
সাইফুল ইসলাম তরফদার, ময়মনসিংহ:
আজ ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ হানাদমুক্ত দিবস। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে ভোরের সূর্য উঠার সাথে সাথে আকাশ বিদারী জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত হয় পূরাতন ব্রহ্মপুত্র বিধৌত মহুয়া মলুয়ার জনপদ ময়মনসিংহ। অবরোদ্ধতার অবগুন্ঠন তুলে মুক্ত আকাশে স্বস্থির নিশ্বাস পেলেন মুক্তিকামী জনতা। আকাশছোঁয়া গরিমা নিয়ে মুক্ত আকাশে পতপত করে উড়তে থাকে রক্তে কেনা স্বাধীন দেশের লাল-সবুজের পতাকা।
জয় বাংলার বজ্রতুল্য উচ্চারণ সবার কন্ঠে। স্মরণকালের ইতিহাস সৃষ্টিকারী বিজয় মিছিল। অগ্নিদীপ্ত উল্লাসে বিজয় আনন্দে মেতে উঠার প্রয়াস দেখায় ময়মনসিংহবাসী। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বরের দৃশ্যপট ছিল এমনই।
এদিন মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী যৌথভাবে পাকসেনাদের কবল থেকে ময়মনসিংহকে মুক্ত করেন।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ১১ নম্বর সেক্টরের এফ জে মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ১৩ রাজপুত রেজিমেন্ট ও ৯৫ ব্রিগেডের ৫৭ মাউন্ট ডিভিশন যৌথভাবে ময়মনসিংহ অ লে অবস্থানরত হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিকল্পনা করে।
পরে মুক্তিবাহিনী সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা হালুয়াঘাট দিয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে দিশেহারা দখলদার পাকিস্তানি সেনারা টিকতে না পেরে পিছু হটে।
ভিতসন্ত্রস্ত হয়ে ৯ ডিস্বের রাতের আধারে পাকবাহিনী ময়মনসিংহ ছেড়ে টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়।
তবে পাক সেনারা পালিয়ে যাওয়ার আগে স্থানীয় রাজাকার ও আল বদরদের সহায়তায় অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে।
১০ ডিসেম্বর বিভিন্ন দিক থেকে মুক্তিসেনাদের পাশাপাশি মুক্তিকামী সাধারণ জনতা মিছিল নিয়ে ময়মনসিংহ শহরে জড়ো হন। মুক্ত হয় ময়মনসিংহ। দিবসটি পালনের লক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
##