ইসমাইল হোসেন সোহাগ, বিশেষ প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের এমচর হাট বাজারের দক্ষিণ পাশ্বে অবস্থিত ডলু খাল। আর এই খালের উপর রয়েছে একটি বেইলী ব্রিজ। এটি বান্দরবানের আলীকদম ও লামা উপজেলার সাথে লোহাগড়া হয়ে চট্টগ্রামের সংযোগ স্থাপনকারী সেতু।
ডলু খালের উপর দীর্ঘদিনের নির্মিত একমাত্র ডলু বেইলী সেতুটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
আজ ০৬ অক্টোবর”২০২১ইং মঙ্গলবার বিকেলের দিকে সরেজমিনে গেলে এই দৃশ্য দেখা যায়।
জানা গেছে, উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের এমচর হাট বাজারের দক্ষিণ হয়ে পশ্চিম পাশ্বে অবস্থিত ডলু খাল। আর এই খালের উপর রয়েছে একটি বেইলী ব্রিজ। এটি বান্দরবানের আলীকদম ও লামা উপজেলার সাথে লোহাগড়া হয়ে চট্টগ্রামের সংযোগ স্থাপনকারী সেতু। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানচলাচল করে আসতেছে। অনেক গ্রামের হাজার হাজার স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এই সেতু দিয়ে পার হয়ে যেতে হয়। কারণ এ সেতু ছাড়া বিকল্প কোন যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে বালু ব্যবসায়ীরা ব্রিজের নিচে এবং উপর পাশ থেকে ড্রেজিং মেশিন ও বিভিন্ন ভারি যন্ত্রপাতি বসিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন শত শত বালু ভর্তি ট্রাক গাড়ি বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারকে হারাতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
এদিকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী পাম্প বা ড্রেজিং মেশিন বা অন্য কোন মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪ এর (খ) সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সরকার ঘোষিত আইনকে তোয়াক্কা না করে বর্তমানেও বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। বালু উত্তোলনের কারণে এ বেইলী ব্রিজটি সহ আরও অনেক রাস্তাঘাট, ঘরাবাড়ি, কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোন সময় ব্রিজটি ভেঙ্গে শত শত গ্রামের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
এদিকে খালের দুই অংশের স্থানীয়’রা জানান, অনেক বছর আগে ডলু খালের উপর নির্মিত হয় এ বেইলী ব্রিজটি। এখন ব্রিজটির অবকাঠামো একবারেই নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। রিকশা উঠলেই এটি কেঁপে ওঠে। এই সেতুর নিচ থেকে বছরের বছর নিয়ম অপেক্ষা করে যেভাবে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে যে কোনো সময় ব্রিজটি ভেঙ্গে যেতে পারে। তাছাড়াও এলাকার অনেক ঘরবাড়ি, কৃষি জমিরেও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী বলে কেউ কথা বলে না। তারা তাদের প্রভাব কাটিয়ে নিয়মিত বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এই বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আমাদের কৃষি জমি রক্ষা করা যাবে না।
বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ও সেতুটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।