আরিফ রববানীঃ
বিশ্ব মহামারী করোনা কালে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ময়মনসিংহ বাসীর জীবনযাত্রাকে আরো বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে, এই সংকট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রোধে টেকনিক্যাল কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (৩ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে শহীদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির টেকনিক্যাল কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে-সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। সেজন্য ডেঙ্গু থেকে নগরবাসীকে নিরাপদ রাখতে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের (মসিক) এর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।
সভায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের আগামী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়।
এসময় মেয়র টিটু ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তি সচেতনতার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন এবং গত বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নেওয়া নানা কর্মসূচি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত বছর আমরা ময়মনসিংহ শহরকে ডেঙ্গু থেকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হয়েছি, এ বছরও আমাদের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
ডেঙ্গু থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ময়মনসিংহ নগরবাসীকে মেয়র টিটু-বাড়ির ভিতরে ফুলের টব ,ফুলদানি ,পানির পাত্র ,এসির ফিল্টার ,বাড়ির ছাদের উপর স্বচ্ছ পানি ,জানালার কার্নিশে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, খোলা টিউব, বোতল, গ্লাস, পানি ধারণ করতে সক্ষম যে কোন ধরনের পাত্র, ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেট, যে কোন ধরণের পলিথিনের প্যাকেট এবং ব্যাগ চকলেটের খোসা, কাঁচাবাজারে সবজি ধোয়ার পত্র সমূহ , নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে জমিয়ে রাখা পানি ,অপরিচ্ছন্ন আঙিনা এবং বিভিন্ন ধরনের ঝোপজঙ্গল ইত্যাদি এডিস মশার প্রজনন কেন্দ্র সুতরাং এডিস মশা থেকে পরিত্রান পেতে হলে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগের পাশাপাশি সকল সম্মানিত নাগরিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন, সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়ে প্রত্যেকের বাড়ি/ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং প্রাঙ্গণ সমূহ নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখি ডেঙ্গু মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে সকলের সহযোগীতা প্রত্যাশা করেন।
সভায় টেকনিক্যাল কমিটির বিশেষজ্ঞগণ নাগরিক সচেতনতা, সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে গুরুত্ব আরোপ করেন।
টেকনিক্যাল কমিটির অন্যতম সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মাহির উদ্দিন ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশা নিধনে কার্যকর বিভিন্ন পদ্ধতির ওপর আলোকপাত করেন এবং মসিকের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে আরো সফল করতে নানাবিধ পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, এর আগে মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির জন্য মসিক মেয়রকে আহ্বায়ক এবং প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে দু’জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক, সাবেক সিভিল সার্জন, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, মসিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ডেপুটি সিভিল সার্জন, মসিক প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, খাদ্য ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন অফিসের এন্টোটেকনিশিয়ান, বিডি ক্লিনের বিভাগীয় সমন্বয়কসহ মোট ১৩ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে পরামর্শ দেন। এছাড়াও এ সভায় সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজিব-উল-আহসান, জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ মহাবুল হোসেন রাজীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।