Header Image

ভালুকায় তিতাস গ্যাস অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতি এখন ‘নিয়ম 

ময়মনসিংহের ভালুকা তিতাস গ্যাস অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতি যেন এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে। অফিসের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। স্থানীয় দালালের মধ্যস্ততা ছাড়া কোন কাজই হয়না এই অফিসে। অপরদিকে গোটা উপজেলা জুড়ে মাকড়সার জালের মতো ঝুঁকিপূর্ণভাবে ছড়িয়ে আছে অবৈধ গ্যাস লাইন।
জানা যায়, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ভালুকা জোনাল বিপণন অফিসের আওতাধীন এলাকায় গ্যাসের অবৈধ লাইন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নৈরাজ্য চলে আসছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অত্যান্ত বিপজ্জনকভাবে পাতলা প্লস্টিকের পাইপ রাস্তা কেটে টেনে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বাসা বাড়িতে। আর মাসে মাসে অফিসের কর্তারা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অপরদিকে অবৈধভাবে বসানো এসব লাইনের কারণে শুধু যে গ্যাস চুরি হচ্ছে তা নয়, গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থাও ভয়ানক বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয় বাসিন্ধারা। তাছারা যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা আবাসিক প্রাহক গ্যাস লিকেজের বিষয়ে অভিযোগ করেন তাঁদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়। নাম ও স্থান পরিবর্তন করতে গিয়ে টাকা না দিলে তাঁদের নানা হয়রানির অভিযোগ নিত্যদিনের।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ভালুকা জোনাল বিপণন অফিসের আওতাধীন এলাকার বিভিন্ন স্থানে ২০ হাজার থেকে লাখ টাকার বিনিময়ে অবৈধ গ্যাস-সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। আর এই প্রক্রিয়াতেই স্থানীয় নামধারী ঠিকাদারের মধ্যস্ততায় গত কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিতাস গ্যাসের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। এসব অবৈধ সংযোগ থেকে এককালীন টাকা পাচ্ছে তিতাস গ্যাসের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাছাড়া স্থানীয় দালালের সহযোগীতায় মাসিক ভিত্তিতে বিল নিচ্ছে একটি চক্র। আর এর ভাগ তিতাস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বুঝে নিচ্ছেন কানায় কানায়। উচ্চ পর্যায়ের চাপে কোথাও লাইন কাটা হলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে কিছুদিন পরই আবার অবৈধ সংযোগ নেওয়া হচ্ছে। যার ফলে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরজমিনে জানা যায়, ভালুকা পৌরসভা, সিডষ্টোর, মাস্টাবাড়ি, ত্রিশাল, গফরগাঁও, শ্রীপুরের জৈনা বাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে জালের মতো ছড়িয়ে আছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। একটি বৈধ লাইনের বিপরিতে অন্তত ৫/৮ টি অবৈধ সংযোগ নেওয়া বাড়িওয়ালারা এক চুলার জন্য ১হাজার ও দুই চুলার জন্য ১৫শত টাকা দেয় স্থানীয় একটি চক্রকে। উপজেলার সিডষ্টোর আওলাতলি রোড়, জালোপাজা রোড, মাস্টার বাড়ি বাদসা টেক্সটাইলের দুই নম্বর গেইটের আন্তত অন্তত শতাধিক বাসায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।
এসবের সাথে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ভালুকা জোনাল বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রেকৌশলী মোহাম্মদ দেলুয়ার হোসেনসহ স্থানীয় একটি চক্রের।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্য সচিব কামরুল হাসান পাঠান কামাল বলেন, ‘তিতাসের কর্মীরা ঘুষের বিনিময়ে বাইপাসের মাধ্যমে গ্যাসের সংযোগ দেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে অনুমোদনের অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করতে দিয়ে স্থানীয় দালালের মধ্যস্থতায় মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা তুলা হয়। এতে সরকার একদিকে যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে অপরদিকে ছোটখাটো দূর্ঘটনাও ঘটছে।
অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিষয়ে জানতে চাইল তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ভালুকা জোনাল বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রেকৌশলী মোহাম্মদ দেলুয়ার হোসেন বলেন, ‘লিখিত আবেদন ছাড়া আমি কোন বক্তব্য দেই না তবে, সঠিক তথ্য দিলে অভিযান পরিচালনা করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!