আরিফ রববানী, ময়মনসিংহঃ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অবহেলায় ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির চাল থেকে বঞ্চিত হল নিম্ন আয়ের ষোল হাজার কার্ডধারী পরিবার।
নিম্ন আয়ের মানুষের আর্থিক কষ্ট লাঘবে সারাদেশে ১ কোটি পরিবারের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ)’র পণ্য চাল, ডাল, তেল, চিনি ও পেঁয়াজ বিতরণ করা হচ্ছে।
ময়মনসিংহে প্রতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে পরবর্তি মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত ইউনিয়ন ভিত্তিক তা বিতরণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অক্টোবর মাসে ময়মনসিংহে চাল ডাল ও তেল বিতরণের কথা থাকলেও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ঘটেছে এর ব্যতিক্রম। এ উপজেলায় টিসিবির চাল পায়নি ৯টি ইউনিয়নের মোট ১৬ হাজার ১৭২টি পরিবার। তালিকা থেকে চাল বাদ দিয়েই অন্যান্য পণ্য বিতরণ করা হয়েছে।
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষ এই সরকারি চাল থেকে কেন বঞ্চিত হলো? এই প্রশ্নের জবাবে জানা যায়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিসিবির জন্য বরাদ্দকৃত প্রতি মাসের চাল নির্ধারিত মাসেই উত্তোলন করে খাদ্য গুদামে সংরক্ষণ করতে হবে। পরে টিসিবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারিখে নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে তা বিতরণ হবে।
কোনভাবেই নির্ধারিত মাসের চাল পরবর্তী মাসে উত্তোলন করা যাবেনা মর্মে প্রতিটি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে নির্দেশনা প্রদান করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। তবে এমন নির্দেশনার কোন চিঠি পাননি বলে দাবি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের। যে কারণে অক্টোবর মাসের চাল নভেম্বর মাসে উত্তোলন করতে পারেননি তিনি। ফলে ভর্তুকি মূল্যে এ মাসের টিসিবির চাল থেকে বঞ্চিত হল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের কার্ডধারীরা। টিসিবির কার্ডধারী বৃদ্ধ হাদিস মিয়া জানান, চালের টাকা নিয়ে এসেও চাল পাইনি। এখন বেশি দামে বাজার থেকে চাল কিনতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক উজ্জ্বল কুমার দত্ত’র কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। পরে তার পক্ষে উপজেলা খাদ্য গুদাম চলাচল ও সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এ উপজেলায় নতুন যোগদান করায় জেলার হোয়াটসআ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হতে পারেননি বিধায় নির্দেশনার কোন চিঠি তিনি পাননি। যে কারণে অনেক চেষ্টা করেও আর অক্টোবর মাসের চাল উত্তোলন করা যায়নি।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজা জেসমিন জানান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চিঠি পায়নি বলে এ মাসে চাল উত্তোলন করতে পারেনি। যে করণে এ মাসে চাল দেয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে আমি অনুলিপি পেয়েছি। তারা কেন পেলনা এ বিষয়ে লিখিত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
পরে এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বাণিজ্য শাখায় যোগাযোগ করলে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় কেন চাল বিতরণ হয়নি তা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হবে।##