
রাকিবুল হাসান ফরহাদ:
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার খাগডহর এলাকার বাসিন্দা তনু ইসলাম তনু দেখিয়েছেন, ইচ্ছা শক্তি ও মানবিক উদ্যোগ থাকলে সমাজের অবহেলিত মানুষের জীবনেও পরিবর্তন আনা সম্ভব। জন্ম ১৯৯৬ সালে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। ২০১০ সালে বাবার মৃত্যুতে পরিবারের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্দিন।
তনু খাগডহর হুসাইন প্রার্থিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি শেষ করে ২০১৪ সালে পুলিশ লাইন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পড়াশোনা করেছেন ময়মনসিংহ শহরের পল্লী টেকনিক্যাল কলেজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে। স্কুল জীবনেই তাকে সহ্য করতে হয়েছে নানা টিটকারি, কটূক্তি ও সামাজিক বঞ্চনা। একজন হিজরা হিসেবে সমাজে বেড়ে ওঠার যন্ত্রণা ও লড়াই তাকে আরও শক্ত করে তোলে।
বর্তমানে তনু ‘হিজরা সেতু বন্ধন কল্যাণ সমিতি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হিজরা সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন তিনি। তনু জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই চাকরি, গবাদি পশু পালন, ঝালমুড়ি দোকান, মুদির দোকান, ফার্মেসি ও সেলাই কাজসহ বিভিন্ন খাতে ৪০ জন হিজরাকে স্বাবলম্বী করা সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হিসেবে ২২০ জন হিজরার জন্য কর্মসংস্থান তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করছেন তিনি।
এছাড়া ময়মনসিংহের ৩৩ নং ওয়ার্ডের হিজরা পল্লীতে মসজিদ, কবরস্থান, প্রাইমারি স্কুল ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন তনু নিজেই। এসব প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নে এখনও অনেক কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে কাজগুলো দ্রুত শেষ করে হিজরা সম্প্রদায়ের জন্য স্থায়ী কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করেন তনু।
তনু ইসলাম বলেন, “সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যদি এগিয়ে আসে, তাহলে আর কোনো হিজরাকেই মানুষের কাছে হাত পাততে হবে না। আমরা চাই, সমাজের মূল স্রোতে থেকে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে। সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
