প্রভাষক মো. আনোয়ার হোসেন তরফদার:
বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। এদলই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দান করে। এদলের সবচেয়ে বড় অবদান হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতা অর্জন, বাংলাদেশ রাষ্টে্র প্রতিষ্ঠা।
২৩ জুন বাংলাদেশ আ,লীগের ৭২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ৬৯ বছর আগে ১৯৪৯ সালের এদিনে ঢাকার কে এম দাস লেনের বশির সাহেবের বাসভবন রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলীম লীগ নামে যে সংগঠনটি আত্বপ্রকাশ করে ছিল যুগের বিবর্তনে সে দলটি এদেশের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক হয়ে দাঁড়াল।
জননেতা মাওলানা আব্দুল হামীদ খান ভাসানী আওয়ামীমুসলীম লীগের প্রথম সভাপতি হন এবং টাংগাইলের শামসুল হক সাধারন সম্পাদক মনোনীত হন। এদলটি তার জন্মের মাত্র ২২ বছরের মাথায় একটি স্বাধীন রাষ্টে্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি একটি দলের জন্য বড় গৌরবের বিষয়। যেখানে ভারতের স্বাধীনতার জন্য কংগ্রেসের ৬৩ বছর লেগেছিল। তাই বাংলাদেশ নামের রাষ্টে্র সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নামটি অঙ্গা অঙ্গী ভাবে জড়িত, তৃণমূলের জনগন এদলের মূলশক্তি।
১৯৫৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারন সম্পাদক হন। তার নিবীর প্রচেষ্টায় ১৯৫৫সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। এটি বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বর্হি প্রকাশ। এর ফলে আওয়ামীলীগ রক্ষণশীলদের রাহু থেকে মুক্তি পায় এবং হিন্দু,মুসলীম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকলেই এ দলটিকে আপন বা নিজের দল হিসাবে মনে করে নেয়। শেখ মুজিব একমাত্র রাজনীতি বিদ ছিলেন যিনি পাকিস্তানী স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে একের পর আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যান বঙ্গবন্ধু তাঁর গতিশীল নেতৃত্ব, সততা বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার জন্যই সেই সময়ে বিশ্বনেতার সম্মান অর্জন ।
শেখ মুজিব ছিলেন সাড়া বিশ্বের মুকুটহীন সম্রাট। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ইতিহাসের সঙ্গে এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম জড়িত। ৫২ র ভাষা আন্দোলন, ৫৪ র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২র আইয়ুবের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ৬৪র দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ৬৬র ৬দফা আন্দোলন, ৬৯র গণঅভ্যুত্থান সব আন্দোলনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। ৭০র নির্বাচনে বাঙালি জাতি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পক্ষে রায় দেয়। যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ এর ৭মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বাঙালির মহানায়ক, জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষনা করেছিলেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে পরিচালিত সফল মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে । প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। সদ্য স্বাধীন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যখন পিতা মুজিব স্বপ্নের সোনার বাংলায় রুপান্তরের সংগ্রামে ব্যাস্ত তখনই ঘাতকরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কালরাতে সপরিবারে হত্যা করে। আওয়ামীলীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে ৩নভেম্বর কারাগারে হত্যা করে জাতীয় চার নেতাকে অনেক ভাবে দেশি বিদেশি রা ষড়যন্ত্র করে ধ্বংস করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে কিন্তুু তারা পারিনি।
১৯৮১ সালে ১৭ মে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামীলীগের হাল ধরে স্বদেশে আসেন নানা বাধা পেরিয়ে তাকে আসতে হয়েছে, কিন্তুু সাহসী পিতার সাহসী কন্যা শেখ হাসিনা সঠিক ভাবে দলকে পরিচালিত করে যাচ্ছেন আজও তিনি কঠিন পরিশ্রম করে দেশকে নিয়ে গেছেন অনেক দূর। তার সফলতার কারনে বাংলাদেশের মানুষ আজ স্বপ্ন দেখতে এবংদেখাতে জানে, বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার ভিষন ২০৪১ ধারন করে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে এক অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে। দেশের জনগনের আস্হাও ভালবাসার ভরসা স্থল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সাধারন মানুষের প্রত্যাশা আওয়ামীলীগ বেঁচে থাকুক মানুষের কল্যানের মাধ্যমে।
জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু
লেখক: প্রকাশক, ভালুকার খবর ও প্রভাষক, ভালুকা-ত্রিশাল মৈত্রী ডিগ্রী কলেজ।