Header Image

খননের এক বছরেই ভরাট নেত্রকোণার পিয়াইন নদী, বিপাকে সর্বস্তরের মানুষ

জাহাঙ্গীর আলম,নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ
বর্ষায় স্রোতস্বিনী আর শুকনো সময়ে ধু ধু বালিময় মাঠে রুপান্তরিত হয় নেত্রকোণার হাওর অধ্যুষিত খালিয়াজুরী উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের নদীপথ নির্ভর বিখ্যাত বাজার লেপসিয়া বাজার ঘেষে বয়ে চলা পিয়াইন নদীর। উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার এবং হাওরাঞ্চলের কৃষকদের সুবিধা বিবেচনা করে নদীটি খননে সরকারি বরাদ্দ আসার পর নদী খনন কাজ গতবছর শেষ করা হলেও পুনরায় ভরাট হয়ে চলতি শুকনো মৌসুমে তা আবার ধু ধু বালিময় মাঠে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবী নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতার সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যথাযথ প্রক্রিয়ায় খনন না করায় একবছরেই ভরাট হয়ে গেছে নদীটির বড় একটি অংশ।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, হাওর এলাকা বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পিয়াইন নদীর ৪.৯২ কিলোমিটার ও ২৪ কিলোমিটার খাল খনন এবং ৯.৭৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করা হয় যা ২০২০-২১ অর্থবছরে সম্পন্ন করা হয়। পাউবোর সূত্র ধরে বাস্তবতা খুজতে গেলে দেখা যায়, ধনু নদী থেকে উৎপত্তি হওয়া পিয়াইন নদীর উৎপত্তিস্থল থেকে শুরু করে নদীপথ নির্ভর লেপসিয়া বাজার ঘেষা প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গা দেখে বুঝার উপায় নেই আদৌ তা খনন হয়েছিল কি না। কোথাও মরুভুমির মত ধু ধু বালুময় মাঠ আবার কোথাও নাম মাত্র ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবী নামমাত্র খনন কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাই নদীটি খনন করার পরেও বালু উড়ছে নদীর তলায়, মানুষ পায়ে হেটে এপাড় থেকে ওপাড়ে যাচ্ছে। নদীতে পানি না থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজারে ঢুকতে পারছে না নৌকা তাই আসতেও পারছে না পণ্য বা দুর-দুরান্তের ব্যবসায়ীরা। তাই ধ্বস নেমেছে ব্যবসায়। নদী যথাযথভাবে খনন না হওয়ার অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদেরও। তারা বলেন, নদীটি খনন করা হলেও তা আবার ভরাট হয়ে যাওয়ায় এবার বুরো মৌসুমে হাওরাঞ্চলের অনেক জমি থেকে পানি অনেক দেরী করে নেমেছে তাই মারাত্মক ব্যত্ময় ঘটেছে কৃষি কার্যক্রমে।
এমতাবস্থায় নদীটির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনাপুর্বক পুনঃখননের বিকল্প নেই। তাই অতি দ্রুত নদীটি পুনঃ খননের ব্যবস্থা করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এমনটাই দাবী সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীসহ সর্বসাধারণের।
এব্যাপারে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্যিক ও কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় নদীটি গতবার খনন করা হলেও খননের উচ্ছিষ্ট অংশ পাড়ে রাখায় তা বর্ষায় আবার নদীতে ফিরে এসে নদীটি ভরাট হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় নদীটি পুনঃ খনন জরুরি।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, নদীটিতে পলি জমে কিছুটা অংশ ভরাট হয়ে গিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!