স্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে একই পরিবারের তিন প্রতিবন্ধী সদস্যের মানবেতর জীবনযাপন যেন হৃদয় বিদারক কাহিনীর হার মানায়।
কখনো খেয়ে,কখনো না খেয়ে প্রতিবন্ধী এই পরিবারটি চালিয়ে যাচ্ছে তাদের জীবন সংগ্রাম। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের মাগুরজোড়া এলাকার মরহুম রমজান আলী পরিবারের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের মাগুরজেড়া গ্রামের মৃত রমজান আলী শেখের স্ত্রী মোসাম্মৎ আনোয়ারা খাতুন দীর্ঘদিন যাবত প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে এক দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। তার মেয়ে অহিদা আক্তারকে ৫ বছর ধরে শিকল বন্দি অবস্থায় রাখা হচ্ছে। সুস্থ অবস্থায় তাকে বিবাহ দিলে একদিনের মাথায় সে( প্রতিবন্ধী) মাথা খারাপ হয়ে যায়। এরপর থেকে অহিদাকে শিকলবন্দি করে বেঁধে রাখা হয়। কখনো গাছের সাথে কখনো বা ঘরের বারান্দায় তাকে এভাবেই বেঁধে রাখা হয়।অন্য মেয়ে ফরিদা খাতুন প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছেন।বর্তমানে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এ সংবাদটি যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে প্রতিবন্ধী সদস্যদের খোঁজখবর নিতে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ তাদের বাড়িতে ছুটে যান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের বাড়ীতে গিয়ে দেখেন এক হৃদয় বিদারক ঘটনা । প্রতিবন্ধী অহিদাকে শিকল বন্দি করে রাখা হয়েছে। এবং অহিদার মা একজন প্যারালাইসিস রোগী ।
এছাড়াও প্রতিবন্ধী অহিদার বড় বোন ফরিদা অহিদার মতো প্রতিবন্ধী অবস্থায় রয়েছেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ তাদের পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করে নগদ দশ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাহমুদুল হাসান, ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান সাদেক সহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
অপরদিকে গত বুধবার সকালে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঞা এই ঘটনাটি দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সাথে সাথে ত্রিশাল থানার ওসি মো: মাইন উদ্দিনকে বিষয়টি অবগত করেন। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওসি মাইন উদ্দিন সাথে সাথেই ছুটে যান প্রতিবন্ধীর বাড়িতে। প্রতিবন্ধীর বাড়িতে গিয়ে তিনি কুশল বিনিময় করে হতদরিদ্র পরিবারের নিকট জেলা পুলিশ সুপারের উপহার সামগ্রী ও নগদ অর্থ পৌঁছে দেন।