Header Image

ফুলবাড়িয়ায় মাদক কারবারি স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোটারঃ

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বৈলাজানের বাসিন্দা শীর্ষ মাদক কারবারি শামিম খন্দকার ও তার স্ত্রী মামলাবাজ , মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের ভাতিজি পরিচয় দানকারী জান্নাতুল ফেরদৌস সাথীকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সোমবার (২৭ জুলাই) বিকালে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বৈলাজান গ্রামে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে কয়েকহাজার এলাকাবাসী অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন স্থানীয়রা । এসময় উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন খান,বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমান আলী,বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাব উদ্দিন,বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান,মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হারুন অর রশিদ,মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাবিব খান,মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তাজ উদ্দিন,ইয়াকুব আলী চৌধুরী,আফছর আলী মন্ডল,আক্তারুজ্জামান ৫ নংওয়াড আওয়ামিলীগ সভাপতি,মোঃ শাহজাহান মেম্বার ৫ নং ওয়াড,ইউনুছ আলী সাবেক মেম্বার ৫ নং ওয়াড,মোঃ আমজাত হোসেন ৫ নং ওয়াড আওয়ামিলীগ সাধারন সম্পাধক,মোঃ শাহজাহা মিয়া ২ নং পুটিজানা ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারন সম্পাধক,মোঃ নজরুল ইসলাম, হযরত আলী। বক্তারা বলেন,শামীমের স্ত্রী মামলাবাজ , মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের ভাতিজি পরিচয় দানকারী জান্নাতুল ফেরদৌস সাথী স্বামী-স্ত্রীদ্বয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। মন্ত্রীর পরিচয়ে এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করছে না । তাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা থাকলেও আটক করে না পুলিশ। শামিম খন্দকার ও তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস সাথীর দাপটে স্থানীয়রা সব সময় আতঙ্কিত থাকেন। তাদেরকে আটক করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা। প্রতিবাদ করলে সাথী বাদী হয়ে মিথ্যা মামলা করে । এই অত্যাচারী স্বামী-স্ত্রীর হাত থেকে বাঁচতে চাই। অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে পারে না।
ইতিপূর্বে সংবাদপত্রে প্রকাশ, জান্নাতুল ফেরদৌস সাথী । প্রকৃত নাম শেখ সাথী ওরফে স্বপ্না । পিতা আকরাম হোসেন । জন্ম ও বেড়ে ওঠা পিরোজপুরের নাজিরপুর মাটিভাঙ্গা । মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে কথিত তার বর্তমান অবস্থান ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শামীম খন্দরের বাড়ি । শামীম খন্দকার তার স্বামী । যদিও শামীম খন্দকারের রয়েছে আগের স্ত্রী । জান্নাতুল ফেরদৌস সাথী ওরফে শেখ সাথীর বিয়ের বিষয়টি শামীমের আগের স্ত্রী জানেন না । পিরোজপুরের নাজিরপুর মাটিভাঙ্গা শৈলদাহের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে নিজের পরিচয় দেন সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের ভাতিজী। শামীমের সাথে বিয়ের আগে পিরোজপুর, বরিশাল, রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে মন্ত্রীর ভাতিজি পরিচয়ে শুরু করেন প্রতারণা ব্যবসা । থানায় তদবির, সরকারি দপ্তরে তদবির, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলির করানোর হুমকিসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে । সবই করেন মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে । ২০১২ সালে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় আলাদিন্স পার্কে আসেন কলগার্ল হিসাবে । সেখানেই পরিচয় হয় তার বর্তমান স্বামী শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের পুত্র শামীম খন্দকারের সাথে । একপর্যায়ে গড়ায় তাদের বিয়ে বন্ধনে । বিয়ের পর শামীমের মাদক ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্ব নেন সাথী । পাশাপাশি ফুলবাড়িয়া থানার বাউন্ডারিতেও সময় কাটান অধিকাংশ সময় । তাদের মাদক ব্যবসা ও প্রতারণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেও বিপদ । প্রতিবাদকারীদের পোঁহাতে হয় নানা ঝড় ঝঞ্ঝাট । তন্মধ্যে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া, হত্যাসহ নানান হুমকি ধমকি । এক দুর্নীতিপরায়ন পুলিশ কর্মকর্তার সাথে রয়েছে সাথীর সখ্যতা। এই সুযোগটিও কাছে লাগান সাথী । এভাবেই সাথী এখন ফুলবাড়ীয়ার ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ হয়ে উঠেছেন। অন্তত এলাকাবাসী তাকে সেভাবেই চেনে। চলেন প্রাচুর্যে । দেখে মনে হবে অভিজাত কেও ।
ইয়াবা ব্যবসায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২ বার গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার শিবগঞ্জ বাজার সংলগ্ন বৈলাজানের বাসিন্দা সাথীর স্বামী শামীম খন্দকার । মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া শামীম খন্দকার দীর্ঘ সময় জেল খাটে । জেল থেকে বেড়িয়ে অভিনব কায়দায় চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা । এই মাদক ব্যবসায়ী সদর্পে ঘন্টার ঘন্টার থানায় বসে থাকে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর । অভিযোগ উঠেছে, ফুলবাড়িয়া উপজেলার বৈলাজান গ্রামের বাড়িতে বাংলো বানিয়ে বঙ্গবন্ধু ছবি টানিয়ে স্থানীয় নামধারী কতিপয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা । শামীম খন্দকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী, সন্ত্রাসী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না । এই সাথী র্ঊুমানে শামীমের বড় সহায়ক ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,সাথী দম্পতির মাদক ব্যবসায় ডজন খানেক যুক্ত রয়েছেন। এই বিশাল চক্রটি প্রতি মাসে মাদক থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করে। চক্রটির বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলেও সাথী বরাবরই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাগালের বাইরে থেকে গেছেন।
ফুলবাড়ীয়ায় সাথী ও শামীম দম্পতি মাদকের জগতে ইয়াবা নামেও পরিচিত। অল্প সময়ের ব্যবধানে তারা এখন ‘মাদক সম্রাট ’। ফুলবাড়ীয়া থানায় প্রভাব বিস্তার করে মামলা মামলা থাকার পরও বীরদর্পে ঘুরে বেড়ান এরা । অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে । সাথী মামলাবাজ হিসাবেও পরিচিত । একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা এবং অভিযোগ করে সমালোচিত হয়েছেন । থানার বাউন্ডারিতে সময় কাটাতে ব্যস্তত থাকেন । অনেক মামলার বাদী সাথী বৈলাজানেও অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে । মন্ত্রীর ভাতিজি পরিচয় দেয়ায় কেও তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না । নিরীহদের ফাঁসিয়ে দেয়া এর সাথীর রোষানলে পড়েছেন বিএনপির সাবেক এমপি পুত্র , স্থানীয় জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি ছাড়াও অনেকে ।
ফুলবাড়ীয়ায় বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় লোকজনকে হয়রানি করে চলেছে মাদক ব্যবসায়ী এই সাথী । এক কথায় এ এলাকায় মামলাবাজ পরিবার হিসেবে পরিচিত সে । নিরাপদে তার মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতে প্রতিবাদকারীদের ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন সময় সে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গ্রামের সম্মানিত ব্যক্তিদের নামে মামলা করে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!