Header Image

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফ, জিআর ও কর্মসৃজন কর্মসূচির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সাইফুল ইসলাম তরফদারঃ

 

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ৪ নং বালিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান
শামীমা খাতুন ও কয়েকজন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ভিজিএফ ও জিআর প্রকল্পের অর্থআত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে লিখিত অভিযোগ করে তদন্তপূর্বক বিচার দাবী করেছেন এলাকাবাসী। এনিয়ে ইউনিয়নবাসী আন্দোলনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন পর্যায়ে প্রেরিত লিখিত অভিযোগে জানা যায়, সরকার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অসহায় ও দুস্থদের জন্য সারাদেশের মত ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার বালিয়ান ইউনিয়নে ৭হাজার ১১৫ জন
সুবিধাভোগী মধ্যে ৪৫০ টাকা হারে মোট ৩২ লাখ এক হাজার ৭৫০টাকা বরাদ্দ দেয়। পাশাপাশি জিআর প্রকল্পের আওতায় ৫৫৬ জন দুস্থ সুবিধাভোগির মাঝে ৪৫০ টাকা হারে মোট ২লাখ ৫০ হাজার ২০০ টাকা বরাদ্দ দেয়। বালিয়ান ইউপি চেয়ারম্যান শামীমা খাতুন তার পরিষদের মেম্বার আব্দুর রহমান দুলাল, বাবর আলী ও কাজল মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে প্রকৃত উপকারভোগিদের মাঝে টাকা বিতরণ না করে নয়ছয় করে
বেশিরভাগ টাকাই আত্মসাৎ করে।

 

ভুয়া উপকারভোগির তালিকা প্রণয়ন করে তারা।
অনেক ক্ষেত্রেই একজনের নাম একাধিক স্থানে দেখানো হয়। কোথাও কোথাও চেয়ারম্যান, মেম্বারদের বাবা, মা, খালু, চাচা, চাচী, ভাই, বোনসহ স্বজনদের নাম দিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়। এসব অনিয়ম নিয়ে বালিয়ান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. আবুল কালাম আজাদ ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো: আইয়ুব আলী খান গঠনার বিবরণ তুলে ধরে ময়মনসিংহ জেলা
প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে লিখিত অভিযোগ করেন। খোঁজ নিয়ে দেখাগেছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রকৃত দরিদ্ররা টাকা পায়নি। অনেক ক্ষেত্রে তালিকায় নাম থাকা উপকারভোগিরাও ভিজিএফ বা জিআর এর অর্থ পাননি।

অপরদিকে কর্মকর্মসূচির ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ৮লাখ ১৬ হাজার টাকা চেয়ারম্যান শামীমা খাতুন আত্মসাত করেছেন বলেও এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এলাকার তাইজুল ইসলামের লিখিত অভিযোগে জানাযায়, ৭নং ওয়ার্ডে নয়নবাড়ী ডাক্তার তমিজ উদ্দিনের বাড়ি হতে ৮নং ওয়ার্ডের দেউলী গ্রামের মজিদ মাস্টারের বাড়ি হয়ে ইন্দিরাপাড় পাকা রাস্তা পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা এবং ৮নং ওয়ার্ডের ইন্দিরাপাড় পাকারাস্তা হতে আয়মন নদীর ব্রীজ পাড় পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা স্থানীয় জনগণ স্বউদ্যোগে স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে সংস্কার করেন।

কিন্তু চেয়ারম্যান সেই রাস্তার কাজকে কর্মসৃজন কর্মসূচির প্রকল্প দেখান। সেখানে কোন শ্রমিক ব্যবহার না করে কিংবা কোন ধরণের কাজ না করেই স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমের কাজকেই প্রকল্পের কাজ দেখিয়ে একটি চক্রের সাথে যোগসাজস করে প্রকল্পে পুরো টাকাই আত্মসাৎ করেন। গত ২৩ মে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ঐ রাস্তা দুটিতে প্রকল্পের কাজ হয়ে মর্মে সাইনবোর্ড টানানো পর বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। এতে স্তম্বিত হয়ে যান
এলাকাবাসী। পরে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগকারী আবুল কালাম আজাদ জানান, বর্তমান সরকার টেকসই উন্নয়নের লক্ষে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলতে গরীব দুস্ত মানুষদেরকে ভিজিএফ, জিআর এর আওতায় সাহায্য করছে। দেশকে উন্নয়নশীল এবং পর্যায়ক্রমে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিশ্রম করছেন। সরকার মানুষকে সাহায্য করছে। কিন্তু বালিয়ান ইউপি চেয়ারম্যান শামীমা তার পরিষদের কতিপয় সদস্য ও এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর যোগসাজসে
এসব অর্থ আত্মসাৎ করার মত জঘন্য অপকর্ম করে যাচ্ছেন। তিনি সেজন্য সঠিক তদন্তপৃর্বক কঠিন বিচার দাবী করেছেন।

অপর অভিযোগকারী তাইজুল ইসলাম জানান, সরকার কর্মহীন মানুষদের চলার জন্য
কর্মসৃজন কর্মসূচির ব্যবস্থা করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের মাটির রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করতে না পেরে এলাকাবাসী উদ্যোগী হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের
ভিত্তিতে রাস্তা মেরামত করেছেন। অথচ দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান সেই রাস্তাকে প্রকল্প দেখিয়ে ৮লাখ ১৬ হাজার টাকা খেয়ে ফেলেছেন। এটা ভয়ংকর অপরাধ উল্লেখ করে বলেন, তারা এলাকাবাসী মিলে ইউএনও সহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে
অভিযোগ করেছেন। বিচার না হলে এলাকাবাসী মিলে আদালতে বিষয়টি নিয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও তিনি জানান।ইউপি চেয়ারম্যান শামীমা খাতুন জানান, আমি নিয়ম অনুযায়ী ভিজিএফ ও জিআর এর টাকা বিতরণ করেছি। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি। তাছাড়া
কর্মসৃজন কর্মসূচিতে অনিয়মের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবী করে তিনি জানান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।

error: Content is protected !!