Header Image

শাসক নয়,সেবক হিসাবে নাগরিকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ত্রিশালের ইউএনও জুয়েল

 

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

শাসক হিসাবে নয়,সেবক হিসাবে নাগরিকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ত্রিশালের ইউএনও জুয়েল আহমেদ। এমন দাবী উঠেছে ত্রিশালের সুশীল সমাজের মাঝে।

শিক্ষাবিধদের মতে-ত্রিশালে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে উপজেলার সকল সরকারী -বেসরকারী, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এখন প্রায় দূর্ণীতিমুক্ত বলা যায়। পাল্টে যাচ্ছে ত্রিশালে বিভিন্ন সেক্টরের সরকারি -বেসরকারি কার্যক্রমের চিত্র।

ইউএনও’র কঠোর নির্দেশনার ফলে উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে একদিকে যেমন শিক্ষকরা যথা সময়ে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ক্লাস দানে বাধ্য হচ্ছে, তেমনি নকলের কোন সুযোগ না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা আড্ডা বাদ দিয়ে পড়া-লেখায় মনোযোগী হয়েছে।

অপরদিকে বাল্যবিবাহ, মাদক,ইভটিজিং মুক্ত উপজেলা গড়তে কাজ করছেন ইউএনও। তিনি
শাসক হিসাবে নয়, একজন সেবক হিসাবে নাগরিকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কর্মকর্তা হিসাবে নয়, সাধারণ মানুষের বন্ধু হিসাবেই সব সময়ই পাশে থাকছেন। সর্বোপরি তিনি পেশাদারিত্ব ও মানবিক একজন মানুষ হিসাবে ত্রিশালের আপামর জনতার জন্য কাজ করছেন।

সূত্রে জানা গেছে, জুয়েল আহমেদ ত্রিশালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদানের পর তার কঠোর নজরদারী, বুদ্ধিমত্তা এবং যুগান্তকারী পদক্ষের ফলে উপজেলাবাসীর মধ্যে এক প্রকার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে। তার কঠোর হস্তক্ষেপের কারনে বন্ধ হয়ে গেছে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের অনুনিয়ম-দূর্ণীতি।

ইউএনও জুয়েল আহমেদ এর ভয়ে বাল্যবিয়ে প্রায় বন্ধ, থমকে পড়েছে শালিশ-বিচার,কার্ড,ভাতার নামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অর্থবানিজ্য। কমে গেছে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ব। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের ভয়ে এলাকায় অপরাধমুলক কর্মকান্ড নেই বললেই চলে। বিশেষ করে ইউএনও’র যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারনে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। শিক্ষকদের জবাবদিহিতা ও নকল রোধের কারনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখা-পড়া এখন স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে এসেছে।

নির্বাহী অফিসারের এহেন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এক শ্রেনীর কুচক্রি মহল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও তিনি তা শক্ত হাতে প্রতিহত করে দূর্ণীতি, সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত ত্রিশাল গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান থেকে শুরু করে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে যেন এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে। কখন জানি ইউএনও’ স্যার এসে পড়ে! আর এসে যদি কোন অনিয়ম পায় তাহলে চাকরি নিয়ে টানাটানি-এধরনের ভয় সব সময় যেন শিক্ষকদের মধ্যে পেড়াপেড়ি করছে। যে কারনে শিক্ষকরা সময়মত প্রতিষ্ঠানে হাজির ও ক্লাসদানে বাধ্য হচ্ছেন।

ত্রিশালের আলোচিত ঘটনা উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের পূর্ব চরপাড়া গ্রামের মো. আল আমিন ও ফরিদা দম্পতির বুক ও পেট জোড়া লাগানো দুই কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ার কথা শুনে ইউএনও তার মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বিষয়টি অবগত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুয়েল আহমেদ তাদের
বাড়িতে পরিদর্শনে যান । এ সময় জোড়া শিশু দুটিকে দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে হন। শিশুর পিতা-মাতাকে সান্তনা দিয়ে ঢাকা পিজি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য এ্যাম্বুলেন্সসহ ভর্তির ব্যবস্থা করে বুক ও পেট জোড়া লাগানো দুই কন্যা সন্তানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন মানবিক ইউএনও জুয়েল আহমেদ।

গত ৫অক্টোবর বৃহস্পতিবার ও ৬অক্টোবর শুক্রবার দুই দিনের টানা বর্ষণে উপজেলা ব্যাপী মানুষের বাড়ী-ঘর,ফিসারী তলিয়ে পানি হয়ে পড়লে ইউএনও জুয়েল আহমেদ বৃষ্টি আর কাঁধা উপেক্ষা করে পানিবন্ধীদের খোজ খবর নেন। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্থদের যেন সরকারি সহায়তা দেওয়া যায় সেলক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেন।

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জুয়েল আহমেদ জানান, তিনি শিক্ষার বিষয় নিয়ে খুবই তৎপর। তিনি চান ত্রিশালের শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষকদের পাঠদান শুনে প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করে সুশিক্ষিত হয়। কেউ যেন নকল করে বা অসাধুভাবে পাশ করে বের না হয়। তার যোগ্যতা অনুযায়ী পাশ করে বের হতে পারে। এই কারনে সকল পরীক্ষা কেন্দ্রে সি.সি ক্যামেরা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে কেউ না পড়ে পরীক্ষা দিতে এসে অন্যের খাতা দেখে লেখার কোন সুযোগ না পায়।

তিনি আরো বলেন, তিনি ত্রিশালে থাকা কালীন যে সকল শিক্ষার্থীরা বের হবে তারা একেকটা রত্ন হয়ে বের হবে। অনেকেই তার কাজের সমালোচনা করে। কিন্তু গত ৬মাসে তিনি শিক্ষার বিষয়ে যে কাজগুলো করছেন সেটা মানুষের জন্য করছেন। বর্তমান প্রজন্মদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বলের জন্য কাজ করছেন। আগে ছেলে মেয়েরা স্কুল কলেজের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত আর এখন সেটা বন্ধ হয়েছে। শতভাগ পাশের জন্য তিনি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ম করে দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। শিক্ষার্থীরা যদি স্কুল-কলেজের সকল ক্লাসে উপস্থিত থাকে তাহলে তার প্রাইভেট ক্লাসের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবেনা। ছেলে-মেয়েদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এর
জন্য তিনি সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।

জুয়েল আহমেদ চলতি বছরের গত ১৬ এপ্রিল ত্রিশাল উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদান করেছেন। তিনি ৩৪তম বিবিএস (ব্যাচ)পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসন ক্যাডার সার্ভিসে যোগদেন। এর আগেও বিভিন্ন উপজেলায় সুনামের সাথে কাজ করে চাকুরীজীবনের প্রায় সবক্ষেত্রে সফলতা ও সুনাম বয়ে এনেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!