দেশজুড়ে করোনাকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষদের। করোনার এই সময়ে সাধারণ মানুষদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্য সহায়তা। এক্ষেত্রে খাদ্য সহায়তায় অভিনব এক উদ্যোগ গ্রহণ করে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার অসহায়, কর্মহীন, দুস্থ, প্রতিবন্ধী ও অস্বচ্ছল ২০০ পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) পৌর এলাকার ফুলপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে দুপুর ১২টায় এ খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাড়া দেওয়া মানবিক মানুষ এর পক্ষ থেকে এই উপহারসামগ্রী পেয়ে হাসি ফুটেছে ২০০ পরিবারে। উপহারের মধ্যে রয়েছে ৬ কেজি চাল, ১ কেজি মসুর ডাল, আধা লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি লবণ, ১টি বল সাবান, ১টি গোসলের সাবান এবং ১টি মাস্ক। মুখে মাস্ক লাগিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ত্রাণের প্যাকেট তুলে দেন মানবিক উপহার কার্যক্রমের সদস্যরা।
মানবিক মানুষের মানবিক উপহার কার্যক্রমের সমন্বয়ক গণমাধ্যমকর্মী শাহ্ নাফিউল্লাহ সৈকতের উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবধানে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফুলপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউল করিম রাসেল, কার্যক্রমের প্রধান তদারকি কর্মকর্তা ও ইউএনও শীতেষ চন্দ্র সরকার, অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন, তদারকি কর্মকর্তা ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আবুল বাসার রাজন, তদারকি কর্মকর্তা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী দারুস সালাম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান, মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাফায়েত জামিল সাজু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউর রহমান পান্না, সাংবাদিক নুরুল আমিন, বিল্লাল হোসাইন, আব্দুল মান্নান, মোস্তফা খান, আলমগীর ইসলাম, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবী মাহমুদুল হাসান রাব্বি, সাখাওয়াত হোসেন, ইকবাল হাসান, ইমরান হাসান, সুজন মিয়া, আয়েশা আক্তার আশা প্রমুখ।
ছনকান্দা বাজার এলাকার আব্দুল কাদির বলেন, বর্তমানে করোনার সময়ে কর্মহীন হয়ে এখন না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। গত দুদিন আগেও এক কেজি আটা দিয়ে দিন পাড় করেছি। যে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছে তাতে কয়েকটা দিন ভালো কাটবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য’ প্রচলিত এই কথার ভিত্তিতে পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই সময়ে-অসময়ে মানুষই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা যুগে যুগে একটি বার্তাই দিয়েছে যে মানবতাই শক্তি, মানবতাই মুক্তি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, এখনও যুদ্ধ নয়, মানবতা দিয়েই পৃথিবী গড়তে চায় অনেক মানুষ। মানুষ জানে শুধু নিজের জন্য বেঁচে থাকাই বেঁচে থাকা নয়, অসহায় মানুষের চোখের পানি মুছে দিয়ে বেঁচে থাকার নামই জীবন। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সামর্থবানদের সহযোগিতায় মানুষকে সহায়তা অব্যাহত রেখেছি। আমরা সবসময় মানুষের পাশে আছি। করোনাকালে এটি একটি প্রশংসিত কাজ। ভালো কাজের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন সবসময় রয়েছে।
গণমাধ্যমকর্মী শাহ্ নাফিউল্লাহ সৈকত বলেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যারা মানুষের পাশে আস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে, তারাই মানবতার কারিগর। সমাজের ঝামেলাহীন মানুষের সাথে এখনো কিছু মানুষ আছে যারা জীবন বলতে বোঝে শুধু নিজের জন্য বেঁচে থাকা নয় আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া। তাঁরা দাঁড়িয়ে আছে মানবতার প্রশ্নে। তাঁরা নিজেদের অবস্থান থেকে সাধ্যমত এগিয়ে আসার চেষ্টা করছে।