Header Image

অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা চেচুয়া বিলে ফুটেছে লাল শাপলা, চারদিকে পাখির কলরব

চেচুয়া বিল। মানুষের মুখে মুখে লাল শাপলার বিল। ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার অদূরে ঐহিত্যবাহী রামপুর ইউনিয়নের ঐতিহাসিক চেচুয়া বিল।

একটা সময় একে ‘অলৌকিক বিল’ও বলা হতো। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই বিলে ফুটেছে লাল শাপলা, চারদিকে পাখির কলরব।

বিলের এপাশ থেকে ওপাশ শুধু চোখ জুড়ানো শাপলার সমারোহ। এ যেন রক্তিম নান্দনিকতার মনোলোভা রূপ। সকালে উদিত সূর্যের আভায় ফুটন্ত লাল শাপলা ও পড়ন্ত বিকেলে সূর্যাস্তের দৃশ্য মুহূর্তে যে কারো মন কাড়ে। এমন সৌন্দর্য বিরাজ করছে ত্রিশালের চেচুয়া বিলে।

প্রায় ২০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তীর্ণ বিলটি। মাঝে মাঝে সাদা ও বেগুনি শাপলার দেখাও মেলে। এর সঙ্গে ভাসমান কচু ফুলের সাদা আভা এখানকার সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। ভ্রমণ পিপাসু মানুষ এই বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমাচ্ছেন।

কোনো প্রকার চাষ ছাড়াই জন্মেছে লাল শাপলাগুলো। গোটা বিলের বুকজুড়ে এখন লাল শাপলার অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়। শিশির ভেজা রোদমাখা সকালের জলাশয়ে চোখ পড়লে রঙ-বেরঙেয়ের শাপলার বাহারি রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।

ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বিশাল বিল এটি। সারাদেশের মানুষ অবশ্য এ বিলকে প্রথমে চিনেছেন একটি গুজবকে কেন্দ্র করে।

একদিন রাত পেরিয়ে সকাল হতেই কিছু লোক দেখতে পায় সেখানে থাকা জমাটবাঁধা কচু হঠাৎ সরে গিয়ে অনেকটা জায়গা ফাঁকা হয়েছে।

এটাকে অলৌকিক ভেবে কয়েকজন গোসল করেন এবং এর পানি পান করে রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সারাদেশের হাজার হাজার মানুষ বন্ধুর পথ পেরিয়ে কাদামাখা পানিতে গোসল, গড়াগড়ি ও কাদাযুক্ত পানি সংগ্রহ করতে এখানে ভিড় করেন।

এমন গুজবও ছড়ানো হয়েছিল যে, হাজারো সমস্যার একমাত্র সমাধান এই চেচুয়া বিল। পানিতে এক ডুবেই সেরে যাবে যেকোনো রোগ।

এখানকার মাটি ও পানি নাকি সর্ব রোগের ওষুধ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুজবে হাজারো মানুষের তথাকথিত তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছিল রামপুরের এই চেচুয়া বিল।

দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আসা যায় চেচুয়া বিলে। যাতায়াতের সুবিধাও ভালো রয়েছে। বাস কিংবা নিজস্ব গাড়ি নিয়েও আসতে পারেন এই বিলে।

প্রথমে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড থেকে বালিপাড়া রোডে অটো ভ্যানে করে ঠাকুর বাড়ি মোড়ে এসে নামতে হবে। ভাড়া নেবে ১০ টাকা। এরপর চেচুয়া বিল পর্যন্ত ভ্যান দিয়েও যেতে পারবেন আবার হেঁটেও যেতে পারবেন।

“প্রকৃতিতে নিজের রূপ বৈচিত্র অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছে জলাভূমি ও বিলে ফুটে থাকা এ জলজ ফুলের রানি। শাপলা ফুলের উপস্থিতিতে যেন প্রাণ ফিরেছে গ্রামের শিশুদের উচ্ছল মাখা শৈশব। জলের উপর বিছানো সবুজ পাতা ভেদ করে হাসছে লাল একেকটি শাপলা। দেখলে মনে হয় লাল শাপলা যেন রঙের গালিচা বিছিয়ে দিয়েছে বিলজুড়ে।”

সৌন্দর্য রক্ষায় এরই মধ্যে স্থানীয়ভাবে এই বিলে ফুল তুলে বিক্রি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ঘুরতে আসা মানুষকে এলাকাবাসী সহযোগিতা করছেন। দর্শনার্থীদের নিয়মানুবর্তিতায় হয়তো এভাবেই বিলটি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!