Header Image

খালিয়াজুরীর বাউল শিল্পী শাহ্ ধন মিয়ার পাশে কেউ নেই।

স্টাফ রিপোর্টারঃ

বাউল গান মানে মাটি ও মানুষের গান, বাউল মানে মানব মনের চিরাচারিত সুর। সেই বাউল শিল্পীরা সামাজিক অবহেলা দুর্দশার শিকার। আধুনিক সমাজের ব্যান্ড এর যুগে এই লোকশিল্পীরা মৃতপ্রায়। বর্তমান সময়ে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে বউল শিল্পীরা দুঃখে কষ্টে জীবনযাপন করছেন।

নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার, মেন্দিপুর ইউনিয়নের নূরপুর বোয়ালী গ্রামে বাউল শিল্পী শাহ্ ধন মিয়ার বাড়ি। নূরপুর বোয়ালী গ্রামের তুমুল জনপ্রিয় গীতিকার, সুরকার,বাউল শিল্পী শাহ্ ধন মিয়ার খোঁজ নেয় না এখন আর কেউ।

খালিয়াজুরীর নূরপুর বোয়ালী গ্রামের বাউল শিল্পী শাহ্ ধন মিয়া স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামের এককোনে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সংসার-পরিজন ফেলে জীবনের সবটা সময়ই তার কেটেছে বাউল গান গেয়ে।
ভাটি বাংলার গীতিকবি, কুকিল কন্ঠের অধিকারী ধন মিয়া, শিক্ষা জীবনের প্রথম ধাপ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে গান চর্চা করে এখন লোকের কাছে বড় আকারের শিল্পি হিসাবে গণ্য, বাউল শাহ ধন মিয়া নামে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।

বাউল শাহ্ ধন মিয়ার ছোট বেলা থেকেই মনে আশা ছিল, বাটি বাংলার মনমাতানো বাউলশিল্পী কবি উকিল মুন্সীর মতো শিল্পী হবেন। বাউল শাহ্ ধন মিয়া বলেন, কিন্তু হতে পেরেছি কিনা বলতে পারবো না। সাংবাদিক ইদু খানের সাথে কথা বলতে বলতে গলাজড়িয়ে আসে ধন মিয়ার, বলেন স্বপ্ন তো কত কিছু ছিল কিন্তু সর্বগ্রাসী অভাব আমার পিছু ছাড়লো না। আমি এখন খুব কষ্টে আছি ভাই, আমার মনের মাঝে অনেক বড় আশাছিল আমি একদিন টেলিভিশনে গান করব, আমি নিজে অনেক গান লেখেছি, এবং অন্যর অনেক গান চর্চা করেছি কিন্তু অভাবপূরণ হয়না বিদায় পারছি না কিছু করতে।

খালিয়াজুরী সাড়া জাগানো বাউল শিল্পী শাহ্ ধন মিয়ার পাশে আজ কেউ নেই। তবু থেমে নেই গান পাগল এই মানুষটি ছুটে চলা। যেখানে গান সেখানেই ছুটে চলেন তিনি হ্রদয়ের টানে। কিন্তু এবছর করোনার কারনে গানবাজনা তেমন হয়নি, তিনি লিখেছেন অনেক লোকগান। যা লিখেছেন তা সংরক্ষণের অভাবে কত গান চুরি হয়েছে। বিনা পারিশ্রমিকে অনেক শিষ্য তৈরি করেছেন যারা আজ প্রতিষ্টিত। অথচ তিনি কি পেলেন তার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ?? কিছুই মিলেনি। বরং যাদের গড়ে তুললেন তারাই কালের বিবর্তনে ভুলে গেছে।

এত বড়ো গুণী শিল্পীর কদর কেউ বুঝলো না. তাই মেলে নি তেমন কিছু সরকারি সাহায্য। যদি কোনো সহৃদয় ব্যক্তি বা কোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেন তাহলে বাউল শিল্পী শাহ্ ধন মিয়া হয়তো আরও অনেক কিছু দিয়ে যাবেন এই আশা রাখি…
বাউল শিল্পী শাহ্ ধন মিয়া সাংবাদিক ইদু খান কে জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে গান করেছি। কিন্তু কোন মুল্যায়ন আজো পাইনি অথচ আজ বাউল নামধারী কত অনুকরণ কারী শিল্পী আজ সমাজে সেলিব্রেটি হয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেক নামধারী সেলিব্রেটি আমার গানগুলোকে অনুকরন করে গান করছে, যা শুনলে ভিতরটা কেমন জানি করে। সাংবাদিক ইদু খানের মাধ্যমে তিনি সমাজের সামর্থ্যবান লোকদের প্রতি আকুল আবেদন করেন তার পাশে দাড়ানোর জন্য, যাতে তিনি অভাব থেকে মুক্ত হয়ে মনের প্রশান্তিতে গানে মনোনিবেশ করতে পারেন।

বাউল শাহ্ ধন মিয়া বলেন, আমাদের খালিয়াজুরী উপজেলার প্রশাসন নির্বাহী অফিসার জনাব এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম এলিন স্যার একজন জন দরদী, উনার নজরে যদি আমার আর্তনাদটা পৌছিয়ে দিতেন, তাহলে আমার উপক্রিত হতো।

যদি কোনো দয়াবান ব্যক্তি এই অসহায় বাউল পরিবারের প্রতি দয়া হয় তাহলে যোগাযোগ করুণ বোয়ালী গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাউল শাহ্ ধন মিয়ার সাথে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!