মফিদুল ইসলাম লাভলু (ময়মনসিংহ)
ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৮ আগস্ট ২০২৩ ইং এর অনুষ্ঠিত একটি কর্মশালায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ওয়ার্ল্ডফিশ উদ্ভাবিত দ্রুত বর্ধনশীল জিথ্রি রুই বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ ওয়ার্ল্ডফিশ অ্যাকুয়াটিক ফুড বায়োসায়েন্সেস-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. জন বেঞ্জির কাছ থেকে জিথ্রি রুই মাছের পোনাগ্রহণ করেন। উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ওয়ার্ল্ডফিশ উদ্ভাবিত জিথ্রি রুই মাছ এদেশের কার্প জাতীয় মৎস্য উৎপাদনে বিশাল ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করি।
এর ফলে সরকার ঘোষিত এদেশের মানুষের নিরাপদ মাছের মাধ্যমে স্মাার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় প্রতিভাত হবে বলে আমার ধারনা”
মৎস্য ও জলজ কৃষি গবেষণাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যেফিড দ্য ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিশের মাধ্যমে ইউএসএআইডির অর্থায়নেবাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং ওয়ার্ল্ডফিশ যৌথভাবে কর্মশালাটির আয়োজন করে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ফিড দ্য ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিশ এবং ওয়ার্ল্ডফিশ-এর প্রায় ১০০ জন মৎস্য বিশেষজ্ঞ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ। তিনি তার সমাপনী বক্তব্যে মৎস্য গবেষণায় উন্নত জাতের মাছ উদ্ভাবণ সম্পর্কে বলেন,বিএফআরআই নানারকম মাছের জাত সহ রুই মাছের জাত উন্নয়নে কাজ করছে। আপনারা জানেন আমরা সুবর্ণ রুই উদ্ভাবণ করেছি।
ওয়ার্ল্ডফিশ উদ্ভাবিত জিথ্রি মাছও সুবর্ণ রুইয়ের পাশাপাশি এদেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। জাত উন্নয়নের এ কার্যক্রমে ওয়ার্ল্ডফিশ এর সাথে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য,যেমন ইউএসএআইডি’র ফিড দ্যা ফিউচার অ্যাকোকালচার অ্যান্ড নিউট্রিশন অ্যাক্টিভটি, ফিড দ্যা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেইটস ফাউন্ডেশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইফাদ প্রমুখ।
এক দশক ধরে কার্প জাতীয় মাছ উন্নয়নের জন্য ওয়ার্ল্ডফিশ যেগবেষণা কার্য পরিচালনা করছে তারই ধারাবাহিকতার ফসল এ জি থ্রি রুই মাছ। ২০১২ সালে এই জি থ্রি রুই মাছের কার্যক্রমহালদা, পদ্মা এবং যমুনা নদী থেকে রেণু সংগ্রহের মাধ্যমে শুরু হয়।
২০২০-২০২১ সালে, প্রোগ্রামটি নির্বাচিত প্রজনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৃতীয় প্রজন্মের রুই উদ্ভাবণকরে। যশোরএবং নাটোর-রাজশাহী অঞ্চলে পরিচালিত ফিল্ড ট্রায়ালে দেখা গেছে এ জাতটি প্রচলিত রুইয়ের চেয়ে ৩৭% বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে”, এ প্রসঙ্গে ওয়ার্ল্ডফিশের সিনিয়র সায়েন্টিসড. বিনয় কুমার বর্মনবলেন
”বিএফআরআই কে জিথ্রি রুই হস্তান্তরের মাধ্যমে কার্প জাতীয় মাছ চাষের সার্বিকউন্নয়নে বিএএফআরআই এর সাথে যৌথভাবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করার একটি অনবদ্য প্রয়াস বলে মনে করি।
আশা করা যায় যে বিএফআরআই-এর তৈরি সুবর্ণ রুই এবং ওয়ার্ল্ডফিশের জিথ্রি রুই দেশের কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতথা সামগ্রিক মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।কর্মশালায় মৎস্য বিজ্ঞানী এবং অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশে কার্প অ্যাকুয়াকালচারের আরও উন্নয়নের জন্য মাছের জেনেটিক্সে আরোও যৌথ গবেষণার ওপর জোর দেন।