ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল পঙ্গুত্বের সুযোগ নিয়ে সাধারন মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে ও বিভিন্ন ভাবে মানুষের সাথে ষড়যন্ত ও চক্রান্তের মাধ্যমে গ্রাম্য শালিস বসিয়ে দিনের পর দিন জরিমানা আদায় করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বাগাদারিয়া গ্রামের মামলাবাজ একটি প্রতারক চক্র। বাগাদারিয়া এলাকার মৃত রুশন আলীর পুত্র হেলাল উদ্দীন ওরফে লেংরা হেলাল,আবুল কাশেম দুই ভাই, তাদের বোন রেজিয়া খাতন,ভাগ্নে মৃত আব্দুল কাদেরের পুত্র আব্দুল জব্বারসহ ৪জন মিলে এইসব মানুষের নিকট থেকে কৌশলে এই জরিমানা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে। মামা-ভাগ্নে মামলাবাজ সিন্ডিকেট প্রতারক চক্রটি জরিমানা আদায়ের নামে এমন অত্যাচারী ব্যবসার প্রতিবাদে ও চক্রটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ভাবে ব্যবস্থা নিয়ে গ্রামের নিরীহ লোকজন কে তাদের জরিমানা আদায়ের হিংস্র থাবা থেকে রক্ষার দাবীতে বিক্ষোভে ফুসে উঠেছে স্থানীয় জনগণ। তাদের অত্যাচারের বিচারের দাবীতে ১১ই জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বাগাদারিয়া নতুন বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে কানিহারী ইউনিয়নের রাজনৈতিক সামাজিক ও বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর ব্যক্তি বর্গরা।
মানববন্ধনে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়-বাগাদারিয়া এলাকার মৃত উশন আলীর দুই পুত্র হেলাল উদ্দিন ওরফে লেংরা হেলাল ও আবুল কাশেম,মেয়ে রেজিয়া খাতুন তাদের ভাগ্নে আব্দুল জববার প্রায় দুই বছর যাবত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে নানান অযুহাতে,ষড়যন্ত ও চক্রান্ত করে এলাকার মানুষের সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়ে মানুষের নামে মিথ্যা অভিযোগ বদনাম তুলে গ্রাম্য শালিসে সমাধানের নামে জরিমানা আদায় করে আসছে, কেউ জরিমানা না দিলে তার নামে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ভূয়া ভিত্তীহীন অভিযোগ করে এমনকি থানায় মামলাও করে। এই সিন্ডিকেট দলের খপ্পরে পরে স্থানীয় মৃত আব্দুল গফুরে দুই পুত্র হুরমত আলী,আবুল কাশেম একাদিক গ্রাম্য শালিসে জরিমানা দিতে বাধ্য হয়। জরিমানা না দিলে নারী সংক্রান্ত বদনাম ও মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় বলে মানসম্মানের ভয়ে এরা এই চক্রটিকে পর্যায়ক্রমে এপর্যন্ত লক্ষাধিক টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য হয়। একই ভাবে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে মামলার ভয় দেখিয়ে স্থানীয় মৃত রজব আলীর পুত্র নুরুল ইসলাম নুরু নিকট থেকেও প্রায় দের লক্ষাধিক টাকা জরিমানা হিসাবে আদায় করে নেয়। এভাবেই গন্যমান্যদের কাছে গিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে শালিস ডেকে একের পর এক মানুষকে মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের জালে ফাঁসিয়ে জরিমানার নামে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল প্রতারক চক্রটি । হেলাল পঙ্গু বলে স্থানীয়রা তার প্রতি মানবিকতা থাকায় সে এসব প্রতারণায় অভিনয়ের মাধ্যমে সুযোগ নেয় বলে মানববন্ধনে স্থানীয়রা জানায়। তার প্রতারণার বিষয়গুলোকে বিশ্বাস যোগ্য মনে করে মানুষের নিকট থেকে জরিমানা আদায় করে দিতো স্থানীয় গন্যমান্যরা। সম্প্রতি কেবি আই রোডের পাশে থাকা হেলালের চায়ের দোকানে চুরি হয় মর্মে স্থানীয় কয়জনের নামে ইউনিয়নের গণ্যমান্যদের কাছে অভিযোগ করলে বিষয়টি উভয় পক্ষের মতামত নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যরা সমাধান করলেও পরে হেলাল এবিষয়ে স্থানীয় গন্যমান্যদের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে নীরিহ ব্যক্তিদের আসামী করে থানায় অভিযোগ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পাচ গ্রামের লোকজন বৃহস্পতিবার সকালে সম্মিলিত ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চক্রটির বিরুদ্ধে বিচারের দাবীতে মানববন্ধন বন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। মানববন্ধনে ৫গ্রামের প্রায় ২শতাদিক ব্যক্তিবর্গরা অংশ গ্রহন করেন।বিক্ষোভে সাধারণ মানুষ কে হয়রানী করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান বিক্ষুব্ধ জনতা। অভিযোগ উঠেছে পঙ্গু হেলাল ও তার ভাই,বোন,ভাগ্নে তাদের বাড়ীর সামনে দিয়ে হেটে গেলেও মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিকরাসহ বিভিন্ন বদনাম তুলে মানুষের নিকট থেকে জরিমানা নিয়ে অতিষ্ঠ করে তুলে।
বিক্ষোভ কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন-স্থানীয় গণ্যমান্য জালাল উদ্দীন, বাতেন আকন্দ,রুশন আলী,আবুল কাশেম,হুরমত আলী,নুরুল ইসলাম, বাগাদরিয়ার আবুল হোসেন,সিরাজুল ইসলাম শেখ,জালাল উদ্দিন মুন্সি,ঘটনার সাক্ষী হিসাবে বক্তব্য দেন ইদ্রিস আলী, বাসির উদ্দীন বেপারী,আজহারুল আকন্দ,জাকারিয়া মিয়া,আব্দুল মান্নান,ফজলুল হক,শহিদুল ইসলাম,নুর মোহাম্মদ, আব্দুল বারেক প্রমুখ।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার আহাম্মদ আলী বুলুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- একাদিকবার গ্রামের কয়েকজন গণ্যমান্যরা বিভিন্ন ঘটনায় শালিস করে হেলালকে জরিমানা আদায় করে দিয়েছে শুনেছি তবে আমি কোন দরবারে উপস্থিত ছিলাম না। সম্প্রতি চুরির বিষয় নিয়ে ৩জনকে আসামী করে মামলা করেছে হেলাল। মামলায় যে তিন জন আসামী দেওয়া হয়েছে তাদের মাঝে স্থানীয় এমদাদুল ও নূরু ভ্যান চালক নিরীহ ব্যক্তি।
পরে এব্যাপারে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন (পঙ্গু হেলাল) এর সাথে যোগাযোগ করে তার উপর এলাকাসীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এব্যাপারে কোন মন্তব্য বা কথা বলতে রাজি হন নি বলে তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।