Header Image

ফুলবাড়িয়ায় দুর্বৃত্তরা কেটে ফেলেছে আট শতাধিক কলাগাছ ! সর্বস্বান্ত কৃষক

 

সাইফুল ইসলাম তরফদার, ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ

এভাবেই নীজের জমিতে বাকরুদ্ধ বসে আছে ২ সন্তানের পিতা হাবিবুর রহমান। এতগুলোদিন নীজ সন্তানের মতো পরিচর্যা করে আসা কলাগাছগুলো দেখে গেলেও গতকাল শুক্রবার সকালে সব স্বপ্ন যেনো চোখের সামনেই ভেঙে চূরমার হয়ে গেছে। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম দুলালিয়ায় ।

গত বৃহস্পতিবার ২০(অক্টোবর) মধ্য রাতে একদল দুর্বৃত্তরা ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের দুলালীয়া গ্রামের হাতেম আলী ফকিরের ছেলে হাবিবুর রহমানের ১২ কাঠা জমিতে রোপণকৃত ৮০০ শতাধিক কলাগাছ কেটে সাফ করে ফেলেছে। যার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮ লাখ টাকার উপরে বলে জানায় ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান।

সংসার চালানোর একমাত্র অবলম্বনটি হারিয়ে সর্বস্বান্ত এই কৃষক, দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এলাকাবাসীর। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে

| এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার ওসি আজহারুল ইসলাম জানান, গতকালকেই ঘর ওঠানো নিয়ে ২ পক্ষের বাকবিতণ্ডা হয় সেখানে আমার এসআইকে পাঠিয়েছিলাম এরপরও যদি হাবিবুরের কলা গাছ কাটা হয়, সে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ভুক্তভোগী পরিবারটি সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া সীমান্তবর্তী ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের মুরাইদ মৌজায় ১৪০ শতাংশ জমি, যার দাগ নং১১৪ এবং খতিয়ান নং ৩৫৪১ | পৈতৃক সূত্রে দীর্ঘদিন দীর্ঘদিন যাবৎ হাতেম আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান ভোগ দখল করে আসছে | তার জমির পাশে স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুর রশিদগং দীর্ঘদিন ধরে হাবিবুর রহমানে পৈতৃক জমি বেদখলে নেয়ার জন্য হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো। গত সন্ধায় আব্দুর রশিদ গংরা হাবিবুরের জমিতে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালালে তা বাধা দেয় হাবিবুর। ওই রাতেই হাবিবুর’এর কলাবাগানের ৮০০ শ কলাগাছ কে বা কারা কেটে ফেলে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখ টাঙ্গাইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাঁদাবাজির অভিযোগে আব্দুর রশিদসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলাও দায়ের করেন হাবিবুর ।

ক্ষতিগ্রস্ত হাবিবুর রহমান বলেন, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২০ কাঁঠা জমিতে আমি দীর্ঘদিন যাবৎ কৃষিকাজ করে আসছিলাম এবার সেই জমিতে ৮ লক্ষ টাকা খরচ করে কলা গাছ লাগিয়েছি হঠাৎ শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ১২ কাঠা জমির ৮শ কলাগাছ কেটে ফেলা হয়েছে । মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে লোন নিয়ে আমি কৃষি কাজ করেছি, এই কৃষিকাজ থেকে আমার সংসারের খরচসহ সন্তানদের লেখাপড়া খরচ চলে। আমি আমার ক্ষতিপূরণ চাই।

এছাড়া হাবিবুর রহমান আরও জানান তার এই ২০ কাঠা জমি দখলে নিতে দীর্ঘদিন ধরেই হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে পার্শ্ববর্তী আব্দুর রশিদগংরা | আমার ধারণা এই কলা গাছ তারাই কাটতে পারে | এ ঘটনার পর আব্দুর রশিদের পরিবার পলাতক রয়েছে।

বিরোধের বিষয়ে মোবাইল ফোনে আব্দুর রশীদের কাছে জানতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি |

স্থানীয় এলাকাবাসী মোহাম্মদ আলী, গোলাপ হোসেন এবং হাবিবুরের বড় ভাই ইদ্রিস আলী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দেখছি হাবিবুর কৃষি কাজ করে আসছে এই জমিতে। এটি তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি, হঠাৎ করেই সকালে দেখতে পাই তার সমস্ত কলাগাছ কেটে ফেলেছে কে বা কারা, যারাই এই কলা গাছগুলো কেটে থাকুক তাদেরকে যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়। ##

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!