শামীম আজাদ আনোয়ার :
কবি কাজী নজরুল ইসলামের উল্লেখযোগ্য গল্প গ্রন্থের মধ্যে শিউলীমালা অন্যতম। এ গ্রন্থের অগ্নিগিরি গল্পটি সরাসরি ত্রিশালের পটভূমির উপর রচিত। এ গল্পের স্থান, কাল, পাত্রপাত্রী, ভাষাসহ সবই ত্রিশাল কেন্দ্রিক। এ গল্পে ত্রিশাল, বীররামপুর গ্রাম, ত্রিশাল মাদ্রাসা, নুরজাহান, রুস্তম, ময়মনসিংহ হাসপাতাল, ত্রিশাল থানাসহ ত্রিশালের আঞ্চলিক ভাষার শব্দ ও স্থানের নাম উল্লেখ রয়েছে প্রায় পুরো গল্প জুড়েই।
অগ্নিগিরি গল্পের নায়ক সবুর আখন্দ ত্রিশাল মাদ্রাসার ছাত্র। সবুর আখন্দ সম্পর্কে কবি নজরুল তার গল্পে লিখেছেন,এরই (আলি নসিব মিঞা) বাড়ীতে থেকে ত্রিশালের মাদ্রাসায় পড়ে সবুর আখন্দ। নামেও সবুর, কাজেও সবুর। শান্তশিষ্ট গো বেচারা মানুষটি। উনিশ-কুড়ির বেশী বয়স হবে না। গরীব- শরীফ ঘরের ছেলে দেখে আলি নসিব মিঞা তাকে বাড়ীতে রেখে তার পড়ার সমস্ত খরচ যোগান। ছেলেটি অতি মাত্রায় বিনয়াবনত। যাকে বলে- সাত চড়ে রা বেরোয় না। তার হাব- ভাব যেন সর্বদাই বলছে- আই হ্যাভ দা অনার টু বি সার ইওর মোষ্ট ওবিডিয়েন্ট সারভেন্ট।
এ গল্পের নায়িকা নুরজাহান আলি নসিব মিঞার একমাত্র কন্যা। সবুর আখন্দ এ বাড়ীতে লজিং থেকে ত্রিশাল মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে আর নুরজাহানকে উর্দু ও ফার্সী পড়ায়। নুরজাহান ছিলেন সৎ, মেধাবী ও অপূর্ব সুন্দরী। সব সময় সৎ পথে চলত আর সত্য কথা ও উচিত কথা বলত। নজরুল নুরজাহানের রূপ ও অন্যান্য বিষয়ে অগ্নিগিরি গল্পে সরাসরি বর্ণনা করেছেন,
সবুর যতক্ষন পর্যন্ত নুরজাহানকে পড়ায় ততক্ষন একভাবে ঘাড় হেট করে বসে থাকে, একটিবারও নুরজাহানের মুখের দিকে তাকায় না। সত্য সত্যই, এই তিন বছর সবুর এই বাড়ীতে আছে এর মধ্যে সে এক দিনের জন্যও নুরজাহানের হাত পা ছাড়া মুখ দেখেনি। এ নুরজাহান জাহানের জ্যোতি না হলেও বীররামপুরের জ্যোতি, জোহরা, সেতারা এ সম্মন্ধে কারও মত দ্বৈধ নাই। নুরজাহানের নিজেরও যথেষ্ট গর্ব আছে মনে মনে তার রুপের সম্মন্ধে। দুঃখ হয় এই ভেবে যে, তার রূপের কি তাহলে কোন আকর্ষণই নেই? আজ তিন বছর হল সে সবুরের কাছে পড়ছে এত কাছে তবুও সে একদিন মুখ তুলে তাকে দেখলনা? সবুর তাকে ভালবাসুক এমন কথা সে ভাবতেই পারে না। কিন্তু ভাল না বাসলেও যার রূপের খ্যাতি এ অঞ্চলে, যাকে একটু দেখতে পেলে অন্য যে কোন যুবক জন্মের জন্য ধন্য হয়ে যায় তাকে একটি বার একটু ক্ষনের জন্যেও চেয়ে দেখল না। তার সতীত্ব কি নারীর সতীত্বের চেয়েও ঠুনকো?
নুরজাহান সবুরকে ভালবাসত মন প্রাণ উজার করে তবে নিরবে একই অবস্থা সবুরেও। কিন্তু কোন দিন কেউ প্রকাশ করেনি কেউ কাউকে যে ভালবাসে। কবি নজরুল ‘সবুর নুরজাহান’ এর অমর প্রেমের কাহিনীটি এমনভাবে অংকন করেছেন যে তাদের ভাললাগা-ভালবাসার কথাটি উপস্থাপিত হওয়ার আগেই কোমল প্রেমের বিচ্ছেদ ঘটে,
নুরজাহান সব সময় সবুরের সেবা যত্ন করত। পাড়ার দুষ্টু ছেলেরা সবুরকে জ্বালাতন করলে নুরজাহান কষ্ট পেতেন আর তার আব্বা আলি নসিব মিঞাকে দিয়ে দুষ্ট ছেলেদের শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থাও করেছেন। একদিন নুরজাহান সবুরকে বললেন যে, পাড়ার দুষ্টের শিরোমনি রুস্তম ও তার সঙ্গীরা যখন সবুরকে জ্বালাতন করে তখন সে যেন কঠিন প্রতিবাদ করে এবং প্রতিরোধ করে কারন নুরজাহান সবুরকে যে অন্তরের গভীর থেকে ভালবাসে। অন্যরা সবুরকে জ্বালাতন করলে নুরজাহান ভীষন কষ্ট পায়। সবুরের এ সকল কষ্টের জন্য নুরজাহান কয়েকবার কেঁদেছে যা তার কোমল নারী প্রেমের বহিঃপ্রকাশ। নুরজাহান সবুরকে সারাজীবনের সাথী অমরসঙ্গী হিসেবে পেতে চেয়েছিল কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে কোন এক দুর্ঘটনায় তার প্রেম ভালবাসাকে স্বচ্ছ কাঁচের মত খান খান করে ভেঙ্গে দিয়েছিল। ঘটনা চক্রে একদিন রুস্তমের সংগী আমির ছুরির আঘাতে প্রাণ হারালো আর ময়মনসিংহ কোর্টের হাকিম সবুরকে সাত বছরের কারাবাস ঘোষনা দিল। তখন ভেঙ্গে পড়ল নুরজাহান তার বাবা আলি নসিব মিঞা আর মা।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম অগ্নিগিরি গল্পের সমাপ্তি টানতে গিয়ে লিখেছেন,
তার পরদিন সকলে জেলে গিয়ে সবুরের সাথে দেখা করলেন। সবুর সব শুনল, তার চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়ল। জেলের জামার হাতায় তা মুছে বললে, আব্বা, আম্মা আমি সাত বছর পর যাইবাম আপনাদের কাছে কথা দিতাছি? তারপর নুরজাহানের দিকে ফিরে বললে, আল্লাহ যদি এই দুনিয়ায় দেখবার না দেয়, যে দুনিয়াতেই তুমি যাও আমি খুইজ্যা লইবাম। অশ্রুতে কণ্ঠ নিরুদ্ধ হয়ে গেল, আর সে বলতে পারলনা। নুরজাহান কাঁদতে কাঁদতে সবুরের পায়ের ধুলা নিতে গিয়ে তা দুফোটা অশ্রু সবুরের পায়ে গড়িয়ে পড়ল। বলল, তাই দোওয়া কর। কারাগারের দুয়ার ভীষন শব্দে বন্ধ হয়ে গেল-সেই দিকে তাকিয়ে নুরজাহানের মনে হল তার সকল সুখের স্বর্গের দ্বার বুঝিবা চির দিনের জন্যই রুদ্ধ হয়ে গেল।
শহীদ মুনির চৌধুরী তার এক প্রবন্ধে লিখেছেন, নজরুল অতীতকে স্মরন করেছেন বর্তমানকে পুন নির্মানের হাতিয়ার রূপে।
কবি নজরুল শিউলী মালা অমর গল্পগ্রন্থের অগ্নিগিরি গল্পে দুটি অবুজ সহজ সরল মনের গভীর প্রেমের কথা, ত্রিশালের আঞ্চলিক ভাষায় ও শব্দের নিখুত টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে লিপিবদ্ধ করেছেন। যা পড়ে মনে হয় নজরুল তার জীবনের একটি অংশ এ গল্পে লিপিবদ্ধ করেছেন অত্যন্ত কৌশলে ও আন্তরিকতার সাথে। নজরুলের বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া একটি প্রেম উপখ্যানের ছায়াতেই রচিত হয়েছে অগ্নিগিরি গল্প। বাল্য, কৈশোর, শৈশব জীবনের একটি সময় নজরুল কাটিয়েছেন ত্রিশালের দরিরামপুর হাই স্কুলে লেখাপড়া করে।
নজরুলের সহপাঠী ঘনিষ্ঠ বন্ধু মুজফ্ফর আহমদ তার কাজী নজরুল ইসলাম: স্মৃতিকথা বিখ্যাত গ্রন্থে লিখেছেন,
নজরুল ইসলাম নিজে আমাদের কাছে তিনটি হাই স্কুলে পড়ার কথা বলেছে। ময়মনসিংহ জিলার দরিরামপুর হাই স্কুলে, বর্ধমান জিলার মাথরুন হাই স্কুলে এবং রানীগঞ্জের শিয়ারশোল রাজ হাই স্কুলে।
প্রখ্যাত লেখক আঃ কাদের তার নজরুল প্রতিভার স্বরূপ গ্রন্থে লিখেছেন,
নজরুলের মুখেই প্রথম শুনেছিলাম যে তিনি কিশোর বয়সে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার অন্তর্গত কাজীর শিমলা গ্রামে এসে দরিরামপুর হাইস্কুলে কিছুদিন লেখাপড়া করেছিলেন। রাঢ় অঞ্চলে তার জন্ম এবং বাংলাদেশে এই তার প্রথম অবস্থান। এ গবেষনামূলক গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছিলেন সাহাবুদ্দিন আহমদ।
প্রখ্যাত নজরুল গবেষক ডঃ সুনীল কুমার গুপ্ত নজরুল চরিত মানস গ্রন্থে শিউলী মালা গ্রন্থের অগ্নিগিরি গল্পের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে,
নজরুল রোজ হেঁটে স্কুলে যেতেন। গ্রামের দুষ্ট ছেলেরা তাকে খুবই জ্বালাতন করত। তাদের দুষ্ট স্বভাবের বর্ণনা পাওয়া যায় নজরুলের শিউলী মালা গ্রন্থের অগ্নিগিরি গল্পে। ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে বাৎসরিক পরীক্ষার ঠিক পরেই তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে ময়মনসিংহ ত্যাগ করেন।
নজরুল গবেষক ডঃ আলী নওয়াজ তার ময়মনসিংহে বালক নজরুল প্রবন্ধে লিখেছেন,
নজরুল ইসলামের অগ্নিগিরি গল্পে কবির ময়মনসিংহের পাঠ্যবস্থার প্রচ্ছন্ন চিত্র আছে বলে অনেকে মনে করেন। সে গল্পে আছে একটি বিদেশী যুবক একটি ধনী বাড়ীতে জায়গীর থেকে পড়াশুনা করে এবং গৃহকর্তার কন্যাকে পড়ায়। গ্রামের দুষ্ট ছেলেরা বিদেশী যুবকটিকে প্রায়ই ঠাট্রা বিদ্রুপ করতো বলে তার ছাত্রীটি দুষ্টদের বিরুদ্ধে সাপিনীর মত রুষ্ট্রা হয়ে উঠতো। সম্ভবত কবি নিজেই ঐ গল্পটির সে প্রবাসী যুবক ও উপরোক্ত মহিলাটিই তার ছাত্রী।
এখানকার গ্রামের ছেলেরা যে সত্যি কবিকে বিদ্রুপ করতো, সে প্রমানও পাওয়া যায় শিউলী মালা গ্রন্থের অগ্নিগিরি গল্পে প্রমান মিলেছে কবি নজরুলের বাল্য কৈশোর শৈশব জীবনের বাস্তব চিত্র। এ গল্পের নায়ক ত্রিশাল মাদ্রাসার ছাত্র সবুর আখন্দের চরিত্রের সাথে ত্রিশালে নজরুল জীবনের যথেষ্ট মিল রয়েছে। কবি নজরুল দরিরামপুর স্কুলে পড়াশুনা করার সময় ত্রিশাল নামাপাড়া গ্রামের বিচ্যুতিয়া বেপারীর বাড়ীতে লজিং থাকতেন।
বর্ষা মৌসুমে বিচ্যুতিয়া বেপারীর বাড়ী থেকে স্কুলে আসা যাওয়া খুবই সমস্যা দেখে নজরুলের প্রিয় শিক্ষক নওপাড়া গ্রামের খিদ্দির উদ্দিন খান পন্ডিত নজরুলকে অস্থায়ীভাবে ত্রিশাল থানার বীররামপুর গ্রামের তার শশুর বাড়ীতে লজিং এর ব্যবস্থা করে দেন। নজরুল পুরো বর্ষাকাল ধরে বীররামপুরের লজিং বাড়ী থেকে স্কুলে আসতেন। নজরুলের প্রিয় শিক্ষক খিদ্দির উদ্দিন খান পন্ডিতের শশুরের নাম ছিল মেহের আলী সরকার।
নজরুল অগ্নিগিরি গল্পে মেহের আলী সরকারকে অলি নসিব মিঞা চরিত্রে রূপায়ন করেছেন। খিদির উদ্দিন খানের শালিকা নুরজাহানকে নজরুল পড়াতেন।অগ্নিগিরি গল্পে নজরুল উপস্থাপন করেছেন ত্রিশাল মাদ্রাসার ছাত্র সবুর আখন্দ নুরজাহানকে পড়াতেন। বাস্তবে ও গল্পে নায়িকার নাম নুরজাহান অপরিবর্তিত রয়েছে।
গল্পের নায়িকা খিদির উদ্দিন পন্ডিতের শালিকা নুরজাহান ছিলেন তন্নী, তরুনী, অপরূপা সুন্দরী বালিকা। অগ্নিগিরি গল্পের মত বাস্তবেও নজরুল নুরজাহানকে পড়াতেন আর তা হতে নজরুল নুরজাহানের মাঝে সৃষ্টি হয় গভীর স্বর্গীয় প্রেমের। অপরূপা সুন্দরী, নানা গুনে গুনবতী নুরজাহানের প্রেমে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন নজরুল। সে সময় নজরুলের হৃদয়ে প্রতিনিয়ত আকর্ষণ করতে থাকে নুরজাহানের সোহাগ মাখা কথা, দরুদী আকর্ষন। নুরজাহানকে নিয়েই কবি নজরুলের নারী প্রেমের এ প্রথম ধারনা ও অভিজ্ঞতা। নুরজাহানের প্রেম, সেবা, গুন, সৌন্দর্য সব মিলিয়েই নজরুল স্বর্গীয় জগতে দিবানিশী যাপন করত। অগ্নিগিরি গল্পের নায়ক সবুর আখন্দ সে সময়ে নামাজ পড়ে, কোরান পড়ে, লেখাপড়া করে আর ঘুমায়ে সময় পার করে দিতেন।
এ সম্পর্কে অগ্নিগিরি গল্পে নজরুল উপস্থাপন করেছেন,
এই তিন বছর সে এই বাড়ীতে আছে, কিন্তু কেউ জিজ্ঞাসা না করলে সে অন্য লোক তো দুরের কথা বাড়ীর কারুর সাথে কথা কয়নি। নামাজ পড়ে, কোরান তেলাওয়াত করে, মাদ্রাসায় যায়, আসে, পড়ে কিংবা ঘুমোয় এই তার কাজ। কোনদিন যদি ভুলক্রমে ভিতর থেকে খাবার না আসে, সে না খেয়েই মাদ্রাসায় চলে যায়-চেয়ে খায় না। পেট না ভরলেও দ্বিতীয়বার খাবার চেয়ে নেয় না। তেষ্টা পেলে পুকুর ঘাটে গিয়ে জল খেয়ে আসে, বাড়ীর লোকের কাছে চায় না। সবুর এত অসহায় বলেই নুরজাহানের অন্তরের সমস্ত মমতা, সমস্ত করুনা ওকে সদা সর্বদা ঘিরে থাকে। সে না থাকলে, বোধ হয় সবুরের খাওয়াই হত না সময়ে।
কবি নজরুলের অগ্নিগিরি গল্পের প্রচ্ছন্ন নায়িকা নুরজাহান নজরুলের ব্যক্তি জীবনে রেখাপাত করেছিল। বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর নজরুল তার প্রেমিকা নুরজাহানের বাড়ী থেকে বিদায় নিয়ে পূর্বের লজিং বাড়ী বিচ্যুতিয়া বেপারীরর বাড়ী চলে যান। এ চলে আসাতে কিশোর কবির হৃদয় ব্যথাতুর হয়ে পড়ে। এ সময় নজরুল স্কুলে ঠিকমত যায় না, ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করে না এবং সব সময় চিন্তিত থাকে। এ সব দেখে বিচ্যুতিয়া বেপারী একদিন নজরুলকে জিজ্ঞেস করেন কারন কি? নজরুল উত্তর দেয়, কয়দিন আগে নাকি স্বপ্নে নজরুল তার মাকে দেখেছেন এরপর থেকেই মন খারাপ।
আর এ সুত্র ধরেই কয়েকদিন পর নজরুল কাউকে কিছু না বলে, কাউকে কিছু না জানিয়ে কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে নিরবে চলে গেলেন ত্রিশাল ছেড়ে অজানা উদ্দেশ্যে। এর পরে নজরুল জীবিত বা সুস্থ্য অবস্থায় আর কোনদিন ত্রিশালে আসে নি।
নজরুলের বিভিন্ন রচনাবলীতে ত্রিশালের কথা বা আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করেছেন। ত্রিশালের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিগনের সাথে পরবর্তী সময়ে কথা বলেছেন, আলোচনা করেছেন বা একসাথে কাজ করেছেন, এর মধ্যে আবুল মনসুর আহমদ ও আবুল কালাম শামসুদ্দিন অন্যতম।
কবি নজরুলের অগ্নিগিরি গল্পের নায়িকা নুরজাহান বা বাস্তবে কবি নজরুলের প্রেয়সী বীররামপুর গ্রামের নুরজাহান বর্তমানে জীবিত নেই। নজরুল ত্রিশাল থেকে চলে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন নুরজাহান নজরুলের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন বলে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে ত্রিশাল থানার বাদামিয়া গ্রামে তার বিয়ে হয়েছিল।
নজরুলের বিরহ বেদনা বিষয়ক রচনাবলীর উৎপত্তি ছিল যে কয়টি কারনে তার মধ্যে নজরুলের ত্রিশাল জীবনের এক অধ্যায় নিয়ে রচিত শিউলী মালা গ্রন্থের অগ্নিগিরি গল্পের নায়িকা সবুর আখন্দের নুরজাহান ও নজরুলের প্রিয় শিক্ষক খিদ্দির উদ্দিন পন্ডিতের শালিকা নূরজাহানের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদই অন্যতম বলে অনেকে মনে করেন।
কবি নজরুলের অগ্নিগিরি গল্পের নায়ক সবুর আখন্দ আকস্মিক যেভাবে তার মনের মানুষ তার ভালবাসার মানুষকে হারিয়েছেন বা দুরে চলে গেছেন ঠিক তেমনি ভাবে নজরুল বাস্তবেও তার মনের মানুষকে হারিয়ে কাউকে কিছু না বলে অজানা উদ্দেশ্যে হারিয়ে গিয়েছিলেন। কবি নজরুল পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ সুস্থ ও জীবিত অবস্থায় বাংলাদেশের প্রায় সকল এলাকা ভ্রমন করেছেন ব্যক্তিগত কাজে বা নির্বাচনী কাজে কিন্তু আর কোনদিন ত্রিশালে আসেন নাই। কি কারনে আর কোন সময় ত্রিশালে আসেন নাই তা আমাদের অজানা। নজরুল-নুরজাহান সম্পর্কে কি রহস্য রয়েছে তা আজও কারও জানা নেই বা কেউ বলতে পারে না।
সবুর আখন্দ আর নুরজাহানের গোপন প্রণয় সম্পর্কে এলাকাবাসীর ধারণা বা মন্তব্য কবি নজরুল অগ্নিগিরি গল্পের এক স্থানে উপস্থাপন করেছেন, আমীরকে বাচাঁনো গেল না মৃত্যুর হাত থেকে, সবুরকে বাচাঁনো গেল না জেলের হাত থেকে। ময়মনসিংহের হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই তার মৃত্যু হল। আমীরের পিতা কিছুতেই মিটমাট করতে রাজী হলেন না। তিনি এই বলে নালিশ করলেন যে, তার ইচ্ছা ছিল নুরজাহানের সাথে আমীরের বিয়ে দেন, আর তা জানতে পেরেই সবুর তাকে হত্যা করেছে। তার কারন সবুরের সাথে নুরজাহানের গুপ্ত প্রণয় রয়েছে। প্রমান স্বরূপ তিনি বহু স্বাক্ষী নিয়ে এলেন- যারা ঐ দুর্ঘটনার দিন নুরজাহানকে সবুরের পা ধরে কাঁদতে দেখেছে। তা সবুর পড়াবার নাম করে নুরজাহানের সাথে মিলবার যথেষ্ট সুযোগ পেত। নুরজাহান আর আলি নসিব মিঞা একেবারে মাটির সাথে মিশে গেল। দেশে টিটি পড়ে গেল। অধিকাংশ লোকেই এ কথা বিশ্বাস করল। নুরজাহানের অনুরোধে সে বলেছিল অনেক ক্ষতিই তোমাদের করে গেলাম-তার উপরে তোমাদের আরো আর্থিক ক্ষতি করে আমার বুঝা ভারী করে তুলতে চাইনে। আমায় ক্ষমা করো নুরজাহান, আমি তোমাদের আমার কথা ভুলতে দিতে চাইনে বলেই এই দয়াটুকু চাই।
ময়মনসিংহ হাসপাতালে আমীর মারা যাওয়ার পর নুরজাহানের বাবা আলি নসিব মিঞা টাকা পয়সা খরচ করে ভালো ভালো উকিল রেখে সবুরকে আইনগত ভাবে মুক্ত করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সবুর রাজী হল না। অবশেষে উকিল ছাড়াই সবুর হাকিমের সামনে নিজের সত্য কথাগুলো অকপটে বলার পর হাকিম তার সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিলেন। সবাই আপিল করতে বললে সবুর আখন্দ বলল, না। আপিলের প্রয়োজন নাই।
কবি নজরুল ইসলামের অমর গল্প গ্রন্থ শিউলী মালার অগ্নিগিরি গল্পের স্থান কাল পাত্র পাত্রী কাহিনী ও সমসাময়িক প্রাসঙ্গিকতা সব কিছুই বাস্তবের সাথে মিল আছে ২/৩টি বিষয় বাদে। যেমন গল্পের নায়িকার নাম নুরজাহান, আর বাস্তবেও নুরজাহান। গল্পে নায়ক সবুর আখন্দ আর বাস্তবে কবি নিজেই। গল্পে যে হত্যাকান্ডের ঘটনা আছে তা বাস্তবে নেই। দুষ্টের সর্দার রুস্তম গল্পেও আছে বাস্তবেও রুস্তম-ই ছিল। গল্পে নুরজাহানের বাড়ী ত্রিশাল থানার দরিরামপুরের পূর্ব পাশের গ্রাম বীররামপুর আর বাস্তবেও তাই। গল্পে যে প্রেম ভালবাসার বিবরণ পাওয়া গেছে বাস্তবেও সে রকম বিবরণ রয়েছে। ত্রিশাল এলাকা পাট উৎপাদনের জন্য অনেক পূর্ব থেকেই বাংলাদেশে প্রসিদ্ধ ছিল গল্পের মধ্যেও সবুরের লজিং মাস্টারকে ত্রিশালের বড় পাটের ব্যবসায়ী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ গল্পের ত্রিশাল মাদ্রাসা আর বাস্তবের দরিরামপুর হাই স্কুলের অবস্থান পাশাপাশি একই স্থানে। গল্পের সবুরের লজিং মাস্টার বীররামপুর এলাকার প্রতাপশালী, প্রভাবশালী ও ধনী লোক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে আর বাস্তবে কবি নজরুল বর্ষাকালে বীররামপুর গ্রামের যে বাড়ীতে লজিং থাকতেন তিনি মেহের আলী সরকারও খুব প্রতাপশালী, প্রভাবশালী ও ধনী ব্যক্তি ছিলেন। এ গল্পের এক অনুচ্ছেদে যে পশ্চিমা মৌলুভী সাহেবের ওয়াজ মাহফিলের বর্ণনা রয়েছে বাস্তবেও নজরুলের ত্রিশাল জীবনে ও রকম একটা ঘটনা ঘটেছিল।
গল্পে রুস্তম সবুরকে খুব জ্বালাতন করার বিবরন রয়েছে আর বাস্তবেও রুস্তম নজরুলকে খুব জ্বালাতন করত। অগ্নিগিরি গল্পটির প্রায় পুরোপুরিই ত্রিশালে নজরুলের বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে রচিত এতে সন্দেহ করার মত আর কিছু নেই। অগ্নিগিরি গল্প বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা ও গবেষনা করলে পাওয়া যায় যে এ গল্পটি সম্পূর্ণ ত্রিশালের বীররামপুর গ্রামের নজরুল জীবনের ছায়া মাত্র। যা নজরুল-নুরজাহানের স্বর্গীয় প্রেমের বাস্তবতার রূপায়ন মাত্র।
নুরজাহান সবুরকে নিরবে গভীরভাবে ভালবাসত। সবুরও নুরজাহানকে আরো বেশী ভালবাসত। সবুরকে কেউ কিছু কটু কথা বললে, কেউ ক্ষেপালে বা জ্বালাতন করলে নুরজাহান এসবের প্রতিবাদ করতো এবং প্রতিবোধও করত নিজে অথবা তার বাবা আলি নসিবের মাধ্যমে।
অগ্নিগিরি গল্পে কবি নজরুল এমনি এক পবিত্র প্রেমের কাহিনী উপস্থাপন করেছেন যা গল্প আকারে লেখা হলেও তা বাস্তবে অনেকটাই ঘটেছিল। গল্পের ভাষা, বক্তব্য ও ঘটনাই প্রমান করে যে, ত্রিশাল মাদ্রাসার ছাত্র সবুর আখন্দই দরিরামপুর হাই স্কুলের ছাত্র কাজী নজরুল ইসলাম।
নজরুলের অগ্নিগিরি গল্পে আরেকটি বিষয় বেরিয়ে এসেছে তা হল টাকার বিনিময়ে বা ঘুষের বিনিময়ে দোষী হলেও আইনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে এমনি একটি বিষয় নজরুল তার গল্পে ফুটিয়ে তুলেছেন। অগ্নিগিরি গল্পে নজরুল বলেছেন,
নুরজাহানের মা সবুরকে তার গুনের জন্য ছেলের মতই মনে করতেন। তা ছাড়া তার পুত্র না হওয়ায় পুত্রের প্রতি সঞ্চিত সমস্ত স্নেহ গোপনে সবুরকে ঢেলে দিয়েছিলেন। তিনি সবুরের মাথাটা বুকের উপর চেপে ধরে কেঁদে আলি নসিব মিঞাকে বললেন-আমার পোলা এ আমি দশ হাজার টেহা দিবাম, দারোগা বেডারে কন, হে এরে ছ্যাইরা দিয়া যাক।
উপরের বক্তব্য এটাই প্রমান করে নুরজাহানের মা দশ হাজার টাকার বিনিময়ে সবুরকে পুলিশের হাত থেকে বাচানোর চেষ্টা করেছেন। আর এটাও প্রমাণিত হয় নুরজাহানের মায়ের ছেলে সন্তান না থাকায় তিনি সবুরকে নিজের ছেলের আসনে বসিয়েছিলেন এবং পুলিশের হাত থেকে রক্ষার জন্য তৎকালীন দশ হাজার টাকা বিনিময়ে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করেছিলেন। যা আজকের দিনে অনেক টাকা। ঘুষ, দুর্নীতি স্বজন প্রীতি, অন্যায় অবিচার নির্যাতন সেই আদিকাল থেকে চলে আসছে বাংলার প্রতিটি জনপদে প্রতিটি প্রান্তরে।
কবি নজরুল অগ্নিগিরি গল্পের এক স্থানে সবুর ও নুরজাহানের কথপোকথন এভাবে উপস্থাপন করছেন,
সেই দিন যখন পড়াতে গেল সবুর, তখন কোন ভূমিকা না করে নুরজাহান বলে উঠল আপনি বেডা না? আপনারে লইয়া ইবলিশ পোলাপান যা তা কইব হুইন্যা ল্যাজ গুডাইয়া চইলা আইবেন? আল্লাহ আপনার হাত মুখ দিছে না? সবুর আজ যেন ভুলেই তার ব্যথিত চোখ দুটি নুরজাহানের মুখের উপর তুলে ধরল! কিন্তু চুখ তুলে যে রূপ সে দেখলো, তাতে তার ব্যাথা লজ্জা, অপমান, ভুলে গেল সে। দুই চোখে তার অসীম বিস্ময় অনন্ত জিজ্ঞাসা ফুটে উঠল এই তুমি। সহসা তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ল নুরজাহান। নুরজাহানও বিষ্ময় বিমুঢ়ার মত তার চোখের দিকে চেয়ে ছিল। এ কোন বনের ভীরু হরিণ? অমন হরিণ-চোখ যার সে কি ভিরু না হয়ে পারে? মানুষের চোখ যে মানুষকে এত সুন্দর করে তুলতে পারে তা আজ সে প্রথম দেখল। সবুরের মুখে তার নাম শুনে লজ্জায় তার মুখ লাল হয়ে উঠল। চাঁদকে যেন ইন্দ্রধনুর শোভা ঘিরে ফেলল। আজ চিরদিনের শান্ত সবুর চঞ্চল মুখর হয়ে উঠেছে। প্রশান্ত মহাসাগরে ঝড় উঠেছে। মৌনী পাহাড় কথা কয় না, কিন্তু সে যেদিন কথা কয়, সেদিন সে হয়ে উঠে অগ্নিগিরি। সবুরের চোখে মুখে পৌরুষের প্রখর দীপ্তি ফুটে উঠল। সে নুরজাহানের চোখের দিকে চেয়ে বলে উঠল, ঐ পোলাপানের যদি জওয়াব দিই, তুমি খুশী হও? নুরজাহানও চক চকে চোখ তুলে বলে উঠল কে জওয়াব দিবে? আপনি?
বাস্তব জীবনে নজরুল ইসলাম নুরজাহানদের বাড়ী ছেড়ে পুনরায় যখন বিচ্যুতিয়া বেপারীর বাড়ীতে ফিরে আসেন তখন নজরুলের খুব কষ্ট হয়েছিল। নজরুল নুরজাহানকে ছেড়ে আসতে চায়নি। নজরুল ত্রিশাল নামাপাড়া চলে এলেও তা উতালা মনটা পড়েছিল নুরজাহানের মন মঞ্জিলে।
নজরুলের প্রিয় শিক্ষক খিদির উদ্দিন পন্ডিতের দুই ছেলে বড় ছেলে মিসবাহ উদ্দিন খান আর ছোট ছেলে মোসলেম উদ্দিন খান মিনু মাস্টার। ছেলেরা মারা গেছেন। জীবিত অবস্থায় ছোট ছেলে মোসলেম উদ্দিন খানের সাথে আলাপ করে জানা গেছে নুরজাহান তার সম্পর্কে খালা। তার নানা ছিলেন নুরজাহানের পিতা মেহের আলী সরকার।
মোসলেম উদ্দিন খান বলেছেন তার বাবা খিদির উদ্দিন পন্ডিতের পরবর্তী সময়ে কবি নজরুলের সাথে ময়মনসিংহ শহরে দেখা হয়েছিল। কবি নজরুল ময়মনসিংহে রাজনৈতিক জনসভায় এসেছিলেন। আর খিদির উদ্দিন পন্ডিত জুরির সদস্য ছিলেন। ঐ স্বাক্ষাতের সময় নজরুল তার প্রিয় শিক্ষক খিদির উদ্দিন পন্ডিতকে তার লেখা চারটি বই উপহার দিয়েছিলেন। বইগুলি হল, অগ্নিবীনা, দুর্দিনের যাত্রী, ব্যাথার দান, রিক্তের বেদন। শুধু প্রথম গ্রন্থ অগ্নিবীনায় নজরুল নিজ হাতে লিখেছিলেন
আমার পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষা গুরু শ্রী খিদির উদ্দিন খান সাহেবের চরন তলে —- সেবক নজরুল।
মুসলেম উদ্দিন খান এ ঘটনার সঠিক সময় ও তারিখ বলতে পারেন নাই। তিনি নজরুল নুরজাহান সম্পর্কে আরো গল্প ও কথা আলোচনা করেছেন আমার সাথে। যা পরবর্তীতে নজরুল নুরজাহান শিরোনামে বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা রইল।
ত্রিশালের একজন স্বনামধন্য সাংবাদিক নুরজাহানের একান্ত সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে। তখন নুরজাহান জীবিত ছিলেন। যে সময় নুরজাহানের সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন তখন তিনি একেবারে বৃদ্ধা। একেবারে চলাচল করতে পারেন না।
নুরজাহান যা বলেছিলেন,
তা হাল, এত ছোট কালের সব কথা তার মনে নেই তবে ছোট সময় তাদের বীররামপুরের বাড়ীতে এক বিদেশী ছেলে লজিং থেকে স্কুলে লেখাপড়া করেছে এটুকু তার মনে আছে। নজরুল-নুরজাহান বিষয়ক কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ সকল কথা অস্বীকার করেছিলেন এবং বলেছিলেন ওসব কিছু না। অনেক আগেকার কথা এবং সে সময় তিনি খুব ছোট ছিলেন তাই সে সব কথা তার মনে নেই বা খেয়াল করতে পারছেন না।
কাজেই নুরজাহানের ভাষ্য অনুযায়ী বলায় যায় নজরুল নিশ্চিত নুরজাহানদের বাড়ীতে লজিং ছিলেন হয়ত বয়সের ভারে অনেক দিনের পুরানো কথা বলে নুরজাহান সব মনে করতে পারছিলেন না। অগ্নিগিরি গল্প, ত্রিশালের মানুষের বক্তব্য, নুরজাহানের বক্তব্যসহ আনুষাঙ্গিক সবকিছু বিশ্লেষণ করলে এটাই প্রমাণিত হয় তিনটি বিষয়ই একই সুত্রে গাঁথা। হয়ত এ সকল বিষয় নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষনা করলে আরো অনেক কিছু বেরিয়ে আসতে পারে।
ত্রিশালবাসী কবি নজরুলের স্মরনে ত্রিশালের প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নজরুলের নামে নামকরন করেছেন। ত্রিশালে নজরুলের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ত্রিশালে নজরুলের নামে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবী উঠেছে। আমরা এ দাবীর সাথে একাত্বতা ঘোষনা করছি।
পরিশেষে কবি নজরুলের অগ্নিগিরি গল্প ও নজরুলের ত্রিশাল জীবনের বাস্তবতা হুবুহু মিল রয়েছে। গবেষনা ও শিক্ষার স্বার্থে নজরুল স্মৃতিগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা অতীব জরুরী।
শামীম আজাদ আনোয়ার : প্রকাশক ও সম্পাদক-‘ত্রিশাল বার্তা’, প্রকাশক ও সম্পাদক- www.trishalbarta.com ও সম্পাদক-‘ত্রিশালের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’।