Header Image

একই কর্মস্থলে অর্ধ যুগ কাটিয়েছেন পিআইও রেজা ; করেছেন প্রকল্পের টাকা হরিলুট

 

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ময়মনসিংহঃ

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক রেজার বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও চাকুরি বিধি অনুযায়ী ৩ বছর পর পর বদলীর নিয়ম থাকলেও একই কর্মস্থলে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর ধরে চাকুরি করছেন সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনিরুল হক ফারুক রেজার। জনমনে প্রশ্ন নেপথ্যে রহস্য কি?

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের তৃণমূলে উন্নয়ন ও হতদরিদ্রদের সহায়ক হিসেবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার নানা শিরোনামে অর্থ বরাদ্দ হয় উপজেলা ও জাতীয় সংসদ সদস্যের অনুকূলে। উন্নয়নের জন্য ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) উপজেলা পর্যায়ে বরাদ্দ হয়।একইভাবে বরাদ্দ হয় প্রত্যেক সংসদ সদস্যের অনুকূলে। উপজেলার অনুকূলে বরাদ্দ অর্থ সমন্বয় কমিটির সভার মাধ্যমে বণ্টন হয় বিভিন্ন ইউনিয়নভুক্ত এলাকার প্রকল্পের নামে। যা বাস্তবায়নের দায়িত্বে জনপ্রতিনিধিরা থাকলেও দেখভালের দায়িত্ব থাকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ওপর।

একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন বহাল থাকার সুবাদে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় বদলি ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের। কিন্তু স্থানীয় সাবেক সংসদ রওশন এরশাদ ও তার অনুসারী জাতীয় পার্টির নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল আওয়াল সেলিমসহ উপজেলা চেয়ারম্যানের আর্শিবাদ থাকার কারণে ময়মনসিংহ সদরে খুঁটি গেড়ে বহাল তবিয়তে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর। বদলী তো দূরের কথা তিনি ৬ বছরে ফ্যসীবাদ সরকারের দালাল সেজে ঠিকাদারদের মতো সরকারি প্রকল্পে ১৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নভুক্ত গ্রামাঞ্চলের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শ্মশানঘাট, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট স্থাপন, মেরামত ও সংস্কারের জন্য সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার বরাদ্দ অর্থের সিংহভাগ টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে এগিয়ে আছে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনিরুল হক ফারুক রেজা। এখানে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছরে প্রায় বিভিন্ন প্রকল্পের টাকার অংকের শতাধিক কোটি টাকার বরাদ্দ মিলেছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

আরোও জানা যায়, বাংলাদেশ সার্ভিস রুল অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীদের ৩ বছর পর পর বদলির কথা বলা হয়েছে। তবে এর ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে ময়মনসিংহ সদর উপজেলায়। এ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর ধরে অবস্থান করছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৮ সালের ২৫শে অক্টোবর ময়মনসিংহ সদরে যোগদান করে এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ সদরে ২০১৮ থেকে ২০২৪ অর্থ বছর দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর একটানা গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা/কাবিখা প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ না করেই ভাগ বাটোয়া করেছে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। যা তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন সরকারের যত প্রকল্প লুটপাট করেছে সবগুলোই তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আরোও বলেন, এখনি সময় এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, আমি কয়েকদিন হলো এখানে এসেছি। তবে একজন কর্মকর্তা ৩ বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারে না। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মনিরুল হক ফারুক রেজা এ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!