৌছে যায় তার জন্য গঠিত সেচ্ছাসেবক দিয়ে যাচাই-বাছাই এর সুদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন এই দুই কর্মকর্তা।
সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন কিংবা দায়িত্ব পালনের বাইরেও কাছে থেকে দেখা ব্যক্তিদের কাছে ত্রিশালের এই দুই কর্মকর্তা যেনো ত্যাগী মানুষের এক জলজ্যান্ত উদাহরণ, সকাল থেকে রাত অবধী মানুষের কাছে ছুটে চলায় যেনো নেই তাদের ক্লান্তি, নেই কোন ভয়, অথচ যে কোন সময় তারাও সংক্রমিত হতে পারে, হতে আরে কোভিট-১৯ নামক বিষে আক্রান্ত তবুও তাদের মনে যেনো জাগেনি পিছুহটার বিন্দুমাত্র বাসনা, নিজেদের কিংবা নিজের পরিবারকে ঝুঁকিতে রেখেও তাদের এমন ত্যাগ কোন লৌকিকতা কিংবা স্বার্থহাসিলে নয় বরং দেশ জাতীর সেবায় নেয়া তাদের শপথের চাক্ষুস বাস্তবায়ন।