Header Image

ময়মনসিংহে ডিসি’র প্রত্যাহার সহ পাঁচ দফা দাবিতে বড় মসজিদে সাংবাদিক সম্মেলন

 

মফিদুল ইসলাম লাভলু (ময়মনসিংহ)

জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ.) বড় মসজিদ ময়মনসিংহ এর বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ডিসি’র প্রত্যাহার সহ ৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে বড় মসজিদের ইমাম সহ মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

সাংবাদিক সম্মেলন মাধ্যমে তারা জানান ফকির আব্দুল জলিলের কমিটিকে স্থগিত করে জেলা প্রশাসক ময়মনসিংহকে মোতাওয়াল্লি করে প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমান ডিসির আগে কমপক্ষে তিনজন ডিসি অতিক্রান্ত হয়েছেন। তাদের কেহই মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলান নাই। কিন্তু ইনি আসার পর থেকেই সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করেন। মনে হয় তিনি ময়মনসিংহ বড় মসজিদ মাদ্রাসার জন্যই ডিসি হয়ে এসেছেন। তার আর কোন কাজ নাই। মাদ্রাসার বৃহত্তর স্বার্থের বিরোধী যে কোন প্রস্তাবকে তিনি গনিমত হিসেবে লুফে নেন। অথচ মাদ্রাসার বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষা হবে এমন যেকোনো প্রস্তাবে তার অনিচ্ছা অনিহা লক্ষ্য করা। মুফতি আজিজুল হক বোররচরী হুজুরেরহ চারিত্রিক অপরাধের কারণে তাকে মাদ্রাসার অভ্যন্ত রীণ মজলিসে এলমির সিদ্ধান্ত ক্রমে ছাত্রদের মধ্যে বিরাজমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিরসনে তাকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিষয়টিকে তিনি ডিসি মহোদয়ের কাছে পেশ করেন। ডিসি মহোদয় মনে হয় এমন সুযোগের অপেক্ষায়ই ছিলেন। বস, তিনি তার ইচ্ছে অনুযায়ী কওমি ঘরানার কোন সদস্য না রেখে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হাফেজ শহীদ সাহেবের ফর্মুলা মোতাবেক নিজের মনগড়া একটি রিপোর্ট তৈরি করিয়ে নিলেন। রিপোর্টটি দেখে মনে হবে, বড় হুজুর ও তার ফ্যামিলি এবং মাদ্রাসার হিতাকাঙ্খী সিনিয়র শিক্ষকরাই এর মূল টার্গেট। এই বিতর্কিত রিপোর্টটিকে পুঁজি করে কমিটির মিটিং ডেকে অপরাধী শিক্ষক মুফতি আজিজুল হক সাহেবকে পুনর্বহাল এর জন্য চেষ্টা চালান। এতে কমিটির সদস্য এবং মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মুফতি সারোয়ার হোসাইন সাহেব প্রতিবাদ করেন। ক্ষিপ্ত হয়ে মুফতি সারোয়ার হোসাইন সাহেবের কমিটির সদস্যপদ এবং নায়েবে মুহতামিম এর পদ বাতিল করে দেন এবং জামিয়ার ২০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সিনিয়র মুহাদ্দিস বঙ হুজুরের জামাতা মুফতি মুফাজ্জালুল হক সাহেবকে তৎক্ষণাৎ বিনা নোটিসে অপসারণ করেন। বড় হুজুর ও নাজিমে তালীমাত মুফতি রইসুল ইসলাম সাহেবকে মাদ্রাসার চাকরি খন্ডকালীন করে দেন।

তড়িঘড়ি করে কমপক্ষে ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জামেয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি মফিজুল হক সাহেবের জায়গায় তার ছেলের বয়সী একদম নতুন অনভিজ্ঞ একজন কে সিনিয়র মুহাদ্দিস পদে নিয়োগ দিয়ে দেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ডিসি সাহেবের বিগড়ে যাওয়া এবং এই সমস্ত উল্টপালট সিদ্ধান্ত প্রদানের পিছনে একমাত্র দায়ী হলো হাফেজ শহীদুল ইসলাম। কারণ ইতিমধ্যেই তিনি বঙ হুজুরের ফ্যামিলিকে এবং মাদ্রাসার সিনিয়র ওস্তাদদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে আরও ৩-৪ জন স্টাফকে সাথে নিয়ে একটি চিঠি ডিসি সহ প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যাক্তি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ডিডি সাহেবের বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছেন। তারপর তার বিভিন্ন কথা, কাজে ও আচরণে এ বিষয়গুলি আরো পরিষ্কার হয়ে ওঠে। এতে হাফেজ শহীদ সাহেবের অপসারণ চেয়ে মাদ্রাসার মুহতামিম, নাজিমে তালিমাত নাজিমে দারুল ইকামা সহ প্রায় ৬০ জন শিক্ষক স্টাফ স্বাক্ষরিত একটি আবেদনপত্র ডিসি মহোদয় তথা মোতাওয়াল্লি বরাবর জমা দেয়ার পর একমাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও তার পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। আমরা লক্ষ্য করছি, মাদ্রাসা ও আলেম ওলামাদের বৃহৎ স্বার্থবিরোধী যে কোন মতামতকে তিনি অত্যন্ত মূল্যায়ন করে লুফে নেন। অথচ মাদ্রাসার স্বার্থ, শান্তি-শৃঙ্খলার পক্ষের যে কোন মতামতকে তিনি সম্পূর্ণই অবহেলা করে এড়িয়ে যান।

সকলের আবেদনের প্রেক্ষিতে এক হাফেজ শহীদকে বিদায় করে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু তা না করে বরং তাকে আরোও জিয়ে রেখে পুরা পরিবেশ উত্তপ্ত করা, নিজের প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনকে চাপ সৃষ্টি করা, মাদ্রাসার পরিবেশ নষ্ট করা, আলেম-ওলামাদের বদনাম করা, এমনকি হাফেজ শহীদ সাহেবের অপমানিত হওয়ার রাস্তা খুলে দেওয়া-এগুলো সবই উনার পরিকল্পিত বিষয় বলে আমরা মনে করছি। এজন্য আমরা মনে করি, এরকম ডিসি কোন কওমি মাদ্রাসার সভাপতি থাকতে পারে না।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ.) বড় মসজিদ, মোমেনশাহী এর ওস্তাদদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন
১. জামিয়া ফয়জুর (রহ.) এর পরিচালনায় ডিসি’র ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরিচালনার ব্যর্থতার দায়ে ডিসি’র প্রত্যাহার দাবি করছি।
২. হাফেজ শহীদুল ইসলামকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা।
৩. প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।8. হাফেজ শহিদুল ইসলাম কর্তৃক উস্তাদ ও ছাত্রদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হব।

৫. জামিয়া সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার স্বার্থে অতিদ্রুত উলামায়ে কেরাম এবং স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বড় মসজিদের ইমাম বড় হুজুর আব্দুল হক (দাঃবাঃ)
শিক্ষক মুফতি ওমর ফারুক আজিজি,শিক্ষক হযরত মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মুফতি সারওয়ার সহ সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!