Header Image

কুষ্টিয়ায় ১৪ মাসে ২শ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে সরকার, জানেন না কুষ্টিয়ার ডিসি!

 

খায়রুল আলম রফিক, কুষ্টিয়া থেকে ফিরে :

অবাধে বালি উত্তোলন হচ্ছে গড়াই নদী থেকে। যে কারনে নদী ভাঙন সেখানের নিত্যদিনের ঘটনা। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন গড়াই নদীর উভয় তীরের বাসিন্দারা। সরকারিভাবে বালিঘাটে নদীর ২২টি স্পটে বালি উত্তোলনের অনুমোদন রয়েছে। অথচ শতাধিক স্পট থেকে বালি উত্তোলন করা হয়। এতে গত দুই বছরে সরকার কমপক্ষে ২শ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে ।

অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ বালি উত্তোলনের উৎস থেকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আসলাম হোসেনের যোগসাজশে সমূদয় অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে । অভিযোগ রয়েছে, ১১ বছর আগে জনৈক মাসুদ নামের এক ব্যক্তি উচ্চ আদালতে রিট দাখিলের মাধ্যমে আদালতের নির্দেশে বালি উত্তোলন বন্ধ রাখা হয় । যদিও মাসুদ নামের কোন ব্যক্তির ঠিকানা সরেজমিনে গিয়ে অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি কুষ্টিয়ায় । জানা গেছে, গড়াই নদীতে সরকারিভাবে বালু উত্তোলনের জন্য ২২টি বৈধ ঘাট থাকলেও ইজারা হয় না ।

কিন্তু ইজারাদার কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে । অপরদিকে শতাধিক অবৈধ ঘাট থেকে প্রতিদিন ট্রাক, ট্রলি ও অন্যান্য যানবাহনযোগে বালি পাচার হচ্ছে । ঘাটে অবস্থানরত আনিছ, রুবেল , মাসুম নামের জনৈক ব্যক্তিরা বালির ট্রাকপ্রতি ৫শ’ টাকা প্রতিদিন চাঁদা হিসাবে আদায় করছে ।

জিলাপিতলা, ব্রীজঘাটসহ বিভিন্ন ঘাট থেকে পাচার হওয়া এই বালি দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ এর নির্মাণ কাজ, কুষ্টিয়া- ঢাকা মহাসড়ক নির্মাণ কাজ, বিদ্যুৎ অফিস নির্মাণ কাজ ছাড়াও সরকারি বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ।
এদিকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেনের বিরুদ্ধে গত সংসদ নির্বাচন, জেলা ও উপজেলা নির্বাচনে জ্বালানি বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থ আত্বসাতের অভিযোগ উঠে ।

এবিষয়টি নিয়ে জেলায় সমালোচনা হলে, ডিসি এলআর ফান্ডের টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ঐ টাকা পরিশোধ করা হয় । কুষ্টিয়া ডাকবাংলোয় ১০ লাখ ৬২ হাজার টাকা বিভিন্ন ভাউচারের মাধ্যমে ব্যয় দেখিয়ে টাকা আত্বসাতের অভিযোগ ডিসির বিরুদ্ধে ।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বিভিন্ন আসবাবপত্র সামান্য টাকা পরিশোধ করে বাকীতে ক্রয় করে সমূদয় অর্থ আত্বসাত করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে ।

জেলা প্রশাসক দুই বছর আগে যোগদান করেন । এরপর এসব দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ । গড়াই নদীতে অবৈধ বালি উত্তোলনের বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, ভাঙন রক্ষা বাঁধ, ব্রিজ এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বালি উত্তোলন করা যাবে না, সরকারি এমন নির্দেশ উপেক্ষিত কুষ্টিয়ায়।

নজরদারি না থাকায় কোনভাবেই সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। ভারি ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিন-রাত বিরামহীনভাবে বালি উত্তোলন হচ্ছে ।
জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন, উপরোক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,বালি উত্তোলন বন্ধে আমি একাধিকবার ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়েছি ।

রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের কারণে বন্ধ করতে পারিনি । বালিমহাল ২২টি বৈধ । বাকিগুলির বিষয়ে আমি জানিনা । সরকারের শত কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, রিটের বিষয়টি নিয়ে এ্যাটর্নি জেনারেল মহোদয়ের সাথে কথা বলবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!