আরিফ রববানীঃ
ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ফুলবাড়ীয়ার আলোচিত ঘটনা গার্মেন্টস কর্মী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে ওসি শাহ কামাল নেতৃত্বাধীন জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশ।বিয়ের প্রলোবনকে বিশ্বাস করে প্রতারিত হয়ে খুনের শিকার হন গার্মেন্টস কর্মী।
গত ১০ই জুন সকাল পৌনে এগারটায় ফুলবাড়িয়া থানার শ্রীপুর সাকিনে অজ্ঞাতনামা এক মহিলার বিবস্ত্র (৩০) লাশ পাওয়া যায়। তার খুনিও ছিলো অজ্ঞাত নামা। এমন সংবাদ পাওয়ার পর ফুলবাড়িয়া থানার পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে দায়িত্ব হলে পুলিশ সুপারের এমন নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম) জয়িতা শিল্পী সহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শাহ মোঃ কামাল আকন্দের তত্বাবধানে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। জেলা সিআইডি পুলিশ, র্যাব, পিবিআই পুলিশও এই ঘটনার ছায়া তদন্তে নামে। অবশেষে ডিবি পুলিশ টানা ৪৮ ঘন্টা বিরামহীন অভিযানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত করে।
ডিবি ওসি শাহ কামাল জানান-লাশের সাথে ছোট একটি কাগজে মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে নিহতের পরিচয় সনাক্ত হয়। পরে নিহতের পিতা অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ফুলবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।যার মামলা নং-১১(৬)২০২০ ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০। পুলিশের নির্দেশে শুরু থেকেই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করে। বিভিন্ন সংস্থা মাঠে কাজ করতে থাকে। জেলা গোয়েন্দা সংস্থার পুলিশ টানা প্রায় ৪৮ ঘন্টা মাঠে থেকে তথ্যানুসন্ধান চালিয়ে ও প্রযুক্তি ব্যাবহার করে হত্যাকান্ডে জড়িত মূল আসামী উপজেলার শ্রীপুর এলাকার মৃত নেকবর আলীর পুত্র রাজাবালী(৪০)
কে গ্রেফতার করে।
ওসি জানায়- গত ৬ মাস আগে মোবাইল ফোনে মিস কলের মাধ্যমে ভিকটিমের সাথে পরিচয় হয় ফুলবাড়িয়া থানার শ্রীপুর সাকিনে রাজাবালী (৪৫) এর সাথে। তার পর থেকে ফোনে ফোনে তাদের সম্পর্ক গভীর হয়। প্রথমবার রাজাবালী মেয়েকে তার কাছে এনে ভালো ভাবেই ফেরত পাঠিয়েছে। গত ৯ জুন বিয়ে করবে বলে রাজাবালী মেয়েকে আবার নিয়ে আসে। তারপর ভিকটিমকে ধর্ষন করে। মেয়েটি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় তাকে রাজাবালী খুন করে।
উল্লেখ্য ভিকটিমের বিয়ে হয়েছিল। সংসারে ৭ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় গত ২ বছর ধরে গাজীপুর কোনাবাড়িতে বাসা ভাড়ায় থেকে গার্মেন্টেসে কাজ করতো।
ধৃত আসামী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। এসময় ভিকটিমের মোবাইল ও জামা কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।