Header Image

ভালুকায় সৌদি খেজুর চাষে সফল মোতালেব

জাহাঙ্গীর আলমঃ

সৌদি খেজুরের চাষ করে কোটিপতি ময়মনসিংহের ভালুকার পাড়াগাঁও গ্রামের সৌদি ফেরৎ যুবক আঃ মোতালেব।

আঃ মোতালেব তার বাড়ী সংলগ্ন মাত্র ৭০ শতাংশ জমিতে ২০০১ সালে সৌদি খেজুরের বীজ বপনের মাধ্যমে সৌদি খেজুর চাষ করে কয়েক বছরের ব্যবধানে আজ তিনি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন।

তবে এজন্য তাকে রাতদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি খাটতে হয়েছে। সরজমিনে পাড়াগাঁও গ্রামে মোতালেবের গড়ে তোলা মোফাজ্জল-মিজান সৌদিয়া খেজুর বাগানে গেলে মোতালেব তার সারা বাগানের বিভিন্ন জাতের খেজুরের সাথে পরিচয় করান। বাগানে একটি গাছে লাল রং ধারন করে রয়েছে বড় লম্বা আকৃতির খেজুর নাম আজুয়া। ছোট বড় অনেক গাছে এ জাতের খেজুর ধরেছে। আরেকটি গাছে তার চেয়েও বড় আকৃতির খেজুর নাম আমবাগ। ছোট আকারের আরেকটি গাছে সুকারী জাতের খেজুর কাঁদিগুলো পলিথিনে ঢেকে রাখা হয়েছে।

 

বয়স্ক উঁচু গাছে উঠার জন্য লোহার এ্যাংগেল দিয়ে মাচা করে তাতে সিড়ি করেছেন সহজে গাছ থেকে খেজুর পারার জন্য। প্রতিটি মাচা তৈরী করতে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মত। আঃ মোতালেব জানান তিন বছর সৌদি আরবে থাকাকালীন সেখানকার একটি খেজুর বাগানে চাকরি করে খেজুর চাষে অভিজ্ঞতা অর্জণ করেন। ২০০০ সালে দেশে ফিরার সময় সৌদি আরব থেকে বিভিন্ন জাতের সৌদি খেজুরের বীজ নিয়ে আসেন।

 

পরবর্তীতে ২০০১ সালে বাড়ী সংলগ্ন ৭০ শতাংশ জমিতে বীজ বপনের মাধ্যমে শুরু হয় সৌদি খেজুরের আবাদ। ২ শত ৭৫ টি গাছের মধ্যে তিন বছরের মাথায় দুটি গাছে প্রথম খেজুর আসে। এলাকার মানুষ আগ্রহ ভরে তার বাগানের ছোট গাছে সৌদি খেজুর দেখতে ভীড় জমায়। বাগানের পরিচর্যা পানির ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরী করতে তার কয়েক লক্ষ টাকা ব্যায় হয়ে যায়। চারিদিকে খবর ছড়িয়ে গেলে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগ্রহী লোকেরা চারা কিনতে আসে। চারা বিক্রির টাকায় তিনি বাগানের উন্নয়ন সহ সংসারের নানা চাহিদা পুরনে সমর্থ হন।

 

তিনি জানান ছোট আকৃতির প্রতিটি চারা ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, ফলধারক একটি গাছ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকেন। তার বাগানে বর্তমানে ১২ শ ছোট বড় গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ৭০/৮০ টি গাছে এ বছর খেজুর ধরেছে। প্রতিটি পুর্ণ বয়স্ক গাছে ১২ থেকে ১৩ টি কাঁধি হয়। প্রতিটি কাঁধিতে ১০ থেকে ১২ কেজি খেজুর পাওয়া যায়। আজুয়া জাতের খেজুর প্রতি কেজি ২ হাজার টাকা, আমবাগ প্রতি কেজি ২ হাজার টাকা, সুকারী ১ হাজার ৫শ টাকা, বরকি ১ হাজার ৫শ টাকা কেজি বিক্রি হয়।

 

তিনি এক সময় স্ত্রী সন্তান নিয়ে মাটির ঘরে বসবাস করতেন। খেজুর বাগান হতে আয়কৃত টাকায় তিনি দ্বিতল বিল্ডিং বাড়ী করেছেন, ৬ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন যার মূল্য বর্তমানে কোটি টাকার উপরে। তার সাফল্যের জন্য স্ত্রী মজিদা আক্তার সমান অংশীদার। মৌসুমী ফলের মধ্যে যেমন আম, কাঠাল, লিচু, আনারস, মালটা, কমলা, লটকন, বারোমাসি কলা, পেপে ইত্যাদি সকলের পছন্দের খাদ্য তালিকায় থাকলেও এসব ফল ফ্রিজিং বা হিমাগার ছারা সংরক্ষন সম্ভব নয়। খেজুর অত্যন্ত স্বাস্থ্যপযোগী ফল এ সবের মধ্যে অন্যতম যা হিমাগার ছারাই সারা বছরের জন্য সংরক্ষন করে রাখা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!