Header Image

মিডিয়ার মানুষদের নিয়ে খারাপ মন্তব্যে ক্ষেপেছেন মডেল ও অভিনেত্রী শ্রাবণী সিনহা

 

ইদানিং অনেকেই মিডিয়ার মানুষদের নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেন। আর তাদের এসব খারাপ মন্তব্যের বিষয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন হালের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী শ্রাবণী সিনহা। আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি এই বিষয়ে একটি লিখা লিখেন। সময় এক্সপ্রেস নিউজের পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো…

মিডিয়ায় মানুষ খারাপ। মিডিয়ার মানুষের চরিত্র খারাপ। মিডিয়ার ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়া যাবে না, মিডিয়ার মেয়েকে ঘরের বউ করা যাবে না। খারাপ বলতে এখানে সেক্স বিষয়টাকে সামনে নিয়ে আসা হয়। তাদের কাছে প্রশ্ন- মিডিয়াতে বছরে কয়টা ধর্ষণের খবর আসে? অথচ প্রতিদিন পত্রিকা খুলেই দেখা যায় ধর্ষণ করছে ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, অফিসের কলিগ, অফিসের বস, বাসের কন্টাকটার, টোকাই ইত্যাদি ইত্যাদি।

মিডিয়ায় সেক্স সংক্রান্ত যা কিছু হয় তার প্রায় সবই কিন্তু স্বেচ্ছায় হয়, যেসব মেয়েদের রুপ থাকলেও যোগ্যতা অভিজ্ঞতা নেই অথচ রাতারাতি তারকা হতে চায়, কয়েক মাসের মধ্যে ফ্লাট গাড়ির মালিক হতে চায়; তারা শরীরের বিনিময়ে হলেও মিডিয়ায় আসতে চায়। আবার কিছু মেয়ে জেনেশুনেই মিডিয়ার মোহে বিভিন্ন ফাঁদে পা দেয়। আর পুরুষদের মধ্যে যাদের প্রচুর টাকা আছে তাদের কিছু সংক্যাক মিডিয়ায় টাকা ইনভেস্টই করে নতুন নতুন এসব মেয়েদের সঙ্গে ফুর্তি করতে।

আবার উশৃঙ্খল জীবনযাপন করে মিডিয়ায় এমন কিছু নারী-পুরুষওযে নেই তা না। আসলে উশৃঙ্খল ছেলে-মেয়ে কিন্তু আমাদের আশেপাশেও অনেক আছে। তারা নিজেকে অতি স্মার্ট প্রমাণ করতে ফ্রি মনমানসিকতায় নেশা করে, সেক্স করে অনেক কিছুই করে। আসলে কথা হল মানুষ যেখানে থাকবে, নারী-পুরুষ যেখানে থাকবে সেখানে খারাপও থাকবে ভালোও থাকবে। নিজেদের পরিবারের ভিতরে, আত্মীয়ের ভিতরে, স্বজনদের মধ্যেও অনেক খারাপ কিছু হয়। মান স্মানের কথা চিন্তা করে সেগুলো গোপনও রাখা হয়। পারিবারিক এমন খবরগুলো কিন্তু নিউজে আসে না। যে যেখানেই কাজ করুক সে ভালো হবে না খারাপ হবে সেটা নির্ভর করে তার নিজের ইচ্ছা, পারিবারিক শিক্ষা, তার বেড়ে উঠার পরিবেশ, একাডেমিক শিক্ষা এসবের উপরে। তবে মিডিয়ার বিশেষ গুণ এখানে ক্ষতিকারক মানুষের সংখ্য কম, এদের চিন্তাধারা উন্নত, এরা বেশিরভাগই মুক্ত মনের অধিকারী হয়, এরা চোখ থাকতে অন্ধ না। কারণ এরা অনেক মানুষের সঙ্গে মেশে, অনেক কিছু জেনে অন্তরের অন্ধকার দূর করতে সক্ষম হয়।

অধিকাংশ পরিবার চায় তাদের ছেলে-মেয়ে ডাক্তার হবে। ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়েও কিন্তু অনেক মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে, লজ্জায় বলতেও পারে না। আবার অনেক মেয়েকে ডাক্তারি পড়তে গিয়েও নিজের ইজ্জত বিষর্জণ দিতে হয়েছে এমন খবরও অনেক আছে। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব বিদ্যালয়ে এক নেতা ১০০ মেয়েকে ভোগ করে বন্ধুদের নিকে ককটেল পার্টি দিয়েছিল এই খবরতো সবারই জানা। উপরের মহলের লোক না থাকলে বা অতিমাত্রায় মেধাবী না হলে লিডারদের সঙ্গে রাত না কাটিয়ে কয়টা মেয়ে হোস্টোলে সিট পায় তা একটু ভিতরের খবর অনুসন্ধান করলেই টের পাবেন। আবাসিক হোটেল গুলো যৌন ব্যবসার উপরে টিকে থাকে।

এই হোটেলগুলোতে কারা রাত কাটায়? কোন মেয়েরা এসব স্থানে পুরুষদের যৌন সঙ্গী হয়? আপনার আমার আশেপাশে থাকা পরিবারগুলোর নারী-পুরুষরাই কিন্তু এই হোটেলগুলো টিকেয়ে রেখেছে। তবে মেয়েদের সংখ্যাটা পুরুষদের তুলনায় অনেকগুণ কম। মেয়েরা যায় টাকা রোজগার করতে, আর ছেলেরা যায় টাকা খরচ করতে। মিডিয়ার সঙ্গে এখানে পার্থক্য মিডিয়ায় টাকার পরিবর্তে কাজের লেনদেন টাই বেশি হয়। আপনি জানেন অভিজাত পার্লারগুলোতে কী হয়? এসব নোংরা গল্প এখানে ভেঙ্গে বলা যাবে না। গুগুল ইউটিউব অনুসন্ধান করলেই সব জানতে পারেবেন। তবে এটা জেনে রাখুন, পরিবারে কাছে আদর্শ, স্ত্রীর অনুগত্য পুরুষটিও তার স্ত্রী-সন্তানদের অগোচরে কিছু টাকার বিনিময়ে মাঝে মধ্যে মেয়ের বয়সী তরুণীদের সঙ্গে ফুর্তি করতে যায় এসব জায়গায়।

আপনার উঠতি বয়সের ছেলেটা যৌবনের তারণা সহ্য করতে না পেরে মিথ্যা কথা বলে টাকা নিয়ে মাঝে মধ্যে নারীদেহের রহস্য উন্মোচন করতে যায় এসব জায়গায়। কথায় আছে- ঠক বাছতে গেলে গ্রাম উজার। নারী সংক্রান্ত বিষয়ে সমাজে শতকরা একজন চরিত্রবান পুরুষ পওয়াও কিন্তু খুব কঠিন (এখানে কেউ একমত না হতে পারলে ড. লুৎফুর রহমানের ‘যুবক জীবন’ প্রবন্ধটি পড়ার অনুরুধ রইল)। তাহলে সমাজের ৯৯% পুরুষ সবাইকি মিডিয়ায় কাজ করে? পুরুষ শ্রেণীটা ডানে-বায়ে সন্ধান করে বিয়ের আগেই যৌবনের স্বাধ উপভোগ করে ফেলে এটা সবারই কম-বেশি জানার কথা। তো সেক্স দিয়ে যদি আপনি পুরুষের ভালো-মন্দো বিবেচনর করেন তাহলোত আপনার বাবা, চাচা, দাদা, ভাই, ছেলে সবই বোল্ড আউট হবে।

এবার ভাবুনতো প্রতি রাতে আবাসিক হোটেলে যে শত শত সুন্দরী স্মার্ট তরুণীরা টাকার বিনিময়ে পুরুষের চাহিদা মেটাচ্ছে এরা কারা? এরা কোত্থেকে আসে? এরা কিন্তু সেজেগুজে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে খদ্দেরের জন্য অপেক্ষা করা নারী না, আবার এরা পতিতালয়ের নারীও না। অনেক অভিজাত পরিবারের মেয়েরাও এই হোটলগুলোতে টাকার বিনিময়ে আসে, যে মেয়েগুলো কলেজে ভার্সিটিতে পড়ছে তাদের মধ্য থেকেও কিছু সংখ্যক আছে অভিজাত হোটেলগুলোতে টাকার বিনিময়ে পুরুষদের যৌন চাহিদা মিটাতে আসে।

এসব তাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন কেউ জানে না। আপনি ভাববেন মেয়েরা এসবের সন্ধান কোত্থেকে পাবে, সন্ধান পাওয়া লাগেন না, আপনার মেয়েকে রোজগারে এই পথ দেখিয়ে দেবার জন্য মধ্যভোগী দালালরা সবসময় সকৃয়। কারণ শিক্ষিত, রুচিশীল, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যারা ঘরে বউ রেখে একটু অতিরিক্ত যৌন চাহিদা মিটাতে হোটেলে আসে তাদের চাহিদা থাকে ভার্সিটির অল্পবয়সী স্মার্ট তরুণী।

এই তরুণীরা কিন্তু সাধারণ ছাত্রীদের মতোই ভার্সিটিতে বিচরণ করে, অনেকে আবার পর্দাও করে, দেখে বুঝার সাধ্য নেই এরা দেহব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এরা মিডিয়ার কেউ না বলে, চেহারার পরিচিতি নেই বলে, খবর বের করার জন্য সাংবাদিকরা এদের পিছনে লেগে থাকে না। আর একজন মিডিয়ার মানুষকে সাংবাদিক এবং সাধারণ মানুষ সব সময় ফলো করে, সে গোপনে ভালো কিছু করতে গেলে তার খবর যেমন বের হয়ে যায়, আবার মন্দ কিছু করলে তার খবর দ্রুত সারা দেশে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু আমরা যারা বিবেকবান মানুষ তাদের এই বিষয়গুলো বুঝা উচিৎ।

ঢালাও ভাবে একটা মাধ্যমকে খারাপ বলা ঠিক না। একটা ইন্ড্রাস্টি যেখানে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট হয়; সেখানে যদি শুধু খারাপ কাজই অপকর্মই হতো, তাহলে আর ইন্ডাস্ট্রি চলত না। কোন বাবা-মা তার সন্তানদের তখন শিল্পের জগতে আসতেই দিত না। যারা খারাপ মানুষ তারা এখানে খারাপ মনমানসিকতা নিয়ে আসে, যারা সৃজনশীল মানুষ, শিল্পকে ভালবাসে তারা এখানে আসে নান্দনিক কাজের মাধ্যমে মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে। খারাপ ভালো সব খানেই ছিল আছে এবং থাকবে। খারাপ মানুষ যেখানে যাবে সে খারাপের প্রতিফলন ঘটাবে, ভাল মানুষ যেখানে যাবে সে ভালোর প্রতিফলন ঘটাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!