Header Image

টঙ্গীতে শিশু চাঁদনী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি র‌্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নীহত অস্ত্র উদ্ধার

 

মোঃআল-আমিন ,গাজীপুর প্রতিনিধিঃ

গাজীপুরের টঙ্গীতে শীশু চাঁদনী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি সিরিয়াল ধর্ষক সুফিয়ান র‌্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নীহত হয়েছে।বৃহস্পতিবার রাত ১০.৪৫ মিনিটে টঙ্গী মধুমিতা রেলক্রসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

র‌্যাবে-১ এর গাজীপুর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, টঙ্গীতে শীশু চাঁদনী ধর্ষণ ও হত্যার অন্যতম আসামি সুফিয়ান (২১) আটকের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জানায় সে মধুমিতাসহ আশপাশের এলাকায চুরি, ছিনতাই করে,পাশাপাশি সে একজন সিরিয়াল ধর্ষক।বৃহস্পতিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে জানায় তার হেফাজতে অস্ত্র রযেছে।তার দেয়া তথ্যঅনুযায়ী রাতেই তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে নামে র‌্যাবের একটি চৌকস টিম। মধুমিতা রেলক্রসিং এলাকায় এলাকায় পৌঁছানো মাত্রই সুফিয়ানের সহযোগীরা র‌্যাবেকে লক্ষ করে গুলি ছোঁড়ে।আত্নরক্ষার্থে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে আসামী সুফিয়ান পালানোর চেষ্টা করলে ক্রসফারে পড়ে আহত হয়।তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
ঘটনাস্থলে সার্চ করে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

উল্লেখ্য,গত ১৬ মে ২০২০ তারিখ গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মধুমিতা রেল গেইট এলাকার একটি ময়লার স্তুপ থেকে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন বেলতলা এলাকার ভাড়াটিয়া মোঃ মামুন মিয়ার মেয়ে মাদ্রাসার ছাত্রী চাঁদনী (০৭) এর লাশ উদ্ধার করা হয়।

ভিকটিম চাঁদনীকে ধর্ষণের পর গলা টিপে এবং দুই পায়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায়। মেয়েটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেনীতে লেখাপড়া করত। ঘটনার আগের দিন ১৫ মে ২০২০ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১৫০০ ঘটিকায় ভিকটিম চাদনী তার বাসা হইতে ১০০ গজ দূরে রেল লাইনের পাশে খেলার মাঠে খেলাধুলা করতে যায়। পরবর্তীতে বাসায় না ফিরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে এবং রাতে স্থানীয় মসজিদের মাইক দিয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরের দিন সকাল ১০০০ ঘটিকায় গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মধুমিতা রেল গেইট এলাকায় সজীবের ইটের স্তুপের পাশে থেকে ভিকটিম চাদনীর মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহের গলায় ও দুই পায়ে আঘাতের চিহৃসহ ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নম্বর-০৭ তারিখ ১৬/০৫/২০২০ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড।

উপরে বর্ণিত নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব-১ এর একটি গোয়েন্দা দল অতি দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায়, আজ ১৮ মে ২০২০ তারিখ রাত আনুমানিক ০২.৩০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন রেল স্টেশন এলাকা হতে বর্ণিত গণধর্ষণ ও হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী ১। মোঃ নিলয়(১৫), পিতা-মোঃ ওমর ফারুক, মাতা-আকলিমা বেগম, সাং-কুমড়ি, থানা-পাকুন্দিয়া, জেলা-কিশোরগঞ্জ, এ/পি-সাং-বেলতলা, মসজিদ রোড (কাউছার মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া), থানা-টঙ্গী পূর্ব, জিএমপি, গাজীপুর’কে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে একটি সংঘবদ্ধ অস্ত্রধারী চুরি, ছিনতাইকারী দলের অন্যতম সক্রিয় সদস্য। সে আরও জানায় যে, দীর্ঘ দিন যাবৎ সে এবং তার সহযোগীরা মিলে টঙ্গী রেল স্টেশন এবং তার আশপাশ এলাকায় নিয়মিত চুরি ছিনতাই সংঘঠিত করে আসছিল। আটককৃত আসামী নিলয় এর পরিবার এবং ভিকটিম চাদনীর পরিবার একই ভবনে ভাড়া থাকত, সেই সুবাদে আসামী নিলয় এবং ভিকটিম চাদনী পূর্ব পরিচিত।

ঘটনার দিন গত ১৫ মে ২০২০ তারিখ বিকাল ০৩ টা দিকে ভিকটিম চাদনী খেলার মাঠে খেলাধুলা করতে আসলে ধৃত আসামী নিলয়(১৫) এবং এই ঘটনার অন্যতম হোতা তার পলাতক সহযোগী মিলে ভিকটিম চাঁদনী কে চোখে চোখে রাখে এবং খেলাধুলা চলাকালীন নিলয় তাকে কৃষ্ণচূড়া গাছ থেকে ফুল পেড়ে দেয়।

ভিকটিম চাদনী বাসায় ফিরার পথে বৃষ্টি হওয়ায় আশে পাশে লোক সমাগম কম থাকায় ধৃত আসামী নিলয় ও তার সহযোগী পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে লোক চক্ষুর আড়ালে নিহত চাদনীকে চকলেট কিনে দেওয়ার নাম করে মিথ্যা কথা বলে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী টঙ্গীস্থ মধুমিতা রেল গেইট এলাকায় সজীবের ইটের স্তুপের আড়ালে নিয়ে যায়। এর পর প্রথমে ধৃত আসামী নিলয় ভিকটিমের দুই হাত মুখ চেপে ধরে রাখে এবং তার সহযোগী শিশু চাদনীকে ধর্ষণ করে। এভাবে তারা দুই জনই ভিকটিমকে জোড়পূর্বক পালাক্রমে একাধিক বার গণধর্ষণ করে।

পরবর্তীতে ভিকটিম চাদনী কান্নাকাটি করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং ধর্ষণকারীরা ভাবে ভিকটিম বাড়ীতে গিয়ে সবাইকে সবকিছু বলে দিবে। এসময় পলাতক ধর্ষক, ভিকটিম চাদনীর গলা টিপে ধরে এবং নিলয় ভিকটিমের দুই পায়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে তারা ভিকটিম চাদনীর মরদেহ ময়লার স্তুপে ফেলে রেখে সেখান হতে দ্রুত পালিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!