Header Image

বাংলার ঐতিয্যের ঘুড়ি 

জিল্লুর রহমান হিমেলঃ
ধারনা করা হয়,চীনদেশে ২৮০০ বছর পূর্বে ঘুড়ির উৎপত্তি হয়েছে।পরবর্তীতে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।ইউরোপে ঘুড়ি খেলা প্রচলন হয় প্রায় ১৬০০ বছর পূর্বে।
একসময় সারা বছর ময়মনসিংহের আকাশে কম বেশী রঙ বেরঙের ঘুড়ি দেখা যেত। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে ফসলের মাঠ,অনাবাদি জমি।ঘুড়ি উড়ানোর মত জায়গা আর মানুষের কর্ম ব্যস্ততায় হারিয়ে গেছে সেই ঘুড়ি।এখন শুধু ফাল্গুন,চৈত্র ও বৈশাখ মাসে আকাশে ঘুড়ির দেখা মিলে।
এই বছর করোনা মহামারীর কারনে সারাদেশ লকডাউন।বেকার হয়ে মানুষ ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছে। অবসর সময় কাটানো আর মনের খোরাক জোগাড় করতে নানা জাতের ঘুড়ি তৈরি করে আকাশে উড়াচ্ছে আর সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার হচ্ছে।
বেশীরভাগ ঘুড়ি রাতে উড়ানো হয়,ঘুড়িতে লাগানো বিভিন্ন রঙের এলইডি বাতি রাতে আাকাশে তারার মত লাগে।ঢাকা – ময়মনসিংহ সড়কে ময়মনসিংহ থেকে ত্রিশাল পর্যন্ত এই এলাকায় কমপক্ষে ৫ হাজার ঘুড়ি উড়ে।ঈদের দিন আরো কয়েকগুণ ঘুড়ির উড়েছে।ঘুড়ি উড়ানোর ছবি ও ভিডিও সারা দেশে ভাইরাল হয়েছে।
ত্রিশাল বৈলরের জিল্লুর রহমান – হিমেল পেশায় শিক্ষক।পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাও করেছেন এবং সৌখিন রেসার কবুতর পালক।কবুতর নিয়ে বই লিখেছেন একাধিক। ময়মনসিংহ থেকে কবুতর দিয়ে রেস খেলা হয় তার নেতৃত্বে।
তার দুই ভাতিজাকে নিয়ে বিশাল এক ঘুড়ি বানিয়ে আকাশে উড়িয়ে এলাকায় হৈ চৈ সৃস্টি করেছেন। এলাকার সবচেয়ে বড় ঘুড়ি। এলাকাভিত্তিক এই ঘুড়ি বক্স ঘুড়ি,ঢোল ঘুড়ি,লন্ডন ঘুড়ি,ঘর ঘুড়ি,লন্ঠন ঘুড়ি ইত্যাদি নামে পরিচিত। প্রায় তের ফুট লম্বা তিন কেজি ওজনের এই ঘুড়ি উড়াতে চারজন মানুষের প্রয়োজন। দুইটি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ও এলইডি স্ট্রিপ লাইট লাগিয়ে রাতে উড়ানো হয় সেই ঘুড়ি।আড়াই কেজি মোটা বর সূতা দিয়ে ঘুড়ি আকাশে উড়ানোর পর শুধু তারার মত লাইটের আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না।
এলাকায় ঘোষনা দিয়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়া জানানো হয়েছে যে – আগামী বছর বৈশাখ মাসে ব্যতিক্রম এক ঘুড়ি খেলার আয়োজন করবেন উনি ও তার দল। এই খেলায় অংশ নিতে কোন এন্ট্রি ফি দিতে হবে না,সবাই অংশ নিতে পারবে।খেলা শেষে যারা প্রথম,দ্বিতীয়,তৃতীয় হবে তাদের পুরষ্কারর দেওয়া হবে।
উনার সাথে কথা বলে জানা গেছে – ঘুড়ির ঐতিয্যে যেন মানুষের কাছে বেচে থাকে,অন্তত এই বসন্তকালের এই সময়ে যেন ময়মনসিংহে আকাশে ঘুড়ির দেখা মিলে।সেই প্রচেষ্টায় আর এই প্রয়াস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!